আইনস্টাইনের তত্ত্বের সহজ ব্যাখ্যা

.
.

জার্মান বিজ্ঞানী অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতা তত্ত্বের কথা আমরা কমবেশি সবাই জানি। কিন্তু এর ব্যাখ্যা কি জানা আছে? অনেকেই হয়তো হাত তুলবেন। কিন্তু আজ রস+আলো দিচ্ছে আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতার পানির মতো সহজ ব্যাখ্যা! (এই ব্যাখ্যাগুলো না বুঝলে পয়সা ফেরত!)
* আপনি যদি ফেসবুকে পাঁচ ঘণ্টা ধরে অনলাইনে থাকেন, তাহলে আপনার মনে হবে, আপনি যেন মাত্র পাঁচ মিনিট ধরে অনলাইনে আছেন। কিন্তু আপনি যদি পাঠ্যপুস্তকের সামনে পাঁচ মিনিটও বসে থাকেন, তাহলে আপনার মনে হবে, আপনি যেন অনন্তকাল ধরে বসে আছেন! অর্থাৎ সময় পরম নয়, সময় আপেক্ষিক।
* ধরা যাক, একজন পরীক্ষার্থী তার অবস্থানে বসে পরীক্ষা দিচ্ছে। ঠিক তখন সে ঘড়িতে সময় দেখছে, আর পরীক্ষক রুমের এক পাশ থেকে অপর পাশে চলন্ত অবস্থায় গার্ড দিতে দিতে ঘড়ি দেখছেন। চলন্ত পরীক্ষকের ঘড়ি, স্থির পরীক্ষার্থীর ঘড়ির চেয়ে ধীরে ধীরে টিক পরিমাপ করবে। সে সময় পরীক্ষক মনে মনে চিন্তা করেন, ‘সময় যেন কাটে না! বড় বোরিং বোরিং লাগে...!’ আর পরীক্ষার্থী মনে মনে চিন্তা করে, ‘এই টাইম যদি না শেষ হয়, তবে কেমন হতো তুমি বলো তো!’ অতএব চলন্ত অবস্থায় শিক্ষকের ঘড়ি ধীরে চলছে বলে মনে হবে; আর স্থির অবস্থানে বসে থাকা পরীক্ষার্থীর ঘড়ি চলছে অতি দ্রুত! এটাকেই কাল দীর্ঘায়ন বা সময় প্রসারণ বলে। অতএব, সময় পরম বা ধ্রুব নয়, সময় হচ্ছে আপেক্ষিক।
* আবার ধরা যাক, আপনি সারা রাত ফেসবুক চালানোর পর সকালে পরীক্ষা দিতে গিয়ে প্রশ্ন পেয়ে ভ্যাবাচেকা খেয়ে বসে আছেন। আপনি যখন কিছুই পারছেন না, আপনার সামনের বন্ধুটি প্রতি মিনিটে ১০০ শব্দ লিখে যাচ্ছে! আপনি তার লেখা দেখার জন্য আকুতি করলেও তার কোনো ভাবান্তর হচ্ছে না। পরীক্ষার শুরুতে তার প্রতি আপনার মনে যত ‘দৈর্ঘ্যের’ বন্ধুত্বসুলভ অনুভূতি ছিল, পরীক্ষা চলার সময় তার গতিশীল বিরতিহীন লেখার জন্য সেই অনুভূতি সংকুচিত হতে শুরু করল। বন্ধুকে মনে হতে লাগল চিরশত্রু। তার লেখার গতি বৃদ্ধি পায় আর আপনার মনে বন্ধুত্বসুলভ অনুভূতি কমতে থাকে। এই প্রভাবকেই দৈর্ঘ্য সংকোচন বলে।
* স্থান আর কালের আপেক্ষিকতার ব্যাপারটা সবাই মেনে নিলেও ভরের আপেক্ষিকতার কথায় হয়তো অনেকেই ভ্রু কুঁচকে ফেলবেন। অনেকেই হয়তো প্রশ্ন করবেন, ‘এ আবার কেমন কথা? ভর ধ্রুবক না তো কী? ভর পরিবর্তন হয় নাকি?’ হ্যাঁ, ভরও আসলে ধ্রুবক নয়; ভর আপেক্ষিক এবং শক্তিতে রূপান্তরযোগ্য। ভর এবং শক্তি প্রকৃতপক্ষে একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। অর্থাৎ কোনো পদার্থের ভরকে শক্তিতে রূপান্তর করা যায়, আবার শক্তিকেও ভরে রূপান্তর করা যায়। মনে করা যাক, আপনার কলেজের মারকুটে স্যারটির বাঁ হাতের ভর আড়াই কেজি, সেটি আপনার কানের নিচে এসে থাপ্পড়ে পরিণত হওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে সেই হাতে ৪২০ কিলোজুল শক্তি সঞ্চিত হবে। থাপ্পড় যখন আপনার কানের নিচে স্থাপিত হবে, তখন আপনার কান ভারী হয়ে যাবে এবং একটি তীক্ষ্ণ শব্দ শুনতে পাবেন। আর আপনি তো জানেন, শব্দ এক প্রকার শক্তি। অর্থাৎ ভরকে শক্তিতে রূপান্তর করা যায়। অর্থাৎ E=mc2!