মহাবিশ্বে বিগ ব্যাংয়ের মতো বিগ ক্রাঞ্চ হতে পারে, ধারণা বিজ্ঞানীদের
মহাকাশের শুরু হয়েছে কবে বা মহাবিশ্ব যদি প্রসারিত হতে থাকে, তাহলে শেষ প্রান্ত কোথায়? এমন অনেক প্রশ্ন আমাদের মনে উঁকি দেয়। আর তাই মহাকাশ ও মহাবিশ্বের অমীমাংসিত বিভিন্ন রহস্যের সমাধান করতে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা। এবার মহাবিশ্বের শেষের সময় নিয়ে নতুন তথ্য প্রকাশ করে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মহাবিশ্ব দুই হাজার কোটি বছর পর ভেঙে পড়তে পারে। ডার্ক এনার্জি সার্ভে ও ডার্ক এনার্জি স্পেকট্রোস্কোপিক যন্ত্র থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে মহাবিশ্বের শেষ সময় সম্পর্কে অনুমান করা হয়েছে।
কয়েক দশক ধরে বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করছেন, মহাবিশ্ব চিরতরে প্রসারিত হবে। এ বিষয়ে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্পদার্থবিদ আভি লোয়েব বলেন, গ্যালাক্সি কেবল একে অপরের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে না; বরং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই সম্প্রসারণ দ্রুততর হচ্ছে। ডার্ক এনার্জি নামে পরিচিত একটি রহস্যময় শক্তির মাধ্যমে মহাবিশ্ব অবিরামভাবে বাইরের দিকে সরে যাচ্ছে। নতুন গবেষণায় বলা হয়েছে, মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ একসময় বন্ধ হয়ে যাবে। তখন বিগ ক্রাঞ্চ নামক একটি বিপর্যয়কর ঘটনায় নিজেই ভেঙে পড়তে পারে। গবেষণা অনুসারে, এ ঘটনা প্রায় দুই হাজার কোটি বছর পর ঘটতে পারে।
মহাবিশ্ব কতটা বিস্তৃত হবে, তা ধনাত্মক ডার্ক এনার্জি ধ্রুবকের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা নির্ধারণ করেছেন। এই শক্তির মাধ্যমে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গ্যালাক্সি দ্রুত দূরে সরিয়ে নিচ্ছে। ডার্ক এনার্জি সার্ভে ও ডার্ক এনার্জি স্পেকট্রোস্কোপিক ইনস্ট্রুমেন্টের তথ্য বলছে, ডার্ক এনার্জি হয়তো সব সময়ের জন্য ধ্রুবক নয়। এই শক্তি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তিত হতে পারে।
অ্যাক্সিয়ন-ডার্ক এনার্জি মডেল নামের একটি নতুন তাত্ত্বিক কাঠামো প্রস্তাব করেছেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীদের তথ্য মতে, মহাজাগতিক ধ্রুবক শক্তি ঘনত্বকে প্রতিফলিত করে। এই ধ্রুবক নেতিবাচক হতে পারে। মাধ্যাকর্ষণ একসময় সম্প্রসারণকে অতিক্রম করে ফেলবে। এতে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মহাবিশ্বের বৃদ্ধি ধীর হয়ে যাবে। একসময় থেমে যাবে। একসময় সংকোচন পর্যায়ে আসবে। যদি সংকোচন ঘটে, তাহলে সব পদার্থ ও শক্তি একটি একক ও ঘন বিন্দুতে সংকুচিত হতে পারে। তখন বিগ ক্রাঞ্চ নামে পরিচিত একটি ঘটনা দেখা যাবে। এটি বিগ ব্যাংয়ের বিপরীত ঘটনা।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, ডিসকভার ম্যাগাজিন