মহাকাশে ঘটতে যাচ্ছে নোভা বিস্ফোরণ
বিশাল মহাকাশজুড়ে নানা ধরনের মহাজাগতিক ঘটনা ঘটে থাকে। কিছু ঘটনা স্বাভাবিক, প্রায় সব সময় দেখা যায়। আবার কিছু ঘটনা অনেক বছর পরপর দেখা যায়। কখনো আবার ঘটনাগুলো কয়েক শতকের মধ্যে একবারই চোখে পড়ে। এমনই এক মহাজাগতিক ঘটনা দেখার অপেক্ষায় রয়েছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। তাঁদের দাবি, মহাকাশে নোভা বিস্ফোরণ দেখা যাবে শিগগিরই। এই বিস্ফোরণের ফলে রাতের আকাশে এক তারার আবির্ভাব ঘটবে। তারা গঠনের বিরল প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণের জন্য অপেক্ষা করছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।
নোভা বিস্ফোরণ দেখার জন্য জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা পৃথিবী থেকে তিন হাজার আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত টি করোনাই বোরেয়ালিস নক্ষত্রকে অনুসরণ করছেন। টি করোনাই বোরেয়ালিস নামের মৃত নক্ষত্রটিতেই শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটবে। বিস্ফোরণের পরে তা পুনরুজ্জীবিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সেই বিস্ফোরণের কারণে উত্তর নক্ষত্র পোলারিসের সমান উজ্জ্বলতার আলো তৈরি হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ার ভিলানোভা বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানী এডওয়ার্ড সিওন বলেন, নক্ষত্রটি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, এটা খুবই স্পষ্ট। অসাধারণ এ ঘটনাকে বিরল বলছেন বিজ্ঞানীরা। আর তাই নোভা বিস্ফোরণের সম্ভাব্য সব তথ্য বিস্তারিতভাবে জানতে চান তাঁরা। মহাকাশভিত্তিক সব টেলিস্কোপের নজর এখন এই বিস্ফোরণের দিকে। এ মাসেই দেখা যাবে এই বিস্ফোরণ।
সাদা বামন টি করোনাই বোরেয়ালিস মিল্কিওয়ে ছায়াপথের ১০টি নোভার অন্তর্গত। এই বিস্ফোরণের মাধ্যমে নাক্ষত্রিক বস্তুর ধ্বংসাবশেষ কেমন হয়, তা বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন বিজ্ঞানীরা। টি করোনাই বোরেয়ালিস নক্ষত্রটির ওপরে নজর রাখছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার ফার্মি গামা-রে স্পেস টেলিস্কোপ। নাসার তথ্যমতে, কয়েক ঘণ্টা পরপর নোভায় অগ্ন্যুৎপাত দেখা যাচ্ছে। তখন নোভার উজ্জ্বলতা বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি গামা রশ্মি ছড়িয়ে পড়ছে। এখন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বিস্ফোরণের পরের মুহূর্ত সম্পর্কে তথ্য জানতে অপেক্ষা করছেন। কীভাবে শকওয়েভ মহাকাশে ছড়িয়ে পড়ছে, তা জানতে চান তাঁরা।
ফার্মি টেলিস্কোপ ছাড়াও জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ, সুইফট ও ইন্টিগ্রাল স্পেস টেলিস্কোপ আর নিউ মেক্সিকোর ভেরি লার্জ অ্যারে টেলিস্কোপ দিয়েও টি করোনাই বোরেয়ালিস নক্ষত্রের ওপর নজর রাখা হচ্ছে। তবে এ নোভা বিস্ফোরণের প্রভাব পৃথিবীতে পড়বে না। এ বিষয়ে জ্যোতির্বিজ্ঞানী এডওয়ার্ড সিওন জানিয়েছেন, বিস্ফোরণটি মারাত্মক হলেও পৃথিবী থেকে যথেষ্ট দূরে হবে। আমাদের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না।
সূত্র: লাইভ সায়েন্স