বার্ধক্য থামানোর ঔষধ কাজ করছে ইঁদুরের ওপর

ইঁদুরের ওপর গবেষণার ফলাফল মানুষের মধ্যে বার্ধক্যবিরোধী থেরাপি তৈরির সম্ভাবনা তৈরি করছেম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফর বায়োলজি অব এজিং

বিজ্ঞানীরা ইঁদুরের আয়ুষ্কাল ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করছে, এমন ওষুধের কার্যকারিতা পরীক্ষায় সাফল্য পেয়েছে। রাপামাইসিন ও ট্রামেটিনিব নামের ওষুধ একত্র করে ব্যবহারের কারণে ইঁদুরের আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি পেতে দেখা যায়। ইঁদুরের ওপরে ওষুধের প্রভাবের পরীক্ষা মানুষের জন্য বার্ধক্যবিরোধী থেরাপি তৈরির জন্য ব্যবহারের নতুন সুযোগ তৈরি করতে পারে ভবিষ্যতে।

জার্মানির ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফর বায়োলজি অব এজিংয়ের বিজ্ঞানীরা যুগান্তকারী এ গবেষণা পরিচালনা করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের এফডিএ অনুমোদিত ওষুধ রাপামাইসিন ও ট্রামেটিনিব ইঁদুরের আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি করতে পারে। শুধু আয়ু দীর্ঘায়িত করা নয়, এসব ঔষধ ইঁদুরের স্বাস্থ্য উন্নত করছে বলে জানা গেছে। এই ওষুধ শরীরের বিভিন্ন প্রদাহ হ্রাস, টিউমারের গতি স্থির করাসহ উন্নত শারীরিক কার্যকারিতা বৃদ্ধি করছে বলে ল্যাবের পর্যবেক্ষণে দেখা যায়।

রাপামাইসিন ওষুধ সাধারণত বিভিন্ন অঙ্গ সাড়া না দিলে ব্যবহার করা হয়। ক্যানসারের চিকিৎসায় ট্রামেটিনিব ব্যবহার করা হয়। এসব ওষুধ সম্মিলিতভাবে প্রভাব তৈরি করছে। আলাদাভাবে রাপামাইসিন একাই ১৭-১৮ শতাংশ কার্যকর বলে জানা গেছে। অন্যদিকে ট্রামেটিনিব ৭-১৬ শতাংশ কার্যকর বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে। এগুলোর সংমিশ্রণ উল্লেখযোগ্যভাবে ২৬-৩৫ শতাংশ বৃদ্ধিতে প্রভাব রাখছে।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, রাপামাইসিন ও ট্রামেটিনিব একইভাবে কাজ করে। বিভিন্ন টিস্যুতে জিনের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ওষুধের সংমিশ্রণ জিনের কার্যকলাপকে পৃথকভাবে ওষুধ পরিচালনার চেয়ে ভিন্নভাবে প্রভাবিত করে। জিনের কার্যকলাপে নির্দিষ্ট পরিবর্তন দেখা যায়। গবেষকেরা অবাঞ্ছিত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কমিয়ে মানবশরীরে ট্রামেটিনিবের ডোজ ব্যবহার করার পরিকল্পনা করছেন। ট্রামেটিনিব ইতিমধ্যেই মানুষের ব্যবহারের জন্য অনুমোদিত।

বিজ্ঞানী সেবাস্টিয়ান গ্রোনক বলেন, ‘ট্র্যামেটিনিবের সঙ্গে রাপামাইসিনের সংমিশ্রণে একটি জেরোপ্রোটেক্টর হিসেবে ক্লিনিকাল ট্রায়ালে পরীক্ষা করা যেতে পারে। আমরা আশা করি, আমাদের ফলাফল অন্যরা গ্রহণ করবে এবং মানুষের মধ্যে পরীক্ষা করবে।’

আরেক বিজ্ঞানী অধ্যাপক ডেম লিন্ডা পার্ট্রিজ বলেন, ‘যদিও আমরা ইঁদুরের মতো মানুষের আয়ুষ্কাল বৃদ্ধির আশা করছি না। আমরা আশা করি, এসব ওষুধ মানুষকে দীর্ঘ সময়ের জন্য সুস্থ ও রোগমুক্ত থাকতে সাহায্য করতে পারে। আগামী বছর মানুষের ওপর আরও গবেষণার মাধ্যমে এসব ঔষধ কীভাবে মানুষের জন্য কার্যকর হতে পারে, তা জানা যেতে পারে।

ইঁদুরের ওপর গবেষণার ফলাফল মানুষের মধ্যে বার্ধক্যবিরোধী থেরাপি তৈরির সম্ভাবনা তৈরি করছে বলে বিজ্ঞানীরা মনে করেন।

সূত্র: এনডিটিভি