নকল পুতিনের হুঁশিয়ারি

প্রযুক্তির সাহায্যে ভ্লাদিমির পুতিনের মুখ থেকে মার্কিন নির্বাচন নিয়ে হুঁশিয়ারি প্রচার করানো হয়
ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দুটি বিজ্ঞাপন প্রচার করা হয়েছে। এর একটিতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং অপরটিতে উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং-উনকে দেখা যাবে। খবরের বাকি অংশে যাওয়ার আগেই বলে রাখি, ভিডিও দুটি নকল।

প্রযুক্তির সাহায্যে তাঁদের আদল তৈরি করে একটি বার্তা দেওয়া হচ্ছে। আর তা হলো, যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে তাঁদের (পুতিন ও কিম) হস্তক্ষেপের প্রয়োজন নেই। মার্কিন নাগরিকেরাই দেশটির গণতন্ত্র ধ্বংস করে দেবে।

বিজ্ঞাপন দুটির বার্তা ভয়ংকর, তবে সেগুলো হুমকি নয়। আসন্ন মার্কিন নির্বাচনে ভোটাধিকার রক্ষার জন্য রিপ্রেজেন্ট আস নামের একটি সংগঠনের প্রচারণার অংশ এটি। তাদের লক্ষ্য মূলত মার্কিন নাগরিকদের গণতন্ত্রের নাজুক দিক সম্পর্কে সতর্ক করে দেওয়া। এতে তাঁরা যেন ভোটার নিবন্ধন পরীক্ষা করে দেখা এবং নির্বাচনে স্বেচ্ছাসেবকের ভূমিকা পালনসহ বেশ কিছু কাজ করেন।

বিজ্ঞাপন দুটি আরেকটি বিষয়য়ে সচেতন করে দেয়। প্রযুক্তির সাহায্যে এভাবে যদি বিখ্যাত কারও মুখ দিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু বলানো হয়, তবে কী হবে? নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে। আর এমন প্রতারণা ঠেকাতে বিশ্ববাসীর প্রস্তুতি কতটা কম, তা-ও মনে করে দেয় নকল ভিডিও দুটি।

যেভাবে বানানো হয়েছে

এই প্রচারণায় রিপ্রেজেন্ট আস কাজ করেছে ক্রিয়েটিভ এজেন্সি মিসচিফ অ্যাট নো ফিক্সড অ্যাড্রেসের সঙ্গে। তারাই শাসকদের মুখ থেকে বার্তা পৌঁছে দেওয়ার ধারণা দেয়। দুজন পুতিন ও কিমের চেহারার গঠনের সঙ্গে মেলে এবং কাছাকাছি কণ্ঠের দুজন অভিনেতাকে পাণ্ডুলিপি পাঠ করতে দেওয়া হয়। পাশাপাশি চলে তাদের ভিডিও ধারণ। এরপর ওপেন-সোর্স অ্যালগোরিদমের সাহায্যে পুতিন ও কিমের চেহারা বসানো হয়েছে।

পোস্ট-প্রোডাকশন অংশে ভিডিও দুটিকে আরও নিখুঁত করে তোলা হয়। সব মিলিয়ে ১০ দিন লেগেছে মাত্র। সিজিআইয়ের মতো প্রযুক্তি ব্যবহার করে একই ধরনের ফল চাইলে হয়তো কয়েক মাস লেগে যেত বলে বিজ্ঞাপন দুটির নির্মাতা দল জানিয়েছে। তা ছাড়া আকাশচুম্বী খরচের ব্যাপার তো রয়েছেই।

অপর বিজ্ঞাপনে উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং-উনের অবয়ব দেখানো হয়
ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

প্রচারে অস্বীকৃতি

বিজ্ঞাপন দুটি যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসির দর্শকদের জন্য টিভি চ্যানেল ফক্স, সিএনএন এবং এমএসএনবিসিতে প্রচারের কথা ছিল। তবে শেষ মুহূর্তে টিভি চ্যানেলগুলো প্রচার করতে অস্বীকৃতি জানায়। দুটি বিজ্ঞাপনের শেষেই স্বীকারোক্তিমূলক বার্তা হিসেবে লেখা আছে, ‘এই ফুটেজ নকল, তবে হুমকি নয়।’

তবু ব্যাপারটা এমনই নাজুক যে টিভি চ্যানেলগুলো হয়তো ভেবেছে, মার্কিন নাগরিকেরা এমন প্রচারণার জন্য এখনো প্রস্তুত নয়। সূত্র: এমআইটি টেকনোলজি রিভিউ