পৃথিবী থেকে ১৫০০ কোটি মাইল দূরে কেমন আছে ভয়েজার ১
পৃথিবী থেকে ১ হাজার ৫০০ কোটি মাইল দূরে থাকা নাসার মহাকাশযান ভয়েজার ১ গত তিন মাস ধরে কোনো তথ্য পাঠাচ্ছে না। কারিগরি ত্রুটির কারণে পৃথিবী থেকেও কোনোভাবে মহাকাশযানটি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। আর তাই পৃথিবী থেকে সবচেয়ে দূরে থাকা মহাকাশযানটির ভবিষ্যৎ নিয়ে বেশ চিন্তায় পড়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার বিজ্ঞানীরা। কারিগরি ত্রুটি সমাধানে কাজ চললেও মহাকাশযানটির সঙ্গে পুনরায় যোগাযোগ স্থাপন করা যাবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১৪ নভেম্বর থেকে ভয়েজার ১ কোনো তথ্য পৃথিবীতে পাঠাতে পারছে না। তবে এখনো পৃথিবী থেকে সংকেত গ্রহণ করার পাশাপাশি সৌরজগতের প্রান্ত ছাড়িয়ে আন্তনাক্ষত্রিক স্থানের মধ্য দিয়ে ক্রমাগত ছুটে চলেছে মহাকাশযানটি। এ বিষয়ে ভয়েজার প্রকল্পের ব্যবস্থাপক সুজান ডড বলেন, ‘আমরা যদি মহাকাশযানটির সঙ্গে আবারও যোগাযোগ করতে পারি, তাহলে তা হবে সবচেয়ে বড় অলৌকিক ঘটনা। প্রতি সেকেন্ডে সাড়ে ১০ মাইল গতিতে ছুটে চলছে মহাকাশযানটি’।
১৯৭৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর ভয়েজার ১ পাঠানো হয় মহাকাশে। ২০১২ সালে সৌরজগতের সীমানা অতিক্রম করে আন্তনাক্ষত্রিক স্থানে প্রবেশ করে তথ্য পাঠাতে থাকে ভয়েজার ১। পৃথিবী থেকে সবচেয়ে দূরে থাকা মহাকাশযানটি তিনটি কম্পিউটার ও নিজস্ব ফ্লাইট ডেটা সিস্টেমের মাধ্যমে পৃথিবীতে তথ্য পাঠাত। কিন্তু টেলিমেট্রি মড্যুলেশন ইউনিট বা টিএমইউতে ত্রুটির কারণে এখন আর কোনো তথ্য পাঠাতে পারছে না মহাকাশযানটি।
নাসার তথ্যমতে, গত ৪৫ বছরের বেশি সময় ধরে ভয়েজার ১ সৌরজগতের রহস্য অন্বেষণ করছে। এরই মধ্যে বৃহস্পতি গ্রহ ঘিরে পাতলা বলয় ও দুটি নতুন চাঁদ আবিষ্কার করেছে মহাকাশযানটি। শুধু তা–ই নয়, শনি গ্রহের পাঁচটি নতুন চাঁদ ও জি-রিং নামে একটি নতুন বলয়েরও সন্ধান দিয়েছে। মহাকাশযানটি বর্তমানে আন্তনাক্ষত্রিক মহাকাশে হেলিওপজের বাইরের অঞ্চলে অবস্থান করছে। বিভিন্ন যন্ত্র পুরোনো হওয়ার পাশাপাশি পৃথিবী থেকে বেশি দূরত্বের কারণে মহাকাশযানটির কারিগরি ত্রুটি সমাধান করা যাচ্ছে না। কারণ, পৃথিবী থেকে মহাকাশযানটিতে কোনো সংকেত পাঠানোর পর সেটি কাজ করছে কি না, তা জানতে প্রায় ৪৫ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়।
সূত্র: লাইভ সায়েন্স