ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করবে যে মশা

ডেঙ্গু রোগের বাহক এডিস মশারয়টার্স

‘কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা’ বা ‘বিষে বিষক্ষয়’ প্রবাদ আমরা অনেকেই শুনেছি। বাংলা ভাষার এই প্রবাদগুলো জানা না থাকলেও মশাবাহিত ডেঙ্গু ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ধরনের মশার ব্যবহার শুরু করছেন ব্রাজিলের বিজ্ঞানীরা। জিনগতভাবে বা জেনেটিক্যালি রূপান্তরিত এসব মশার মাধ্যমে ডেঙ্গু ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানো যাবে বলে ধারণা করছেন তাঁরা।

ব্রাজিলে বর্তমানে ডেঙ্গু ভাইরাসের প্রকোপ রেকর্ড পরিমাণে বেড়েছে। এ বছরের প্রথম দুই মাসেই দেশটিতে ১০ লাখের বেশি মানুষ ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, যা গত বছরের তুলনায় ২২৬ শতাংশ বেশি। তাই ব্রাজিলের বিভিন্ন শহরে রীতিমতো জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। ডেঙ্গু ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ব্রাজিলের স্বাস্থ্য বিভাগ ভ্যাকসিন তৈরির উদ্যোগ নেওয়ার পাশাপাশি জেনেটিক্যালি রূপান্তরিত মশার ব্যবহার শুরু করেছে।

ডেঙ্গু ভাইরাস শুধু স্ত্রী এডিস মশার কামড়ের মাধ্যমে ছড়ায়। তাই পুরুষ এডিস মশাকে জিনগতভাবে পরিবর্তন করে স্ত্রী এডিস মশার বংশবৃদ্ধি ঠেকাতে কাজ শুরু করেছেন ব্রাজিলের বায়োটেক প্রতিষ্ঠান ‘অক্সিটেক’-এর বিজ্ঞানীরা। এ জন্য প্রথমে পুরুষ এডিস মশার জিন পরিবর্তন করে সেগুলোর ডিম তৈরি করা হয়। ডিমগুলো একটি বাক্সে রেখে দিলে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় শুধু পুরুষ এডিস মশার জন্ম হয়। পরিবর্তিত এসব মশা প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগেই আশপাশে থাকা স্ত্রী মশাগুলোকে হত্যা করে। ফলে স্ত্রী এডিস মশার মাধ্যমে ডেঙ্গু ভাইরাস ছড়ানোর আশঙ্কা কমে যায়। এর আগে ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় বিভিন্ন রোগ ছড়াতে সক্ষম মশার সংখ্যা কমাতে জেনেটিক্যালি রূপান্তরিত মশা ছাড়া হয়েছিল।

এ বিষয়ে অক্সিটেকের কর্মকর্তা নাটালিয়া ফেরেইরা বলেন, রূপান্তরিত বা পরিবর্তিত মশা প্রায় ১০ দিনের মধ্যে চক্র সম্পূর্ণ করে প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে প্রকৃতিতে চলে যায়। যেসব অঞ্চলে জেনেটিক্যালি রূপান্তরিত মশা ছাড়া হয়েছে, সেখানকার এডিস মশার সংখ্যা প্রায় ৯০ শতাংশ কমে গেছে। ব্রাজিলের সাও পাওলো এলাকার সুজানোসহ বেশ কয়েকটি শহরে রূপান্তরিত মশা ছাড়া হয়েছে।

সূত্র: লাইভ সায়েন্স