অনলাইন সার্চে শীর্ষ স্থান পেতে এসইও

এসইও হচ্ছে সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশনের সংক্ষিপ্ত রূপ। এটি এমন এক ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে কোনো ওয়েবসাইট বা ওয়েবপেজকে সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহারকারীদের সার্চ বা অনুসন্ধানে প্রথম পাতার শীর্ষ স্থানে দেখানোর চেষ্টা করা হয়।

এসইও কোনো একক কাজ নয়। এটি আসলে সার্চ ইঞ্জিনের অ্যালগরিদম মেনে একাধিক কাজের একটি সমন্বিত পদ্ধতি। ওয়েবসাইটে ট্রাফিক বা ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধিতে এসইওর গুরুত্ব অপরিসীম। বিভিন্ন ই-কমার্স ব্যবসা, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, সিপিএ মার্কেটিংসহ অনলাইন–ভিত্তিক নানা কাজের সফলতা নির্ভর করে এসইও–ব্যবস্থার ওপর। বিনা মূল্যে এসইও করাকে অর্গানিক এসইও এবং অর্থের বিনিময়ে বিজ্ঞাপন হিসেবে এসইও করাকে পেইড এসইও বলে।

এসইওর কাজগুলোকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়—১. অনপেজ বা ওয়েবসাইটের ভেতরে। ২. অফপেজ বা ওয়েবসাইটের বাইরে।

অনপেজ এসইওর বিষয়গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো যথাযথ টাইটেল বা শিরোনাম নির্বাচন, মেটা ডেসক্রিপশন লেখা, ব্যবহৃত ছবিগুলোর টাইটেল, ট্যাগ ও ক্যাপশন ব্যবহার, ওয়েবসাইটের বিভিন্ন পেজের মধ্যে আন্তসংযোগ তৈরি করা ইত্যাদি। আর অফপেজ এসইওর বিষয়সমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করা, অন্যান্য ভালো ওয়েবসাইটে ব্যাকলিংক তৈরি করা ইত্যাদি।

কিওয়ার্ড ও ট্যাগ গবেষণা
কিওয়ার্ড রিসার্চ এসইওর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ। গুগল থেকে কিওয়ার্ড প্ল্যানার ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশ নির্বাচন করে কিওয়ার্ড রিসার্চ করা যায়। অনেক পেইড সার্ভিসও আছে। ওয়েবসাইট ও কাজের ব্যাপ্তির ওপর নির্ভর করে ফ্রি ও পেইড সার্ভিস গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তা ছাড়া বিভিন্ন এসইও প্লাগইন পাওয়া যায়। যেমন ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটে ইয়স্ট এসইও প্লাগইনসহ অন্যান্য প্লাগইন ব্যবহার করা যায়। ইউটিউবের জন্য ট্যাগ রিসার্চ করতে হয় এবং ভিডিও বিবরণ ভালোভাবে দিতে হয়। ইউটিউবের ট্যাগ রিসার্চে TubeBuddy আথবা VidIQ–এর মতো টুলগুলো ব্যবহার করতে পারেন।

হোয়াইট হ্যাট, ব্ল্যাক হ্যাট ও গ্রে হ্যাট এসইও
হোয়াইট হ্যাট এসইও বলতে সার্চ ইঞ্জিনের সব নিয়ম মেনে পরিচ্ছন্ন ও সম্পূর্ণ বৈধভাবে একটি ওয়েবসাইটকে প্রথম পেজে নিয়ে আসার চেষ্টা করাকে বোঝায়। সব সময় অবশ্যই হোয়াইট হ্যাট এসইওর চর্চা করা উচিত। অন্যদিকে, বিভিন্ন স্প্যামিং বা প্রতারণার মাধ্যমে এসইও করার চেষ্টা করাকে ব্ল্যাক হ্যাট এসইও বলে। ব্ল্যাক হ্যাট এসইওর চর্চা করলে ওয়েবসাইট ব্ল্যাক লিস্টেড হবে এবং পরে কখনোই সার্চে আসবে না। হোয়াইট হ্যাট ও ব্ল্যাক হ্যাট এসইওর মাঝামাঝি অবস্থাকে বলা হয় গ্রে হ্যাট এসইও।

মনে রাখা ভালো
সার্চ ইঞ্জিন সব সময় বড় কনটেন্ট যেখানে অনেক তথ্য, ছবি ও ভিডিও আছে তা প্রাধান্য দিয়ে থাকে। আপনি যে বিষয়ে লিখতে চান, আগে জেনে নিন তা অনলাইনে কী পরিমাণে ূখোঁজা হয়। কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে সার্চ করলে যে ওয়েবসাইট বা লিংকগুলো আগে আসে, সেগুলোর কনটেন্ট সাজানো, শব্দের সংখ্যা, ছবি ও ভিডিওর ব্যবহার, বিভিন্ন লিংকের ব্যবহার সম্পর্কে ধারণা নিয়ে আরও ভালো কিছু তৈরি করার চেষ্টা করতে হবে। ধৈর্য নিয়ে ধারাবাহিকভাবে ভালো কনটেন্ট তৈরি করতে থাকলে ওয়েবসাইটের বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ে এবং একসময় তা সার্চে শীর্ষ স্থানে আসে।