ভাইরাস কি সত্যিই দুশ্চিন্তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে

ভাইরাসের প্রতীকী ছবিরয়টার্স

ভাইরাস কথাটি শুনলেই কমবেশি আতঙ্কিত হন সবাই। বিশেষ করে, করোনা মহামারির পর থেকে নতুন ভাইরাসের নাম শুনলেই মনের কোণে জেগে ওঠে অজানা শঙ্কা। তবে জীববিজ্ঞানীদের মতে, সব ভাইরাস কিন্তু খারাপ নয়। নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষের পেটে (অন্ত্রে) থাকা কিছু ভাইরাস মস্তিষ্কের কার্যকারিতা ও আচরণকে প্রভাবিত করতে পারে। গবেষকেরা বলছেন, অন্ত্রে বসবাসকারী কিছু ভাইরাস মানুষের মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। অন্ত্রে বাস করলেও এসব ভাইরাস মস্তিষ্কের কার্যকারিতায় ভূমিকা রাখে, ফলে মানুষের আচরণও প্রভাবিত হয়। ফলে দুশ্চিন্তা করার সময় আমরা যে মানসিক চাপ অনুভব করি, তা কাটাতে এই ভাইরাসের ভূমিকা রয়েছে। নতুন এই গবেষণা মানসিক চাপসম্পর্কিত রোগের চিকিৎসায় ভূমিকা রাখতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি কলেজ কর্কের এপিসি মাইক্রোবায়োম আয়ারল্যান্ড গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানী নাথানিয়েল রিটজ বলেন, ‘বিভিন্ন জীবাণুর সমন্বয়ে ভাইরোম গঠিত হয়। ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া করে কীভাবে এসব জীবাণু মানসিক চাপসম্পর্কিত স্বাস্থ্য ও রোগের অবস্থাকে প্রভাবিত করে, তা এখনো অনাবিষ্কৃত। মানসিক চাপের প্রভাব ও চিকিৎসায় ভাইরোমের কার্যকারিতা জানতে কাজ করছি আমরা।’

এপিসি মাইক্রোবায়োম আয়ারল্যান্ডের বিজ্ঞানী জন ক্রিয়ান বলেন, ‘ব্যক্তিভেদে ভাইরোমের গঠনে পরিবর্তন হয়ে থাকে। ভবিষ্যতে মানসিক চাপসম্পর্কিত রোগের কার্যকর ওষুধ তৈরিতে এ গবেষণা নতুন ধারণা দিচ্ছে। গত কয়েক বছরে উদ্বেগ আর বিষণ্নতাগ্রস্ত ব্যক্তির সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।’

নেচার মাইক্রোবায়োলজিতে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, সাধারণভাবে কোনো ভাইরাসের দল ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে আক্রান্ত হলে তাকে ব্যাকটেরিওফেজ বলা হয়। অন্ত্রে থাকা ভাইরাসের একটি ধরন নিয়ে গবেষণা চালিয়ে দেখা গেছে, ভাইরাসটি ব্যাকটেরিয়াকে সংক্রামিত করে প্রতিলিপি তৈরি করতে পারে। গবেষকেরা প্রাথমিকভাবে ইঁদুরের অন্ত্রে থাকা একটি ভাইরাস নিয়ে গবেষণা করেন। ইঁদুর কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হলে ভাইরাসটির গঠনে কী কী পরিবর্তন হয়, তা পর্যবেক্ষণ করেন তাঁরা। ভাইরাসটি মানসিক চাপের হরমোনের মাত্রা কমাতে সক্ষম। মানুষের অন্ত্রে থাকা ভাইরাসও এমন আচরণ করতে পারে।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান