জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আল্পস পর্বতমালায় বাড়ছে ভূমিকম্প
সারা বিশ্বে প্রতিদিনই বিভিন্ন স্থানে নানা মাত্রায় ভূমিকম্প হয়ে থাকে। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের আগাম সতর্কবার্তা পাওয়া গেলেও ভূমিকম্পের নির্ভুল সতর্কবার্তা পাওয়া যায় না। তাই ভূমিকম্প নিয়ে আতঙ্কে থাকেন অনেকেই। সাধারণত পৃথিবীর অভ্যন্তরে টেকটোনিক প্লেটের সংঘর্ষের কারণে ভূমিকম্প হলেও এবার ভূমিকম্পের সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের সংযোগ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। আল্পস পবর্তমালায় জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হিমবাহ গলে যাওয়ার পাশাপাশি সেখানে ছোটখাটো ভূমিকম্প বেশি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আল্পসের এলাকায় ছোটখাটো ভূমিকম্পের প্রবণতা তৈরি হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ভূকম্পের মতো কার্যকলাপের সঙ্গে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাব নতুন উদ্বেগ তৈরি করছে। ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার কারণে দ্রুত হিমবাহ গলে যাচ্ছে। গলে যাওয়া বরফপানি ভূগর্ভস্থ ফল্ট লাইনে প্রবেশ করতে পারে। এতে কম্পনের ঝুঁকি বাড়ার শঙ্কা রয়েছে।
বিজ্ঞানীরা মন্ট ব্ল্যাংক পর্বতমালার হিমবাহ-আচ্ছাদিত শিখর গ্র্যান্ডেস জোরাসেসের নিচে ভূমিকম্পের কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করছেন। ভূমিকম্পের রেকর্ড থেকে দেখা যায়, ২০১৫ সালের তাপপ্রবাহের পর ছোট ছোট ভূমিকম্পের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই কম্পনের কারণে হিমবাহের গলিত পানি গভীর শিলাস্তরে প্রবেশ করে। হিমবাহের পানির কারণে ভূতাত্ত্বিক ত্রুটি বেশি দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে ঘন ঘন ও শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়। প্রায়ই এক থেকে দুই বছরের বিরতিতে ভূমিকম্প দেখা যায়। বরফগলা পানি ধীরে ধীরে ফল্ট লাইন বরাবর চাপ তৈরি করে একটি ট্রিগার পয়েন্টে পৌঁছালে ভূমিকম্প হয়।
বিজ্ঞানীদের ধারণা, দীর্ঘদিন ধরে চাপযুক্ত পানি ভূমিকম্পের কার্যকলাপকে প্রভাবিত করে। শুধু আল্পস পর্বতমালায় নয়, বরং হিমালয়ের মতো অন্যান্য হিমবাহযুক্ত অঞ্চলেও এমন প্রবণতা বাড়ছে। এসব ভূমিকম্পের কারণে মন্ট ব্ল্যাংক টানেলের মতো অবকাঠামো বড় হুমকিতে না পড়লেও ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।
সূত্র: এনডিটিভি