স্যাটেলাইটের কারণে বিপাকে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা, কেন?

স্যাটেলাইটরয়টার্স

২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে মহাকাশে পাঠানো হয় ব্লুওয়াকার থ্রি স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহ। ৬৪ বর্গমিটার দৈর্ঘ্যের বিশাল বাহুযুক্ত এই স্যাটেলাইট থেকে সূর্যের আলো প্রতিফলিত হয়। ফলে স্যাটেলাইটটিকে প্রোসিয়ন ও আচারনার নামের দুটি নক্ষত্রের মতোই উজ্জ্বল দেখা যায়। ভূপৃষ্ঠ থেকে ৫০০ কিলোমিটার ওপরে প্রদক্ষিণ করায় পৃথিবী থেকে রাতের বেলা সহজেই দেখা যায় স্যাটেলাইটটি। শুধু তা–ই নয়, ব্লুওয়াটার থ্রি স্যাটেলাইটের রেডিও তরঙ্গ রেডিও-জ্যোতির্বিদ্যায় ব্যবহৃত তরঙ্গের কাছাকাছি। ফলে স্যাটেলাইট তরঙ্গ আর গ্রহ-নক্ষত্রের তরঙ্গ আলাদা করতে বেশ সমস্যা হয়, তথ্যবিভ্রাটের ঝুঁকিও রয়েছে। এ ধরনের বেশ কিছু স্যাটেলাইটের কারণে মহাকাশ গবেষণার সময় বিভ্রান্ত হচ্ছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।

এ বিষয়ে চিলির ইউনিভার্সিদাদ ডি আতাকামার গবেষক জেরেমি ট্রেগ্লোন-রিড বলেন, নক্ষত্র, গ্রহ ও অন্যান্য মহাজাগতিক বস্তুর আলোয় রাতের আকাশ আলোকিত হয়। পৃথিবী থেকে আকাশে যত দৃশ্যমান উজ্জ্বল বস্তু দেখা যায়, তার মধ্যে অনেক স্যাটেলাইট বা উপগ্রহও রয়েছে। পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে থাকা এসব উজ্জ্বল স্যাটেলাইট বড় নক্ষত্র পর্যবেক্ষণে বাধা তৈরি করছে, যা জ্যোতির্বিজ্ঞান গবেষণার জন্য গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ।

উজ্জ্বলতা বেশি হলে পৃথিবী থেকে সহজেই টেলিস্কোপের মাধ্যমে দেখা যায় স্যাটেলাইট। আর তাই এসব স্যাটেলাইটের কারণে বিরক্ত জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞান সাময়িকী নেচারে এ বিষয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করা হয়েছে। চিলি, যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো, নিউজিল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস ও মরক্কোর শৌখিন ও পেশাদার জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এ গবেষণায় অংশ নেন। রাতের আকাশ পর্যবেক্ষণ করে ব্লুওয়াকার থ্রি স্যাটেলাইটের প্রভাব খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন তাঁরা। তাঁদের মতে, ব্লুওয়াকার স্যাটেলাইটের সমতল পৃষ্ঠ থেকে সূর্যের আলো প্রতিফলিত হয়, যা এরই মধ্যে বিতর্ক তৈরি করেছে। কখনো কখনো শুক্র গ্রহের চেয়ে উজ্জ্বল হয়ে খালি চোখে ধরা পড়ে এ স্যাটেলাইট। ভবিষ্যতে এ ধরনের আরও স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা রয়েছে। এসব স্যাটেলাইটের কারণে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের দূরবর্তী বস্তু পর্যবেক্ষণে আরও চ্যালেঞ্জ তৈরি হবে।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান ও স্পেস ডট কম