মঙ্গলে তিনটি প্রাচীন হ্রদের খোঁজ মিলেছে

মঙ্গল গ্রহের দক্ষিণ মেরুতে কাপুচিনো সোয়ার্লস নামের পৃষ্ঠ
ছবি: ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির সৌজন্যে

মঙ্গল গ্রহের ভূপৃষ্ঠের নিচে প্রাচীন হ্রদের খোঁজ পেয়েছেন গবেষকেরা। তাঁরা বলছেন, গ্রহটিতে আগে ধারণা করা তরল পানির চেয়ে আরও বেশি পানি থাকতে পারে। শুষ্ক ও ধুলাময় গ্রহটির দক্ষিণের বরফচূড়ার নিচে জলাশয় লুকিয়ে থাকতে পারে।

ইতালির রোমা ট্রে ইউনিভার্সিটির গবেষকদের নেতৃত্বে একটি নতুন গবেষণা ২০১৮ সালে মঙ্গলের মেরু বরফের নিচে একটি লুকানো হ্রদের অনুসন্ধানের বিষয়টিকে জোরালো সমর্থন করছে। এ ছাড়া নতুন গবেষণায় আরও তিনটি নতুন জলাশয় থাকার কথা বলা হচ্ছে।

গবেষকেরা এ ক্ষেত্রে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির মার্স এক্সপ্রেস অরবিটারের রাডারের তথ্য ব্যবহার করেছেন।

গতকাল সোমবার ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির এক বিবৃতিতে বলা হয়, নতুন গবেষণায় আরও অধিক তথ্য বিবেচনায় দিয়ে এবং ভিন্ন উপায়ে তা বিশ্লেষণ করে নতুন তিনটি জলাশয় আবিষ্কার করা হয়েছে।

গতকাল গবেষণা–সংক্রান্ত নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে ‘নেচার অ্যাস্ট্রোনমি’ সাময়িকীতে।
গবেষকেরা বলছেন, হ্রদগুলো বরফের একটি বড় স্তরের নিচে লুকিয়ে রয়েছে বলে মনে হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় হ্রদটি ১৯ মাইল বিস্তৃত হতে পারে। এ ছাড়া আরও কয়েকটি হ্রদ এর চারপাশে থাকতে পারে।

গবেষকেরা আশা করছেন, কম তাপমাত্রায় তরল থাকার জন্য পানি লোনা হবে। ২০১৯ সালের পৃথক এক গবেষণায় দেখা গিয়েছিল, আগ্নেয়গিরির সক্রিয়তা পানি জমাট বাঁধতে দেয় না। তবে বর্তমান গবেষণায় পানিতে অতিরিক্ত লবণ থাকার বিষয়টিতে জোর দিয়েছে।

ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি বলছে, ‘এখনকার মঙ্গলপৃষ্টে পানি টিকে থাকা সম্ভব নয়। তবে নতুন গবেষণা ফলাফল সে সম্ভাবনার কথা বলছে। ভূপৃষ্ঠের নিচে প্রাচীন হ্রদগুলো লাখো থেকে কোটি কোটি বছর টিকে থাকতে পারে।

গবেষকেরা মঙ্গল গ্রহে দীর্ঘদিন ধরেই প্রাচীন ব্যাকটেরিয়ার সন্ধান করছেন। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসার পাঠানো নতুন ‘প্রিজারভেন্স’ রোবট মঙ্গল গ্রহের পৃষ্ঠে এ সন্ধান চালিয়ে যাবে। সেখানে তরল পানির অস্তিত্ব পাওয়া গেলে তা প্রাণের অস্তিত্ব খোঁজার আকর্ষণীয় জায়গা হতে পারে। তবে এসব স্থানে পৌঁছানো অত্যন্ত কঠিন হবে।

মঙ্গলের দক্ষিণ মেরু থেকে তাই এখনই বড় কোনো সুসংবাদ পাওয়া যাবে না। ভবিষ্যতে বৈজ্ঞানিক অভিযানের লক্ষ্যে পরিণত হতে পারে এই প্রাচীন জলাশয়।

আরও পড়ুন