প্রথম টেলিগ্রাফ বার্তা প্রেরণ

প্রথম টেলিগ্রাম। আজ থেকে ১৭৯ বছর আগে ১৮৪৪ সালের ২৪ মে স্যামুয়েল মোর্স যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসি থেকে বাল্টিমোরে সঞ্চালন তারের প্রথম টেলিগ্রাম বা তার বার্তা পাঠাতে সফল হন।

মোর্স টেলিগ্রাফ যন্ত্র

২৪ মে ১৮৪৪
প্রথম টেলিগ্রাফ বার্তা প্রেরণ
আজ থেকে ১৭৯ বছর আগে ১৮৪৪ সালের ২৪ মে স্যামুয়েল মোর্স যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসি থেকে বাল্টিমোরে সঞ্চালন তারের প্রথম টেলিগ্রাম বা তার বার্তা পাঠাতে সফল হন। এটিই ছিল প্রথম বৈদ্যুতিক টেলিযোগাযোগ। বৈদ্যুতিক টেলিগ্রাফ ছিল এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় (পয়েন্ট টু পয়েন্ট) লিখিত বার্তা পাঠানোর ব্যবস্থা, যা বিংশ শতাব্দী পর্যন্ত সচল ছিল। বৈদ্যুতিক টেলিগ্রাফিকে তড়িৎ প্রকৌশলের প্রথম বাস্তব উদাহরণও বলা যায়।
বিভিন্ন ভৌগোলিক অবস্থানে স্থাপন করা হয়েছিল টেলিগ্রাফ কার্যালয়ে। এগুলোতে থাকত টরে টক্কা যন্ত্র। দুই ধরনের টেলিগ্রাফ প্রযুক্তি প্রচলিত ছিল তখন। প্রথমটা নিডল (সুই) টেলিগ্রাফ। এতে নিডল পয়েন্টার বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় শক্তি ব্যবহার করে টেলিগ্রাফের সঞ্চালন তারে বিদ্যুতের প্রবাহ তৈরি করে। প্রথম দিকে একাধিক সুইয়ের জন্য একাধিক তারের লাইন থাকত।

১৮১২ সালে স্যামুয়েল মোর্সের আঁকা আত্মপ্রতিকৃতি
ন্যাশনাল পোর্ট্রিট গ্যালারি

দ্বিতীয় ধরনটার নাম ছিল আর্মেচার সিস্টেম। এতে টেলিগ্রাফ লাইনে যাওয়া বিদ্যুতের প্রবাহ ‘ক্লিক’ শব্দ উৎপন্ন করত। এটা স্যামুয়েল মোর্স ১৮৩৮ সালে উদ্ভাবন করেছিলেন। এটি ‘মোর্স সিস্টেম’ নামে পরিচিত। ক্লিকের ধরন, শব্দের সময়সীমা ধরে একেকটি রোমান হরফের জন্য সংকেত থাকত, যা প্রাপক যন্ত্রে সংকেত পুনরুদ্ধার করে শব্দ বা বাক্যে রূপান্তর করা হতো। এ সংকেত ‘মোর্স কোড’ নামে পরিচিত। একেই টরে টক্কা বলা হতো। ১৮৬৫ সালে এসে মোর্স সিস্টেম আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগের ‘মান’-এ পরিণত হয়। একই বছর জার্মান রেলওয়ের জন্য উন্নত সংকেত তৈরি করা হয়। সেই সময়ের বিকাশমান রেলওয়ে নেটওয়ার্ক পরিচালনা ও যোগাযোগের জন্য টেলিগ্রাফে বহুল ব্যবহার হয়েছে।

টেলিগ্রাফের গ্রাহক যন্ত্র

১৮৫০ সালে সমুদ্রতলে টেলিগ্রাফের তার বসানো শুরু হয় মহাদেশগুলোর মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য। বিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে ধীরে ধীরে ম্যানুয়াল টেলিগ্রাফের জায়গা দখল করে নেয় টেলিপ্রিন্টার নেটওয়ার্ক। ১৯৯০-এর দশকে ইন্টারনেটের উত্থান ও ই-মেইলের প্রসার হওয়ায় টেলিগ্রাফি নেটওয়ার্কের সমাপ্তি ঘটে।

একটি প্রদর্শনীতে ম্যাগনাভক্স ওডেসি

২৪ মে ১৯৭২
প্রথম ভিডিও গেম কনসোল
ম্যাগনাভক্স ওডেসি নামের ভিডিও গেম খেলার যন্ত্র প্রথমবারের মতো দেখানো হয়। ম্যাগনাভক্স ওডেসি পৃথিবীর প্রথম বাণিজ্যিক গেম কনসোল। যুক্তরাষ্ট্রের স্যান্ডার অ্যাসোসিয়েটসে রালফ এইচ বায়েরের নেতৃত্বে একটি ছোট দল এ যন্ত্রের নকশা করে। ১৯৭২ সালের সেপ্টেম্বরে ওডেসি মার্কিন বাজারে আসে। পরে অন্যান্য দেশেও এটি রপ্তানি করা হয়। সাদা, কালো ও বাদামি বক্সের সমন্বয়ে তৈরি করা হয় ওডেসি।

ওডেসির টেবিল টেনিস ভিডিও গেম

এই যন্ত্রকে সিআরটি (ক্যাথোড রে টিউব) টেলিভিশনের সঙ্গে যুক্ত করে গেম খেলতে হতো।
একজন বা দুজন এতে গেম খেলতে পারতেন। কন্ট্রোলারে থাকা নব ও বোতাম দিয়ে পর্দায় ভেসে ওঠা বিন্দু নিয়ন্ত্রণ করে এই গেম খেলতে হতো। ১৯৬৬ সালের আগস্টে বায়ের এ যন্ত্রের ধারণা পান। এরপর বিল হ্যারিসন ও বিল রাশ্চকে সঙ্গে নিয়ে সাতটি নমুনা তৈরি করেন। সপ্তম নমুনা বাদামি বক্স হিসেবে পরিচিত। বাজারে ছাড়ার প্রথম বছরেই ৬৯ হাজার ম্যাগনাভক্স ওডেসি বিক্রি হয়। ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত বিক্রি হয় সাড়ে তিন লাখ ওডেসি। এরপর আসে ম্যাগনাভক্স ওডেসি-২।
ওডেসির প্রকাশ ভিডিও গেমের প্রথম প্রজন্মের সূচনা করেছিল।

ওয়েস ক্লার্ক ও তাঁর কম্পিউটার
কম্পিউটার হিস্ট্রি ডটওআরজি

২৪ মে ১৯৬১
এমআইটির ক্লার্ক এলআইএনসির ওপর কাজ শুরু করেন
যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির লিঙ্কন ল্যাবে ১৯৬১ সালের এই দিনে ওয়েস ক্লার্ক এলআইএনসির (ল্যাবরেটরি ইনস্ট্রুমেন্ট কম্পিউটার) ওপর কাজ শুরু করেন। তাঁর পরিকল্পনা ছিল বায়োমেডিকেল গবেষণার জন্য কম্পিউটার তৈরি করা, সহজে যেটির প্রোগ্রাম ও রক্ষণাবেক্ষণ করা যাবে। ক্লার্ক এমনভাবে এই কম্পিউটার গড়ে তোলেন, যা ব্যবহার করা সহজ। ব্যবহারবান্ধব আদি এই কম্পিউটার পরবর্তীকালে পারসোনাল কম্পিউটারের (পিসি) মান তৈরি করে দেয়, যা পরের কয়েক দশক ধরে অনুসরণ করা হচ্ছে।