বিপিও খাতে নারীদের সুযোগ বাড়ানোর আহ্বান জানালেন স্পিকার শিরীন শারমিন

বিপিও সামিটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীপ্রথম আলো

‘বিপিও খাতে নারীদের সুযোগ করে দিতে হবে। কারণ, কাজটি যেকোনো জায়গা থেকে করার সুযোগ রয়েছে। নারীরা ঘরে বসেও বিপিওর কাজ করতে পারবেন। তাই নারীদের এ খাতে ভালো করার সুযোগ রয়েছে।’ বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী আজ শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘পঞ্চম বিপিও সামিট বাংলাদেশ ২০২৩’-এর উদ্বোধনের সময় এসব কথা বলেন।

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দেশের সীমানা পেরিয়ে বৈশ্বিক পর্যায়ে বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিংয়ে (বিপিও) সর্বোত্তম প্রযুক্তি সেবা দেওয়ার প্রত্যয় নিয়ে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে শুরু হয়েছে এই সম্মেলন। বিপিও খাতের নতুন বাজার খুঁজে বের করার অঙ্গীকারও ব্যক্ত করা হয়েছে সম্মেলনের শুরুতে।

শিরীন শারমিন চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে বলেন, প্রযুক্তি খাতকে এগিয়ে নিতে বিপিও খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ৩০০ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রায় ৭০ হাজার মানুষ এই খাতে কাজ করছেন। সাধারণ মানুষকে জানাতে হবে, কীভাবে বিপিও খাতের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ আর্থিক ভাবে লাভবান হতে পারেন। এই খাতে কাজ করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করার সুযোগ রয়েছে।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই এখন বিশ্বব্যাপী আলোচিত বিষয়, এটাই বাস্তবতা—জানিয়ে শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘এআই নানাভাবে আমাদের জীবনকে প্রভাবিত করবে, তবে এআইয়ের পেছনে মানুষের অবদান রয়েছে, তাই মানুষের গুরুত্ব কখনোই কমবে না।’

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ বলেন, ‘বিপিও খাত গড়ে তোলার জন্য সবার আগে দরকার ইন্টারনেট। আমরা সারা দেশে ইন্টারনেট পৌঁছে দিয়েছি। প্রতিটি ঘরে বর্তমান সরকার বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে। বিপিও খাতে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে গুরুত্বপূর্ণ একটি দেশ। সারা দেশে ৭ হাজার তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ২০ লাখ তরুণের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে সরকার।’
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সরকার ২০২৫ সালের মধ্যে এক লাখ তরুণকে প্রশিক্ষণ দেবে। তরুণদের দক্ষ করে তোলার মাধ্যমে ২০২৫ সালের মধ্যে আমরা ১০০ কোটি ডলার আয় করতে চাই। আগামী ছয় মাসের মধ্যে ১ লাখ ৯ হাজার উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযোগ সারা দেশে পৌঁছে দিতে পারব।’

বিপিও সামিটের আয়োজক বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনটাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং বাক্কোর সভাপতি ওয়াহিদ শরীফ বলেন, ‘সারাদেশে বিপিও খাতের সুফল ছড়িয়ে দিতে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে আমরা তরুণ–তরুনীদের বিপিও খাত সম্পর্কে ধারণা দিতে চাই। আর তাই সম্মেলনে বিপিও খাত নিয়ে নয়টি সেমিনার আয়োজন করা হয়েছে।’

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, আইসিটি সচিব সামসুল আরেফিন, আইসিটি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মোস্তফা কামাল ও বাক্কোর সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ হোসেন বক্তৃতা করেন।

দুই দিনের এই সম্মলেনের প্রস্তুতি হিসেবে এরই মধ্যে দেশের আট বিভাগে অনুষ্ঠিত হয়েছে বিভাগীয় বিপিও সামিট। সম্মেলনে বর্ষসেরা বিপিও ব্যক্তিত্ব হিসেবে ডেটা এন্ট্রি অপারেটর নাজমুল হক মোল্যাকে পুরস্কৃত করা হয়। প্রতিষ্ঠান শ্রেণিতে ইগনাইট, সার্ভিস ইঞ্জিন লিমিটেড ও জেনেক্স ইনফোসিস পুরস্কার পেয়েছে।

সম্মেলনে ১৫ প্রতিষ্ঠান বিপিও খাতের প্রযুক্তি ও কাজের পদ্ধতি প্রদর্শন করছে। আগ্রহী চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে জীবনবৃত্তান্তও সংগ্রহ করছে প্রতিষ্ঠানগুলো। নিবন্ধন করে যে কোনো ব্যক্তি বিনা মূল্যে সম্মেলনে অংশ নিতে পারবেন।