পাঁচ বছরের মধ্যে ফেসবুকেই বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করা যাবে

ভার্চ্যুয়াল জগতে এখন যেভাবে যোগাযোগের কথা ভাবছে ফেসবুকফেসবুক হরাইজন
ফেসবুককে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে মেটাভার্সে রূপান্তর করতে চান প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক জাকারবার্গ। সেটা আগামী পাঁচ বছরের মধ্যেই।

মেটাভার্স হলো ভার্চ্যুয়াল জগৎ। মনে করুন তিন বন্ধু বসে আড্ডা দিচ্ছেন কিংবা পাঁচ সহকর্মী অফিসের একটি কক্ষে মিটিং করছেন। সে কাজটিই মেটাভার্সের ভার্চ্যুয়াল পরিবেশে করা যাবে। সেখানে যার যার চেহারার সঙ্গে মিল রেখে তৈরি আভাটার থাকবে। সেই আভাটারগুলো নিয়ন্ত্রণ করবেন ব্যবহারকারীরাই। আপনি নিজের ঘরে হাঁটবেন, ভার্চ্যুয়াল জগতে আভাটারও হাঁটবে। আপনি হাত নেড়ে কথা বলবেন, আভাটারও তা-ই করবে। বর্তমান পরিকল্পনায় কাজটি হবে ভার্চ্যুয়াল রিয়ালিটি বা ভিআর হেডসেটের সাহায্যে।

ফেসবুক-প্রধানের ভাষায়, সেখানে আপনি কেবল কনটেন্ট দেখবেন না, নিজেও এর ভেতর থাকবেন।

ফেসবুককে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে বদলে মেটাভার্সে রূপ দিতে চান মার্ক জাকারবার্গ
ফেসবুক

দ্য ভার্জের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে মানুষের মুঠোফোন-নির্ভরশীলতা সম্পর্কে জাকারবার্গ বলেছেন, ছোট্ট জ্বলজ্বলে চতুষ্কোণের (স্মার্টফোন) মধ্যে জীবন কাটিয়ে দেওয়ার কোনো মানে হয় না। মানুষের যোগাযোগের ধরনও সেটা নয়। এখন যে মিটিংগুলো করা হয়, তার অনেকগুলোতে আপনি ডিসপ্লেতে ছক আকারে মানুষের চেহারা দেখেন। মানুষের তথ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের ধরনও সেটা নয়।

সাক্ষাৎকারে মেটাভার্সের একটি উদাহরণ দিয়ে জাকারবার্গ বলেছেন, মুঠোফোনের পর্দায় কনসার্টের ভিডিও দেখার পর চাইলে ভার্চ্যুয়াল ত্রিমাত্রিক কনসার্টে যোগ দেওয়ার সুযোগ থাকবে। আপনি অন্যদের সঙ্গে উপস্থিত থাকার অনুভূতি পাবেন, যেন আপনি অন্য কোথাও আছেন। যে অভিজ্ঞতা আপনি দ্বিমাত্রিক অ্যাপ বা ওয়েবসাইটে পাবেন না।

বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভিআরের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের আদর্শ কর্মস্থল তৈরির সুবিধা দিতেও কাজ করছে ফেসবুক। জাকারবার্গের ভাষায় সেটি ‘ইনফিনিট অফিস’।

তিনি বলেছেন, ভবিষ্যতে কেবল ফোনকলে কাজ সারার বদলে আপনি হলোগ্রাম হিসেবে আমার পাশে এসে বসতে পারবেন। শত শত মাইল দূরে থেকেও তখন মনে হবে আমরা যেন এক জায়গায় বসে আছি। আমার মনে হয়ে এর একটা শক্তি আছে।

ভার্চ্যুয়াল রিয়ালিটিতে বড় বিনিয়োগ করছে ফেসবুক। ২০১৪ সালে ২০০ কোটি ডলারে অকুলাস কিনে নেয়। এই অঙ্গপ্রতিষ্ঠানটিই এখন ফেসবুকের ভিআর ঘরানার পণ্য তৈরি করে।

২০১৯ সালে ফেসবুক হরাইজন নামে ‘ভার্চ্যুয়াল স্পেস’ চালু করে প্রতিষ্ঠানটি। কেউ আমন্ত্রণ জানালে সেখানে অকুলাস হেডসেটের সাহায্যে নিজেদের কার্টুন-সদৃশ আভাটারের মাধ্যমে একে অপরের সঙ্গে আলোচনা চালাতে পারে ব্যবহারকারীরা।

তবে বর্তমানের হেডসেটগুলোর মতো মাথায় এত বড় যন্ত্র লাগিয়ে থাকাটাও মুশকিল। জাকারবার্গও তা স্বীকার করেছেন। সারা দিন সেটা পরে কাজ করার জন্য যন্ত্রটির আরও উন্নয়ন প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন তিনি।