‘মন খারাপের বাজেট’ কেন বলছেন তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসা খাতের নেতারা

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ (ডান থেকে দ্বিতীয়)সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও ২০২৪-২৫ সালের প্রস্তাবিত বাজেটে ইন্টারনেট সংযোগদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে তথ্যপ্রযুক্তি সেবা (আইটিইএস) খাতের অন্তর্ভুক্তি করা হয়নি। এ ছাড়া ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবায় ১০ শতাংশ অগ্রিম আয়কর, অপটিক্যাল নেটওয়ার্ক ইউনিট (ওএনইউ) ও অপটিক্যাল লাইন টার্মিনালের (ওএলটি) ওপর ৩৭ শতাংশ ভ্যাট ও শুল্কারোপ করা হয়েছে। পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ব্যবহৃত সব পণ্যের ওপর শুল্ক না কমায় দেশে ইন্টারনেট সেবার প্রসার ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার বিষয়টি বাধাগ্রস্ত হবে। এ কারণে প্রতিবছরের মতো এবারও আমাদের মন খারাপ হয়েছে। আমাদের জন্য এটা মন খারাপের বাজেট বলে জানিয়েছেন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি মো. ইমদাদুল হক। আজ রবিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার বেসিস মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন এসব কথা বলেন তিনি।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস), বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস), ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন (আইএসপিএবি), বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কন্টাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্কো) এবং ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) যৌথভাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। তবে বিসিএসের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিনিধি সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন না।

বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কর অব্যাহতির মেয়াদ তিন বছর বৃদ্ধি করায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। এই কর অব্যাহতি তথ্যপ্রযুক্তি খাতের পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, কৃষি, ব্যাংকিং ব্যবস্থা, রপ্তানিমুখী উৎপাদন শিল্পসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে। বর্তমানে দেশের ক্লাউড সার্ভিস এবং ওয়েব হোস্টিং ব্যবসার মাত্র ১০ শতাংশ দেশীয় উদ্যোক্তাদের দখলে রয়েছে। তাই নতুন করে এ খাতকে করের আওতায় আনা হলে তা দেশীয় উদ্যোক্তাদের নিরুৎসাহিত করবে। পাশাপাশি হাই-টেক পার্কের বিনিয়োগকারীরা শুল্কমুক্ত সুবিধা হারিয়ে মূলধনি যন্ত্রপাতির ওপর এক শতাংশ আমদানি শুল্কের মুখোমুখি হতে পারেন। এটি পুনর্বিবেচনা করে হাই-টেক পার্কের বিনিয়োগকারীদের জন্য বর্তমান শুল্কমুক্ত সুবিধা বহাল রাখতে হবে।

আরও পড়ুন

বাক্কো সভাপতি ওয়াহিদ শরীফ বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কর অব্যাহতি নিঃসন্দেহে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, নতুন উদ্ভাবন এবং নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে সরাসরি অবদান রাখবে। এ ছাড়া দেশের শিক্ষাব্যবস্থা, স্বাস্থ্যসেবা, ব্যাংকিং ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন রপ্তানিমুখী শিল্পেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তবে এবারের বাজেটে ক্লাউড সার্ভিস, আইটি প্রোসেস আউটসোর্সিং, মেডিকেল ট্রান্সক্রিপশন, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন, সিস্টেম ইন্টিগ্রেশন এবং এনটিটিএন সেবার মতো খাতগুলো থেকে কর অব্যাহতি প্রত্যাহার করা হয়েছে। ফলে একটি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে । অন্যদিকে মোবাইলের সিম কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে প্রদত্ত সেবায় সম্পূরক শুল্ক ৫ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব করায় মোবাইল ইন্টারনেটের ব্যয় বাড়বে।

আরও পড়ুন

ই-ক্যাবের সহসভাপতি সৈয়দা আম্বারীন রেজা বলেন, ডিজিটাল পেমেন্টকে উৎসাহিত করতে এই খাতে পেমেন্ট চার্জে ন্যূনতম দুই শতাংশ আর্থিক প্রণোদনা দিতে হবে। এ ছাড়া শিক্ষা ও চিকিৎসা খাতে ক্যাশলেস লেনদেনের ওপর বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে।

আরও পড়ুন