১০ গুণ শক্তির ব্যাটারি উদ্ভাবন

যুক্তরাষ্ট্রের একটি কারখানায় একটি বাসে ইলেকট্রিক্যাল ব্যাটারি বসানো হচ্ছে। ১ জুলাই ২০২১
রয়টার্স

সেই ছোটবেলায় বছরে দুবার হয়তো কাঁটাওয়ালা ঘড়ির ব্যাটারি বদলাতেন, কিংবা মাসে দু–একবার টেলিভিশনের রিমোট কন্ট্রোলের ব্যাটারি বদলাতেন অনেকে। সেই সব দিন হারিয়ে গেলেও ব্যাটারির ব্যবহার কিন্তু হারিয়ে যায়নি। এখন সড়কে ব্যাটারিচালিত গাড়ি থেকে শুরু করে ব্যাটারিনির্ভর নানা প্রযুক্তিপণ্যের ব্যবহার চলছে।

অনেক বছর ধরেই ব্যাটারির চার্জ ও ক্ষমতা বাড়ানো নিয়ে গবেষকেরা কাজ করছেন। সম্প্রতি লিথিয়াম ও সালফারের সংযোগে অল-সলিড-স্টেট লিথিয়াম-সালফার ব্যাটারি তৈরিতে সাফল্য পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

বৈদ্যুতিক গাড়ির ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক চাহিদা মেটাতে নতুন ধরনের উন্নত ব্যাটারির প্রয়োজনীয়তার কথা গাড়ি নির্মাতারা অনেক দিন ধরেই বলছেন। অল-সলিড-স্টেট লিথিয়াম সালফার ব্যাটারি সেই জায়গায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করা হয়। কানাডার ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয় ও ইউনির্ভাসিটে দ্য কুইবেক আ মন্ট্রিলের গবেষকেরা সস্তা ব্যাটারি তৈরির জন্য একটি নতুন পদ্ধতি বের করেছেন। এই পদ্ধতিতে ব্যাটারি অনেক বেশি চার্জ ধরে রাখার পাশাপাশি ব্যাটারি দ্রুত রিচার্জ করা যায়।

গবেষক জাস্টিন কিম বলেন, প্রচলিত লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির তুলনায় নতুন ধরনের ব্যাটারি প্রায় ১০ গুণ শক্তি সঞ্চয় করে। সালফার ও লিথিয়াম ধাতুর ক্ষমতা তাত্ত্বিকভাবে ২৬০০ ওয়াট/কিলোগ্রাম, যা সাধারণ ব্যাটারির চেয়ে কয়েক গুণ বেশি। এ ধরনের রিচার্জেবল ব্যাটারিতে সালফার ব্যবহার করে ব্যাটারির শক্তির ধারণক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে। সালফার বেশ সাশ্রয়ী, সহজলভ্য ও পরিবেশের জন্য নিরাপদ। এই ব্যাটারিনির্ভর বৈদ্যুতিক গাড়ির দাম তুলনামুলক কম হবে। একবার চার্জে দীর্ঘ দূরত্বে গাড়ি চালাতে এই ব্যাটারি ভবিষ্যতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

নতুন এই ব্যাটারি বৈদ্যুতিক যানবাহন ও বৈদ্যুতিক বিমান চালনার মতো অনেক নতুন উদীয়মান খাতে আমূল পরিবর্তন আনবে। নতুন ধরনের এই ব্যাটারির উদীয়মান প্রযুক্তি হিসেবে দারুণ সাড়া ফেলেছে। দীর্ঘস্থায়ী ও উচ্চশক্তি ঘনত্বের ব্যাটারি ডিজাইন করা অনেক জটিল কাজ। নতুন ধরনের ব্যাটারি তৈরিও জটিল কাজ বলা যায়।

বিজ্ঞানীরা এরই মধ্যে নানান ধরনের সালফার ব্যাটারির অপারেশন নিয়ে গবেষণা করছেন। এমনই একটি গবেষণার ফলাফল নেচার কমিউনিকেশন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষক দল আশা করছে আগামী ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য নতুন প্রযুক্তির ব্যাটারি তৈরি করা যাবে।

সূত্র: নেচার ও টেক এক্সপ্লোর