প্রযুক্তির এই দিনে: ২৫ জুলাই
মুঠোফোনে কেনাবেচার প্রথম বাজার সেলবাজার চালু
বাংলাদেশে মুঠোফোনে কেনাবেচার প্রথম বাজার সেলবাজার চালু। বিনা মূল্যে নিবন্ধন করে ৩৮৩৮ নম্বরে এসএমএস পাঠিয়ে ধাপে ধাপে পণ্যের তথ্য জানাতে ও জানতে পারতেন ক্রেতা–বিক্রেতা। যার যে পণ্য প্রয়োজন ধাপে ধাপে সেই পণ্যের বিক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগ হতো।
২৫ জুলাই ২০০৬
মুঠোফোনে কেনাবেচার প্রথম বাজার সেলবাজার চালু
‘বাজার তো পকেটেই’ স্লোগান নিয়ে চালু হয় সেলবাজার। সাধারণ মুঠোফোন অর্থাৎ সেলফোনের খুদে বার্তা (এসএমএস) ব্যবহার করে পণ্য বেচাকেনার অভিনব এক সুবিধা ছিল এটি। যে কেউ যেকোনো কিছু বিক্রি করতে বা কিনতে পারতেন সেলবাজারে। বিনা মূল্যে নিবন্ধন করে ৩৮৩৮ নম্বরে এসএমএস পাঠিয়ে ধাপে ধাপে পণ্যের তথ্য জানাতে ও জানতে পারতেন ক্রেতা–বিক্রেতা। যার যে পণ্য প্রয়োজন ধাপে ধাপে সেই পণ্যের বিক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগ হতো। এরপর তাঁরা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে পণ্য কেনাবেচা করতে পারতেন। সেলবাজারে সরাসরি কোনো আর্থিক লেনদেন হতো না।
২০০৬ সালের ২৫ জুলাই শুধু গ্রামীণফোনের গ্রাহকদের জন্য চালু হয় সেলবাজার। সেলবাজারের প্রতিষ্ঠাতা এবং বর্তমানে জনপ্রিয় মোবাইল আর্থিক লেনদেন সেবা বিকাশের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল কাদীর প্রথম আলোকে বলেন, ‘মূলত পর্যবেক্ষণ ছিল, সাধারণ মোবাইল ফোন অর্থাৎ টুল অনেকের হাতে আছে কিন্তু কোনো প্ল্যাটফরম নেই। ক্রেতা বা বিক্রেতা পণ্যের তথ্য তুলে ধরবে এর কোনো জায়গা নেই। সেই জায়গা বা মার্কেটপ্লেসই হলো সেলবাজার।’
কামাল কাদীর যখন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) ছাত্র, তখন একটি ব্যবসায় ধারণার প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। তাঁর সেই ধারণা প্রতিযোগিতায় নির্বাচিত হয়। পরে দেশে এসে ওই ধারণার প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেন সেলবাজার নামে।
সেলবাজারে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে প্রকাশিত শ্রেণিবদ্ধ (ক্লাসিফায়েড) বিজ্ঞাপনগুলোর তথ্যও থাকত। সেলবাজারের প্রতীক ছিল একটি হলুদ সূর্যমুখী ফুল, দুই পাশে লাল ও সবুজে লেখা সেলবাজার। সেই সময়ে ঢাকা শহরসহ সারা দেশের অসংখ্য গাড়িতে সেলবাজারের এই প্রতীকসহ ছোট স্টিকার দেখা গেছে। প্রচারণার এই কৌশল বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখে, সেলবাজার নামটি দ্রুত জনপ্রিয়তা পায়। চার বছরে সেলবাজারে নিবন্ধিত ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৪৫ লাখ।
২০০৮ সালে স্পেনের মোবাইল ফোনের সবচেয়ে বড় আয়োজন মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসে ‘থ্রিজিএসএমএ গ্লোবাল মোবাইল অ্যাওয়ার্ড ২০০৮’ পায় সেলবাজার। সামাজিক ও আর্থিক উন্নয়নে মোবাইলের সেরা ব্যবহার—এই শ্রেণিতে সেলবাজার এই পুরস্কার পায়। ২০১০ সালে নরওয়েভিত্তিক টেলিযোগাযোগ সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান টেলিনর (গ্রামীণফোনের মূল প্রতিষ্ঠান) সেলবাজার অধিগ্রহণ করে।
২৫ জুলাই ১৯১১
কাগজ ছিদ্র করার যন্ত্রে আইবিএমের প্রথম পেটেন্ট
বিশ্বখ্যাত কম্পিউটার নির্মাতা ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস মেশিনস (আইবিএম) করপোরেশন যুক্তরাষ্ট্রের পেটেন্ট কার্যালয় থেকে প্রথম পেটেন্টটি (#৯৯৮৬৩১) পায়। ১৯০৭ সালের ১১ অক্টোবর ‘পারফোরেটিং মেশিন’–এর পেটেন্ট স্বত্বের জন্য আবেদন করেছিল আইবিএম। সেই সময়ে যন্ত্রে হিসাব কষার জন্য পাঞ্চকার্ড ছিল অত্যাবশ৵কীয়। অর্থাৎ কাগজে ছিদ্র করে করে প্রোগ্রামাররা যান্ত্রিক কম্পিউটারের জন্য প্রোগ্রাম তৈরি করতেন। কাগজ ছিদ্র করার জন্য এই যন্ত্র ছিল কার্যকর এক উদ্ভাবন। এটি এমন এক উদ্ভাবন, যার ওপর ভিত্তি করে কম্পিউটার দুনিয়ায় অনেক উদ্ভাবন হয়েছে।
কম্পিউটার প্রযুক্তির উদ্ভাবনী ক্ষেত্রে আইবিএম অন্যতম শীর্ষ পেটেন্টধারী প্রতিষ্ঠান। এখন পর্যন্ত আইবিএমের ঝুলিতে দেড় লাখের বেশি পেটেন্ট রয়েছে। শুধু ২০১০ সালেই আইবিএম ৫ হাজার ৮৯৬টি পেটেন্ট পেয়েছে।
২৫ জুলাই ১৯৯০
মাইক্রোসফটের রাজস্ব আয় ১০০ কোটি ডলার ছাড়াল
শীর্ষস্থানীয় সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফট করপোরেশনের বার্ষিক রাজস্ব আয় প্রথমবারের মতো ১০০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি হয় ১৯৮৯-৯০ অর্থবছরে। কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানের প্রবৃদ্ধি এখানেই থেমে থাকেনি। ১৯৭৫ সালে বিল গেটস ও পল অ্যালেনের প্রতিষ্ঠা করা মাইক্রোসফট শুরু থেকেই পৃথিবীর কম্পিউটার শিল্পে আধিপত্য বিস্তার করে চলেছে।
২৫ জুলাই ২০১৪
এল অ্যামাজনের ফায়ার ফোন
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ই–কমার্স প্রতিষ্ঠান অ্যামাজন ত্রিমাত্রিক (থ্রিডি) গ্রাফিকস, ছবি ও ভিডিও দেখা যায় ও তৈরি করা যায় এমন স্মার্টফোন বাজারে নিয়ে আসে। অ্যামাজন ফায়ার ফোন নামের এই স্মার্টফোনের ধারণা ও নকশার উন্নয়ন করেছে অ্যামাজন এবং ফোনটি উৎপাদন করেছে ফক্সকন। ২০১৪ সালের ১৮ জুন প্রথম এর ঘোষণা দেয় অ্যামাজন। এটিঅ্যান্ডটির সংযোগসহ প্রথম বাজারে ছাড়া হয় ২৫ জুলাই থেকে। এরপর জার্মানি ও যুক্তরাজ্যে ফায়ার ফোন ছাড়া হয়।
এই স্মার্টফোন ডায়নামিক পারস্পেকটিভ সুবিধার জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। ফায়ার ফোনের চারটি ফ্রন্ট ক্যামেরা ও জায়রোস্কোপ ব্যবহারকারীর নড়াচড়া অনুসরণ করতে পারত। ফায়ারের অপারেটিং সিস্টেম সেই ছবি ধরে একটা থ্রিডি আবহ তৈরি করত। এই ফোনে অ্যামাজন এক্স–রে ছবির তথ্য পাওয়ার সুবিধা দিয়েছিল। এই ফোনে থাকা ফায়ারফ্লাই সুবিধা স্বয়ংক্রিয়ভাবে লেখা, শব্দ ও বস্তু শণাক্ত করে অ্যামাজন ডটকমে থাকা সম্ভাব্য পণ্যের তালিকা ব্যবহারকারীকে দেখাত।
তবে ফায়ারফোন বাজার মাত করতে পারেনি। অ্যামাজন এক বছর পর ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে ফায়ারফোনের উৎপাদন বন্ধ ঘোষণা করে।
সূত্র: রয়টার্স, কম্পিউটার হিস্ট্রি ডটওআরজি, কম্পিউটার হোপ