স্টারলিংক স্যাটেলাইটের কারণ বিপাকে মহাকাশ গবেষণার টেলিস্কোপ

স্যাটেলাইটফাইল ছবি: রয়টার্স

কয়েক বছর ধরেই পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে কৃত্রিম উপগ্রহ বা স্যাটেলাইট পাঠিয়ে সারা বিশ্বে মোবাইল ব্রডব্র্যান্ড ইন্টারনেট সেবা দিচ্ছে আলোচিত প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের মালিকানাধীন স্টারলিংক। তবে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা জানিয়েছে, পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে স্টারলিংক স্যাটেলাইটের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধির কারণে শিগগিরই মহাকাশের ছবি ধারণে সমস্যার মুখোমুখি হবে বিভিন্ন টেলিস্কোপ।

নাসার তথ্যমতে, স্টারলিংকের বিভিন্ন স্যাটেলাইট সূর্যের আলোকে প্রতিফলিত করে ও শক্তিশালী আলো নির্গত করে। যার ফলে টেলিস্কোপের চিত্রতে আলোর রেখা ও ব্যতিচার তৈরি হচ্ছে। নাসার আগেও ইন্টারনেট সেবা দেওয়া স্যাটেলাইটের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন বিজ্ঞানীরা। নেচার সাময়িকীতে প্রকাশিত এক গবেষণায় প্রথম মহাকাশভিত্তিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের সম্ভাব্য ক্ষতির তথ্য তুলে ধরা হয়। সে সময় গবেষকেরা জানান, পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে থাকা স্যাটেলাইটের কারণে নাসার স্পেয়ারএক্স টেলিস্কোপ, ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সির আররাখিস টেলিস্কোপ ও চীনের জুন্টিয়ান টেলিস্কোপের ৯৬ শতাংশ ক্ষেত্রে ছবি ধারণে সমস্যা তৈরি হবে। আবার এই কারণে হাবল স্পেস টেলিস্কোপের মতো সরু দৃষ্টিক্ষেত্রের টেলিস্কোপের প্রায় ৩৯.৬ শতাংশ ছবি ধারণ প্রভাবিত হতে পারে।

নিম্ন কক্ষপথে স্যাটেলাইটের সংখ্যা ২০১৯ সালে ছিল প্রায় ২ হাজার। এখন তা বেড়ে ১৫ হাজার পৌঁছেছে। ২০৩০ সালের মধ্যে আরও ৫ লাখ ৬০ হাজার স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গেছে। গবেষকেরা তাঁদের গবেষণায় জানান, ইন্টারনেটনির্ভর স্যাটেলাইটের সংখ্যা আরও বাড়লে আলোর দূষণ বাড়ছে। এই দূষণের কারণে বিভিন্ন ছবিতে গ্রহাণু শনাক্তকরণে সমস্যা হওয়ার পাশাপাশি গ্যালাক্সি পর্যবেক্ষণের মতো বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষণা প্রভাবিত হবে।

প্রসঙ্গত, নতুন প্রজন্মের স্টারলিংক স্যাটেলাইটগুলো সারা বিশ্বে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা দিলেও এগুলো রেডিও টেলিস্কোপ ও জ্যোতির্বিদ্যা-সংক্রান্ত বিভিন্ন গবেষণাকে বাধাগ্রস্ত করছে। ফলে মহাবিশ্বের রহস্য উন্মোচনের সময় বিভ্রান্ত হচ্ছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।

সূত্র: এনডিটিভি