পৃথিবীর চারপাশে কমপক্ষে ৬টি ‘মিনিমুন’ থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা
রাতে আকাশের দিকে তাকালে আমরা বিশাল চাঁদের উপস্থিতি দেখি। প্রাকৃতিক এই উপগ্রহ নিয়ে আমাদের জানার অনেক আগ্রহ। এবার বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, শুধু চাঁদই নয়, কমপক্ষে ছয়টি চাঁদের মতো উপগ্রহ পৃথিবীকে ঘিরে আবর্তন করছে। চাঁদসদৃশ এসব বস্তুকে ‘মিনিমুন’ নামে ডাকা হয়। যদিও এই সংখ্যার বিষয়ে নিশ্চিত নন বিজ্ঞানীরা।
মিনিমুন মূলত প্রাকৃতিক বা মহাজাগতিক বস্তু। পৃথিবী-চাঁদ ব্যবস্থায় অস্থায়ীভাবে আবদ্ধ হয়ে এসব বস্তু পৃথিবীর চারপাশে একটি কক্ষপথে ঘুরতে থাকে। পৃথিবীর মহাকর্ষীয় প্রভাব প্রায় ১৫ লাখ কিলোমিটার পর্যন্ত প্রবল। এই সীমার তিন গুণ এলাকার মধ্যে অর্থাৎ পৃথিবী থেকে প্রায় ৪৫ লাখ কিলোমিটারের মধ্যে মিনিমুন অবস্থান করে। আর এই সীমার মধ্যে ছয়টি মিনিমুন থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মিনিমুন মূলত ছোট পাথুরে টুকরা যা সূর্যকে প্রদক্ষিণ করার আগে অস্থায়ীভাবে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে। সৌরজগতের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে উদ্ভূত হয়ে এসব প্রাকৃতিক বস্তু পৃথিবীর আকর্ষণে আটকা পড়েছে। মিনিমুন আমাদের চাঁদের ভগ্নাংশ থেকে উদ্ভূত হতে পারে। আবার গ্রহাণু বেল্ট থেকে আসা বস্তুও পৃথিবীর আকর্ষণে বাঁধা পড়তে পারে। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী রবার্ট জেডিক বলেন, এসব বস্তুর নিয়মিত পরিবর্তন হচ্ছে। এগুলো কখনো কখনো কিছু সময়ের জন্য কক্ষপথ ছেড়ে চলে যায়।
২০১৬ সালে হাওয়াইয়ের প্যান-স্টারআরএস১ গ্রহাণু জরিপ টেলিস্কোপ ১৩১ থেকে ৩২৮ ফুট প্রশস্ত একটি বস্তু শনাক্ত করে। ৪৬৯২১৯ কামো’ওলেওয়া নামে পরিচিত সেই বস্তু পৃথিবীর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করছে। পরে জানা যায়, কামোওলেওয়া ছিল আমাদের চাঁদেরই একটি অংশ, যা ১০ লাখ থেকে ১০ কোটি বছর আগে জিওর্দানো ব্রুনো গর্ত তৈরির সময় ভেঙে দূরে সরে যায়।
ছোট আকার ও উচ্চগতির কারণে মিনিমুন শনাক্ত করা কঠিন। এক ঘণ্টারও কম সময়ে কোনো কোনো মিনিমুন একটি ঘূর্ণন সম্পন্ন করতে পারে। এ বিষয়ে বিজ্ঞানী রবার্ট জেডিক জানান, আধুনিক টেলিস্কোপের মাধ্যমে লাখ লাখ কিলোমিটার দূর থেকে এই জাতীয় ছোট বস্তু শনাক্ত করা যায়। মিনিমুন নিয়ে গবেষণার মাধ্যমে চাঁদের ইতিহাস ও গঠনপ্রক্রিয়া সম্পর্কে জানার সুযোগ আছে।
সূত্র: এনডিটিভি