দৈত্যকার পেঙ্গুইনের জীবাশ্মের খোঁজ
নিউজিল্যান্ডে সম্প্রতি প্যালিওসিন যুগের একটি দৈত্যকার পেঙ্গুইনের জীবাশ্মের খোঁজ পাওয়া গেছে। কুমিমানু ফোর্ডাইসি নামের পুরোনো প্রজাতির এই পেঙ্গুইনের ওজন ছিল প্রায় ৩৫০ পাউন্ড। ৫ কোটি ৭০ লাখ বছর আগের এই জীবাশ্ম পেঙ্গুইনের বিবর্তনের নতুন তথ্য জানান দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। জার্নাল অব প্যালিওন্টোলজিতে পেঙ্গুইনের নতুন এই জীবাশ্মের তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
জীবাশ্ম বিশ্লেষণ করে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, পেঙ্গুইন অনেক আগেই বৃহৎ দেহের আকার ধারণ করেছিল। সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতার কারণে পরবর্তী সময়ে দৈত্যকার পেঙ্গুইন বিলুপ্ত হয়ে যায়। বিশাল এই প্রাগৈতিহাসিক পেঙ্গুইন প্রজাতি দক্ষিণ নিউজিল্যান্ডের সমুদ্রের উপকূলরেখায় বাস করত। প্রায় ৩৫০ পাউন্ড ওজনের বিশাল এই পেঙ্গুইন আধুনিক এম্পেরর পেঙ্গুইনদের তুলনায় অনেক বেশি ছিল। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় ও নিউজিল্যান্ডের তে পাপা জাদুঘরের বিজ্ঞানীরা এই পেঙ্গুইনের বিবর্তনের তথ্য সংগ্রহ করছেন।
কুমিমানু ফোর্ডাইসি প্রজাতির পেঙ্গুইন এমন সময়কে প্রতিনিধিত্ব করছে, যে সময়ে বিশাল ও বড় আকারের সামুদ্রিক পাখিরা পৃথিবীতে বিচরণ করত। নিউজিল্যান্ডের উত্তর ওটাগো উপকূলের সমুদ্রসৈকতের পাথরে কুমিমানু ফোর্ডাইসির জীবাশ্মের খোঁজ মিলেছে। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবাশ্মবিদ অ্যালান টেনিসন ও ড্যানিয়েল ফিল্ডের নেতৃত্বে একদল বিজ্ঞানী এ জীবাশ্মের খোঁজ পান। নতুন এ প্রজাতিকে সবচেয়ে বড় পেঙ্গুইনের প্রজাতি বলা হচ্ছে। এটি প্রাচীনতম পেঙ্গুইনের মধ্যে অন্যতম।
মাওরি ভাষায় কুমিমানু অর্থ দানব পাখি। দৈত্যকার পেঙ্গুইন হওয়ার কারণে এসব পাখি বেশ সুবিধা পেত। বড় পেঙ্গুইনরা সমুদ্রের বেশি গভীরে ডুব দিতে পারত। বেশিক্ষণ ডুবে ভালো শিকার করতে পারত। সম্ভবত বড় বড় মাছ ও স্কুইড শিকার করতে পারত তারা। তাপ নিয়ন্ত্রণের দৃষ্টিকোণ থেকে বিশালাকার এসব পেঙ্গুইনের অনেক সুবিধা ছিল। বড় দেহ তাপকে কার্যকরভাবে ধরে রাখতে সাহায্য করত। কুমিমানুর মতো বিশাল পেঙ্গুইন নিউজিল্যান্ড, অ্যান্টার্কটিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার কিছু অংশজুড়ে লাখ লাখ বছর ধরে বসবাস করেছে। প্রায় দুই কোটি বছর আগে এরা হারিয়ে যায় বলে মনে করা হয়।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া