৬০০ বছর আগে বিলুপ্ত মোয়া পাখিকে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ

বিলুপ্ত মোয়া পাখির জীবাশ্মউইকিমিডিয়া

‘জুরাসিক পার্ক’ সিনেমায় কৃত্রিমভাবে তৈরি ডিমের মাধ্যমে শত শত বছর পর পৃথিবীতে ফিরে এসেছিল ডাইনোসর। সিনেমার সেই কল্পকাহিনির আদলে একইভাবে প্রায় ৬০০ বছর আগে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া বিশালাকার পাখি মোয়াকে আবার প্রকৃতিতে ফিরিয়ে আনার এক উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বায়োটেকনোলজি প্রতিষ্ঠান কলোসাল বায়োসায়েন্সেসের বিজ্ঞানীরা। এর আগে ডায়ার উলফ বা প্রাগৈতিহাসিক নেকড়ে ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু করে আলোচনায় এসেছিল প্রতিষ্ঠানটি।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, মোয়া ছিল নিউজিল্যান্ডের একটি উড়তে না পারা বিশালাকার পাখি। এদের উচ্চতা ছিল প্রায় ১২ ফুট আর ওজন হতো ৫০০ পাউন্ডের বেশি। প্রায় ৬০০ বছর আগে নিউজিল্যান্ডে মাওরি বসতি স্থাপনের পর অতিরিক্ত শিকারের ফলে বিশাল আকারের পাখিটি বিলুপ্ত হয়ে যায়।

মোয়া পাখি ফিরিয়ে আনার এই প্রকল্পে কলোসাল বায়োসায়েন্সেসের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন ‘লর্ড অব দ্য রিংস’খ্যাত কিংবদন্তি পরিচালক স্যার পিটার জ্যাকসন। এ প্রকল্পের অন্যতম বিনিয়োগকারীও তিনি।

পিটার জ্যাকসনের উদ্যোগে নিউজিল্যান্ডের নাই টাহু রিসার্চ সেন্টার এ প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। তারা মাওরি সম্প্রদায় ও নিউজিল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব ক্যান্টারবেরির সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে। বিজ্ঞানীদের মতে, ডায়ার উলফ ফিরিয়ে আনার চেয়ে মোয়াকে ফিরিয়ে আনা অনেক বেশি জটিল। ডায়ার উলফের ক্ষেত্রে ধূসর নেকড়ের ডিএনএ ব্যবহার করা সম্ভব। কিন্তু মোয়ার ক্ষেত্রে তাদের নিকটতম জীবিত আত্মীয় বা টিনামু পাখির বিবর্তনের দূরত্ব কয়েক কোটি বছরের।

নতুন এ পরিকল্পনার আওতায় বিজ্ঞানীরা কোনো জীবিত পাখির ভ্রূণে জেনেটিক্যালি পরিবর্তিত মোয়ার কোষ স্থাপন করতে চান। এই কোষগুলো যখন ভ্রূণের জনন অঙ্গে পৌঁছাবে, তখন তাত্ত্বিকভাবে সেই পাখি মোয়ার ডিম ও শুক্রাণু তৈরি করতে সক্ষম হবে। পরবর্তী সময় সেই ডিম থেকে মোয়ার ছানা জন্ম নিতে পারে। বর্তমানে বিজ্ঞানীরা সারোগেট হিসেবে ইমু পাখিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। এদের উচ্চতা ৬ ফুট ২ ইঞ্চির মতো হয়, যা টিনামুর চেয়ে মোয়ার কাছাকাছি। তবে বড় চ্যালেঞ্জ হলো মোয়ার ডিমের আকার ইমোর ডিমের চেয়ে অনেক বড়। ফলে ইমু পাখির ডিমে হাইব্রিড ভ্রূণটি সঠিকভাবে বেড়ে উঠবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।

সূত্র: এনডিটিভি