২৯ অক্টোবর সূর্যের অন্য পাশে কী ঘটতে পারে
কয়েক মাস ধরে অন্য নক্ষত্র থেকে আসা বিশাল এক রহস্যময় বস্তু বিজ্ঞানীদের মধ্যে বেশ কৌতূহল তৈরি করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা জানিয়েছে, ‘৩আই/অ্যাটলাস’ নামের বস্তুটি পৃথিবীর জন্য কোনো হুমকি নয় এবং নিরাপদ দূরত্ব থেকে অতিক্রম করবে। কিন্তু অনেক বিজ্ঞানী নাসার এই ধারণার সঙ্গে একমত নন। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতনামা জ্যোতির্বিজ্ঞানী আভি লোব অভিযোগ করেছেন যে, নাসা বস্তুটির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন করছে। বিশাল আকারের অতি দ্রুতগামী মহাজাগতিক বস্তুটি অস্বাভাবিক রাসায়নিক উপাদান নিঃসরণ করছে, যা বিজ্ঞানের প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছে। অনেকের ধারণা, ৩আই/অ্যাটলাস কোনো কৃত্রিম উৎস থেকে তৈরি হতে পারে।
বিজ্ঞানী লোবের মতে, যদি বস্তুটি কৃত্রিমভাবে তৈরি হয়, তবে এর আচরণ সম্পর্কে আগাম অনুমান করা যাবেন না। ২৯ অক্টোবর সূর্যের অন্য পাশে অবস্থান করবে রহস্যময় বস্তুটি। ফলে পৃথিবী থেকে কোনো টেলিস্কোপের মাধ্যমে দেখা যাবে না, আসলে কী হচ্ছে সেখানে। হাওয়াইয়ের কেক ২ টেলিস্কোপে ধারণ করা ছবিতে দেখা গেছে, বস্তুটি প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ৪ গ্রাম নিকেল নিঃসরণ করছে যার মধ্যে কোনো লোহা নেই। এমন যৌগ শুধু শিল্প খাতে নিকেল অ্যালয় তৈরির সময় দেখা যায়। তবে এ ধরনের যৌগ নিঃসরণের ঘটনা আগে কখনো কোনো মহাজাগতিক বস্তুর ক্ষেত্রে দেখা যায়নি।
বস্তুটি প্রথম শনাক্ত হয় গত জুলাই মাসে। এর ব্যাস প্রায় ৫ দশমিক ৬ কিলোমিটার ও ওজন প্রায় ৩ হাজার ৩০০ কোটি টন। এর গতি পূর্বে শনাক্ত হওয়া আন্তনাক্ষত্রিক বস্তু ওউমুয়ামুয়া ও বরিসভের প্রায় দ্বিগুণ। প্রায় ৫ দশমিক ৬ কিলোমিটার চওড়া প্রচণ্ড গতিশীল বস্তুটির গতিপথও বেশ অদ্ভুত। আর তাই বিজ্ঞানীদের অনেকেই বস্তুটির পরিচয় ও উৎস নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন মতামত দিয়েছেন। কেউ বলছেন, বস্তুটি অন্য কোনো নক্ষত্রমণ্ডল থেকে আসা প্রাকৃতিক বস্তু। আবার কারও মতে কোনো বুদ্ধিমান সভ্যতার এলিয়েন কৃত্রিমভাবে বস্তুটি তৈরি করেছে।
স্পেনের ইউনিভার্সিটি অব আ কোরুনার বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ৩আই/অ্যাটলাস নামের বস্তুটির কম্পিউটার সিমুলেশনে কোনো কৃত্রিম প্রভাবের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে বিজ্ঞানী পেরেজ কৌতো বলেন, ‘প্রতিটি পর্যবেক্ষণ মহাবিশ্বের অতীতে উঁকি দেওয়ার মতো। এর মাধ্যমে আমরা অন্য নক্ষত্রের চারপাশে গঠিত পদার্থের বিবর্তন বুঝতে পারি। ধারণা করা হচ্ছে বস্তুটি কোনো গ্যালাক্সির থিন ডিস্ক নামক প্রাচীন অঞ্চলে তৈরি হয়েছে, যার বয়স প্রায় এক হাজার কোটি বছর।’
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া