পূজার প্রস্তুতি

পূজায় ব্যবহার করা হয় এমন তৈজসপত্র। ছবি: লেখক
পূজায় ব্যবহার করা হয় এমন তৈজসপত্র। ছবি: লেখক

৪ অক্টোবর মহালয়া দিয়ে শারদীয় দুর্গাপূজার শুরুটা হয়েই গেছে। ক্ষণ এগিয়ে আসছে। ১১ অক্টোবর ষষ্ঠী দিয়ে শুরু হবে এবারের দুর্গোৎসব। শারদীয় এ উৎসবের জাঁকজমকপূর্ণ বর্ণিল আয়োজন থাকে সবার জন্য। উৎসব তো থাকেই, সঙ্গে থাকে পূজার নানা আচার। একই সঙ্গে চলতে থাকে প্রতিমা তৈরির কাজ।

শারদীয় এ উৎসব বর্ণিল করার জন্য যা যা উপকরণ দরকার, তার সবই পাওয়া যায় পুরান ঢাকার শাঁখারীবাজারে। ঢাকা জজকোর্টের পাশে যে রাস্তা, সেটাই শাঁখারীবাজার। ৫ অক্টোবর গিয়ে দেখা গেল, রাস্তার মুখে প্রধান ফটকটি দাঁড়িয়ে গেছে। শাঁখারীবাজারের রাস্তায় রিকশা চলছে, মানুষের হাঁটাচলাও চলছে—এরই মধ্যে ভ্যানে করে আসছে বাঁশ ও কাঠ—ডেকোরেটরের নানা জিনিস। এ রাস্তাজুড়ে থাকবে অনেকগুলো মণ্ডপ।

শোলার মুকুট
শোলার মুকুট

দুই পাশের দোকানগুলোতে চলছে পূজার নানা অনুষঙ্গের কেনাকাটা। শংকর সরকার মা বাসন্তী ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী। তিনি নিজে একজন শোলাশিল্পী। বাবার কাছে শিখে বানিয়ে চলেছেন দেবীর মাথার মুকুট। ‘আমার দোকানে কোনো বিদেশি জিনিস ঢোকে না। নিজেরাই শোলা, ঝিনুক ও চুমকি দিয়ে মুকুট তৈরি করি।’ তাঁর তৈরি করা এক সেট সাদা মুকুটের দাম ২০ হাজার টাকা এবং সোনালি রঙের দাম ১৪ হাজার টাকা।

এমন অনেক দোকানে প্রতিমা সাজানোর নানা অনুষঙ্গ পাওয়া যাচ্ছে। আছে দেবীকে পরানোর কাপড়ও। সাজঘরের পিন্টু সাহা জানালেন, বেনারসি থেকে শুরু করে টিস্যু, সাটিন কাপড়ের শাড়ি বিক্রি হয় গজ হিসেবে। বেশির ভাগ কাপড় আসে ভারত ও চীন থেকে।

কাঁসা, পিতল ও অ্যালুমিনিয়ামের  তৈজসপত্র লাগে পূজার সময়। প্রদীপগাছা, পঞ্চপ্রদীপ, ঘণ্টা, কাঁসি, কলস, আগরদানি, থালা, কুলা, পানপাতা, কলাপাতা, কূপমন্ডুল, গ্লাস ইত্যাদি আছে কাঁসা বা পিতলে তৈরি। এসব আসে ধামরাই থেকে।

শাঁখারীবাজারে এলে শাঁখা-পলার কথা তো বলতেই হয়। পূজা উপলক্ষে এসবের বিক্রি-বাট্টাও এখন বেশ।

সঙ্গে সোনা-রুপার গয়নার বিক্রিও চলছে। কয়েকটা শাড়ির দোকানেও দেখা গেল পূজার কেনাকাটার ভিড়। পূজার ফুল সাজিয়ে শাঁখারীবাজারে বসে বেশ কটি অস্থায়ী দোকান। জানা গেল, দুর্গাপূজার সময় এমন দোকানের সংখ্যা আরও বাড়বে। সাউন্ড সিস্টেম, মাইকের কদর আছে পূজার আয়োজনে। আছে আলোকসজ্জার ব্যাপারও। তাই পুরান ঢাকার বৈদ্যুতিক বাতির দোকানগুলোয় এখন চলছে সবকিছু তৈরি করে রাখার প্রস্তুতি।

অনেক মণ্ডপেই শুরু হয়ে গেছে প্রতিমা তৈরির কাজ। খড়-বাঁশ দিয়ে কাঠামো তৈরি করে মাটি বসানো হচ্ছে, অনেকে আবার আরেকটু এগিয়ে গিয়ে রঙের কাজও ধরে ফেলেছেন।

প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে, এখন শারদীয় এ উৎসবে যোগ দেওয়ার অপেক্ষা।

সহযোগিতায়: জয়দেব সরকার