ভুল দ্য রং

.
.

ছোটবেলা থেকে একটি গান শুনে আসছি, ‘ভুল যদি হয় মধুর এমন, হোক না ভুল’। কিন্তু আমাদের জীবনের বেশির ভাগ ভুলই মধুর নয়; বরং তেতো! সে ক্ষেত্রে গানের কলি হতে পারে এমন, ‘ভুল যদি হয় গরল এমন, না হোক ভুল’!
সুমন ভালোবাসে শশীকে। লং ড্রাইভে দুজন। রেডিওতে বাজছে রোমান্টিক গান। মোহনীয় পরিবেশে সুমন বিগলিত হয়ে শশীকে বলল, ‘এর পরের গানটি তোমাকে ডেডিকেট করলাম!’ অধীর আগ্রহ নিয়ে দুজনের অপেক্ষা পরের গানের জন্য। রেডিওতে ‘সোনাবন্ধু, তুই আমারে ভোঁতা দাও দিয়া কাইট্টা লা’ লিরিকের যে গান শুরু হলো, তা এখানে লেখা সম্ভব নয়! সম্ভাবনাময় রিলেশন কফিনাবদ্ধ। এভাবে সম্ভবকে ‘অসম্ভব’ করতে একটি ভুলই যথেষ্ট!
হাইওয়ে থেকে যাওয়া যাক অলিগলিতে। মাইকে প্রচারণা চলছে। চরকা মার্কায় ভোটের জন্য মাইকিং। কিন্তু যে লোক মাইকে কথা বলছে, সে ‘ক’ কে ‘খ’ বলায় ব্যাপারটি হয়ে গেছে হাস্যকর! চরকা মার্কার জায়গায় মাইকে অনবরত বলেই যাচ্ছে, চড় খা মার খা!’ প্রচারণার মুখেই চপেটাঘাত করে এসব ভুল।
এবার দুই বন্ধুর ঘটনা। রফিক গেছে নববিবাহিত বন্ধুর বাসায়। এসি, ওয়াই-ফাই—সব মিলিয়ে হাই-ফাই অবস্থা! রফিক বন্ধুকে বলল, ‘তোর ওয়াই-ফাইয়ের পাসওয়ার্ড কী?’ দুঃখজনক হলেও সত্য, বন্ধু শুনল, তোর ওয়াইফের পাসওয়ার্ড কী? একটি ভুলের জন্য দুই বন্ধুর সম্পর্কের মধ্যে যে ভাঙন তৈরি হলো, তা ফেভিকল দিয়েও জোড়া লাগানো গেল না।
স্ত্রীকে খুশি করার জন্য স্বামী বলল, ‘তোমাকে রান্নায় নোবেল প্রাইজ দিতে ইচ্ছা করছে!’ স্ত্রী বলল, ‘নোবেল প্রাইজের সার্টিফিকেট না দিলেও চলবে; শুধু অর্থমূল্যটা পেলেই আমি খুশি!’ এমন ভুলে নিজের কাটা গর্তে বিনা শর্তে নিজেকেই পড়তে হয়!
কোনো ভুল হয় মধুর, কোনোটি হয় তিক্ত। আবার কোনো ভুল ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর ওপর ভোটকেন্দ্রের অমোচনীয় কালির মতো কালিমা লেপন করে দেয়! তখন তাদের বেশি রেজ্যুলেশনের ইমেজ চরম সংকটে পড়ে কম রেজ্যুলেশনের হয়ে যায়! এ ছাড়া কিছু জিনিসের ভুল ব্যবহার করে ফেললে, তা আর ফেরানো অসম্ভব। তাই মুখ, ধনুক ও বুটজুতা ব্যবহারে সতর্ক হওয়া উচিত। কারণ মুখের কথা, ধনুকের তির আর বুটের লাথি ফেরানো যায় না।