মানসিক চাপ মাপতে আসছে ই–ট্যাটু

ই–ট্যাটু মানসিক চাপ মাপবেছবি: ডিভাইস

তারহীন ই–ট্যাটু ব্যবহারের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা মানসিক চাপ পর্যবেক্ষণ করতে চান। ই–ট্যাটু ব্যবহার করে মস্তিষ্কের তরঙ্গের তথ্য ডিকোড করতে আগ্রহী বিজ্ঞানীরা। নতুন এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা মানসিক কাজের চাপের পর্যবেক্ষণ করতে চান। বিমান ট্রাফিক কন্ট্রোলার বা ট্রাক ড্রাইভারদের মতো কর্মীদের স্বাস্থ্যের জন্য ই–ট্যাটু উপকারে আসতে পারে।

গবেষকেরা একটি অস্থায়ী ট্যাটু তৈরি করেছেন, যা মস্তিষ্কের তরঙ্গ ডিকোড করে মানসিক চাপ পরিমাপ করতে পারে। সাধারণভাবে বিভিন্ন ভারী হেডগিয়ার ব্যবহারের বদলে ই–ট্যাটু একটি হালকা ও তারহীন বিকল্প। ডিভাইস নামের এক বিজ্ঞান সাময়িকীতে অস্থায়ী ওয়্যারলেস ই–ট্যাটু নিয়ে গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে।

ভারী হেডগিয়ার ছাড়াই মানসিক চাপ পরিমাপ করার জন্য এই ট্যাটু মস্তিষ্কের তরঙ্গ ডিকোড করতে পারে। বিজ্ঞানী নানশু লু বলেন, ‘মানুষের বিবর্তনের চেয়ে প্রযুক্তি দ্রুত বিকশিত হচ্ছে। আমাদের মস্তিষ্ক আসলে প্রযুক্তির ক্ষমতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারে না। সহজেই যেন সব অতিরিক্ত বোঝা হয়ে যাচ্ছে। ভালো কর্মক্ষমতার জন্য কাজের চাপ গুরুত্বপূর্ণ। এই মানসিক চাপ ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হয়। মানুষের মস্তিষ্কের তথ্য জানতে ই–ট্যাটু ইলেকট্রোএনসেফালোগ্রাফি (ইইজি) ও ইলেকট্রোকুলোগ্রাফি (ইওজি) নামে পরিচিত প্রক্রিয়া ব্যবহার করে। মস্তিষ্ক ও চোখের নড়াচড়া থেকে বৈদ্যুতিক কার্যকলাপ বিশ্লেষণ করে তথ্য দিতে পারে। ওয়্যারলেস ই–ট্যাটুতে একটি হালকা ব্যাটারি প্যাক ও কাগজের মতো পাতলা স্টিকারসদৃশ সেন্সর থাকে। এই সেন্সরে লুপ ও কয়েল থাকে। ত্বকের সঙ্গে নির্বিঘ্নে কাজ করতে পারে এই ট্যাটু। মস্তিষ্কের বিভিন্ন অঞ্চলের তথ্যের জন্য বিভিন্ন সেন্সর রয়েছে। অংশগ্রহণকারীদের মুখের বৈশিষ্ট্য পরিমাপ করে ই–ট্যাটু তৈরি করা হচ্ছে।’

গবেষকেরা এরই মধ্যে ছয়জন অংশগ্রহণকারীর ওপর ই–ট্যাটু পরীক্ষা করেছেন। গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, মানসিক চাপ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে অংশগ্রহণকারীদের থিটা ও ডেল্টা ব্রেনওয়েভে উচ্চ কার্যকলাপ দেখা যায়। অন্যদিকে আলফা ও বিটা ওয়েভের কার্যকলাপ হ্রাস পাচ্ছে, যা কিনা মানসিক ক্লান্তি নির্দেশ করে। ই–ট্যাটু এসব তথ্য দিতে পারছে। গবেষকেরা ই–ট্যাটু থেকে পাওয়া সংকেতের ওপর ভিত্তি করে কাজের মানসিক চাপ অনুমান করতে পারছেন। এরই মধ্যে একটি কম্পিউটার মডেলকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এই মডেল ই–ট্যাটুর তথ্য বিশ্লেষণ করে মানসিক ক্লান্তির পূর্বাভাস দিতে পারে।

সূত্র: এনডিটিভি