চাঁদের বুকে পারমাণবিক চুল্লি নির্মাণের পরিকল্পনা চীন–রাশিয়ার

চাঁদে পারমাণবিক চুল্লি তৈরিতে একসঙ্গে কাজ করছে চীন ও রাশিয়াছবি: রয়টার্স

দুই মহাশক্তিধর দেশ রাশিয়া ও চীন চাঁদের বুকে পারমাণবিক চুল্লি নির্মাণের জন্য কাজ করছে। ২০৩৫ সালের মধ্যে চাঁদে মানুষবিহীন পারমাণবিক চুল্লি নির্মাণের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে দেশ দুটি। প্রস্তাবিত পারমাণবিক চুল্লি কোনো ধরনের মানব সহায়তা ছাড়াই কাজ করবে।

চাঁদে থাকা রাশিয়া ও চীনের ঘাঁটিতে শক্তি সরবরাহ করতে কাজ করবে পারমণবিক চুল্লি। রাশিয়া ও চীন যৌথভাবে কাজ করবে চুল্লি তৈরির জন্য। ২০২১ সালে রুশ মহাকাশ গবেষণা সংস্থা—রোসকসমস ও চায়না ন্যাশনাল স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন—সিএনএসএ চাঁদে যৌথ অংশীদারত্বের ভিত্তিতে একটি ঘাঁটি তৈরির কথা জানায়। ইন্টারন্যাশনাল লুনার রিসার্চ স্টেশন বা আইএলআরএস নামের সেই কাজে অন্য আগ্রহী দেশের জন্য সুযোগ উন্মুক্ত রাখা হয়। আন্তর্জাতিক অংশীদারত্বের ভিত্তিতে চুল্লি নির্মাণে কাজ করা হচ্ছে।

কয়েক দশক ধরে রুশ-চীনা রাজনৈতিক সম্পর্ক হিমশীতল থাকার কারণে নানা পরিস্থিতি দেখা যায়। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা—নাসার মহাকাশচারীদের নতুন ঘাঁটিতে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার সম্ভাবনা কম বলা যায়। রোসকসমস আর সিএনএসের পারমাণবিক চুল্লি তৈরি তাত্ত্বিকভাবে চাঁদের বুকে তৈরি করা রুশ ও চীনা ঘাঁটিকে বিদ্যুৎশক্তি দিতে সক্ষম হবে।

রোসকসমসের মহাপরিচালক ইউরি বোরিসভ বলেন, ‘আমরা এই প্রকল্প গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছি। ২০৩৩ বা ২০৩৫ সালের মধ্যে কাজ করবে এটি। চীনা সহকর্মীদের সঙ্গে চাঁদের পৃষ্ঠে একটি পাওয়ার ইউনিট সরবরাহ ও স্থাপন করার জন্য কাজ করছি আমরা। এটি নির্মাণের কাজ সম্ভবত অনেক চ্যালেঞ্জিং হবে। মানুষের উপস্থিতি ছাড়াই এই চুল্লি পরিচালিত হবে। এটি চালু ও বন্ধ করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত সব সমাধান আমরা তৈরি করেছি। ঘাঁটি নির্মাণের জন্য চাঁদে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নেওয়ার জন্য বিশেষ পারমাণবিক রকেট ব্যবহার করা হবে।’

অন্যদিকে, যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি একটি কমপ্যাক্ট পারমাণবিক চুল্লির নকশা প্রকাশ করেছেন। এই চুল্লি ভবিষ্যতে নাসার বিভিন্ন অভিযানের জন্য তৈরি করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে চন্দ্রঘাঁটিতে কাজের জন্য চুল্লির ব্যবহার করা হবে। সাধারণ সৌর প্যানেল থেকে পর্যাপ্ত শক্তি উৎপন্ন ও সঞ্চয় করার সুযোগ ও সম্ভাবনা বেশ কম বলে চুল্লি নিয়ে আগ্রহ সবার।

২০২৩ সালে যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানীরা একটি পারমাণবিক চুল্লির নকশা প্রকাশ করেছিলেন। সেই চুল্লি ক্ষুদ্র জ্বালানির ব্যাটারির মাধ্যমে চলতে পারে। এক দশক ধরে রাশিয়া, চীনসহ বড় শক্তির দেশগুলো চাঁদে নিজেদের অবস্থান জানাচ্ছে। পারমাণবিক চুল্লি স্থাপনের জন্য আগামী দুই বছরের মধ্যে চীন দৈত্যাকার পুনর্ব্যবহারযোগ্য রকেট উৎক্ষেপণ শুরু করবে বলে জানিয়েছে।

সূত্র: লাইভ সায়েন্স