মহাকাশ থেকে ফিরলে নভোচারীদের শরীরে যেসব প্রভাব পড়ে

মহাকাশে টানা ৩৭৪ দিন থাকার রেকর্ড করে গত বছর পৃথিবীতে ফিরে এসেছেন নভোচারি ওলেগ কোনোনেনকো ও নিকোলাই চুব (ডানে)নাসার ভিডিও থেকে নেওয়া

তিন থেকে চার ঘণ্টার বিমানযাত্রা শেষে এয়ারপোর্টে পা রাখার পর অনেকেরই মাথা ঘুরে থাকে। কারও আবার চোখের দৃষ্টি কিছুটা ঘোলা হয়ে যায়। তাহলে ভাবুন তো, যেসব নভোচারী দীর্ঘদিন মহাকাশে অবস্থান শেষে পৃথিবীতে ফিরে আসেন, তাঁদের অবস্থা কেমন হয়। চোখ ফুলে যাওয়া, শিশুর মতো ত্বক নরম হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি নানা ধরনের মানসিক সমস্যার মুখোমুখি হন তাঁরা। পৃথিবীতে ফিরে আসার পর নভোচারীদের শারীরিক ও মানসিক অবস্থা কেমন হয়, তা জেনে নেওয়া যাক।

বিভিন্ন গবেষণার তথ্যমতে, মহাকাশে মাধ্যাকর্ষণের অভাবে নভোচারীদের হাড়ের ঘনত্ব কমে যায়। এর ফলে নভোচারীদের বাহু, পা ও কোমরের হাড়সহ হৃৎপিণ্ডের পেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মহাকাশে থাকার সময় মাধ্যাকর্ষণ শক্তির বিরুদ্ধে হৃৎপিণ্ডকে রক্ত পাম্প করতে হয় না, আর তাই রক্তের পরিমাণ সংকুচিত হয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্ত জমাটও বেঁধে যায়।

আরও পড়ুন

পৃথিবীতে ফিরে আসার পর নভোচারীদের বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা হওয়ার বিষয়ে সুইনবার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী অ্যালান ডাফি বলেন, নভোচারীদের মাথায় তরল জমা হয়, তাই তাঁদের অবিরাম ঠান্ডা লেগে থাকে। ঘ্রাণশক্তিও হ্রাস পায়। মহাকাশ থেকে ফিরে আসার পর নভোচারীদের হাঁটতে কষ্ট হওয়ার পাশাপাশি মাথা ঘোরানো ও দৃষ্টিশক্তি কমে যেতে পারে। চারপাশে তরল জমা হওয়ায় তাঁদের চোখের বলের আকারেও পরিবর্তন হয়।

আরও পড়ুন

মহাকাশে অবস্থান শেষে যখন নভোচারীরা পৃথিবীতে ফিরে আসেন, তখন তাঁদের অনেককে দেখে কোমা থেকে ফিরে আসছেন বলে মনে হয়। এ বিষয়ে অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির পদার্থবিদ ব্র্যাড টাকার বলেন, তখনকার অবস্থা খুবই ক্লান্তিকর। ফিরে আসার পর নভোচারীদের মধ্যে মানসিক চাপ দেখা যায়।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান