সবুজের মধ্যে বেশি সময় কাটালে মন প্রফুল্ল থাকে

যাঁরা সবুজের সঙ্গে বেশি সময় কাটান, তাঁদের মন প্রফুল্ল থাকেএএফপি

প্রিয়তমা বা প্রিয়তমের দিকে মুগ্ধতায় তাকিয়ে থাকি আমরা। পড়ে না চোখের পলকের মতো। এবার বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, শুধু প্রিয় মানুষ নয়, প্রকৃতির দিকেও যদি তাকিয়ে থাকেন, তাতে আপনার মানসিক শান্তি আসবে। এ বিষয়ে ‘পিপল অ্যান্ড নেচার’ সাময়িকীতে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে।

যুক্তরাজ্যের ব্যাঙ্গর বিশ্ববিদ্যালয় ও টেকনিওন-ইসরায়েল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির গবেষকেরা প্রকৃতির দিকে তাকিয়ে থাকার নতুন এই সুফল সম্পর্কে জানিয়েছেন। শহরে যাঁরা বাস করেন, তাঁদের সবুজ প্রকৃতির কাছে যাওয়ার সুযোগ কম। গবেষকেরা দেখেছেন যে প্রকৃতির দিকে তাকিয়ে থাকলে শহরের বাসিন্দারা উপকৃত হন। গবেষকেরা শহুরে এলাকায় প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট বিভিন্ন বস্তুর দিকে তাকিয়ে থাকার পরীক্ষা করেন। গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের কাজ ছিল, বিভিন্ন বস্তুর দিকে তাকিয়ে থাকা। তখন অংশগ্রহণকারীদের মনোযোগ রেকর্ড করতে ‘আই-ট্র্যাকিং’ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। কী দেখছেন, তা সুস্থতার ওপর কতটা প্রভাব তৈরি করে, তার মূল্যায়ন করেন গবেষকেরা।

গবেষকেরা শহরের ১১৭ বাসিন্দাকে ৪৫ মিনিট করে হাঁটতে বলেন। সাধারণ পথেই তাঁদের যাতায়াত করতে হয়। চোখে আইবল ট্র্যাকিং চশমা পরে হাঁটেন তাঁরা। গবেষকেরা হাঁটার আগে ও পরে মেজাজ ও অনুভূতি রেকর্ড করেন। গবেষণায় দেখা যায়, যাঁরা সবুজের সঙ্গে বেশি সময় কাটান, তাঁদের মন প্রফুল্ল থাকে। আর যাঁরা শহরের ভবন বা রাস্তায় বেশি মনোযোগ দেন, তাঁদের উদ্বেগের মাত্রা কিছুটা বেশি থাকে। প্রতিদিনের অভ্যাসে সবুজের সঙ্গে কাটানোর মতো বিষয় যুক্ত হলে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নের সুযোগ আছে।

গবেষণায় দেখা যায়, যাঁরা গাছপালা, সবুজ বাগান, ফুলের দিকে বেশি মনোযোগ দেন, তাঁদের উদ্বেগ কম। গবেষকেরা চোখের মণির নড়াচড়া বিশ্লেষণ করে এ তথ্য প্রকাশ করেন। পরিবেশবিজ্ঞানী হুইটনি ফ্লেমিং বলেন, ‘কোথায় তাকাচ্ছেন, তা আপনার মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলে। আমরা দেখতে পেয়েছি, যাঁরা সবুজ উপাদানের দিকে ঘন ঘন তাকান, তাঁদের উদ্বেগের মাত্রা কম থাকে। বিভিন্ন গাছে যাঁদের মনোযোগ থাকে, তাঁদের মনের স্বাস্থ্য ভালো দেখা যায়। গাছ পর্যবেক্ষণ ও মানব অনুভূতির মধ্যে একটা আপেক্ষিক সম্পর্ক দেখা যাচ্ছে। প্রকৃতির সঙ্গে সামান্য সময়ের মিথস্ক্রিয়া মানসিক স্বাস্থ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন আনে। যেসব শহরের কাঠামোয় সবুজের উপস্থিতি বেশি, সেখানকার অধিবাসীদের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত হয়। দৈনন্দিন জীবনে প্রকৃতির সঙ্গে কিছুটা সময় কাটালে শহরের বাসিন্দাদের মানসিক চাপ কমে।’
সূত্র: ফোর্বস