রাশিয়ার টিকা নিয়ে আলোচনা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

করোনার টিকা তৈরিতে গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা
ছবি: রয়টার্স

রাশিয়ার করোনার টিকা নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। টিকার কার্যকারিতা প্রমাণে বড় ধরনের পরীক্ষা ছাড়াই গত সপ্তাহে রাশিয়ার অনুমোদন দেওয়া টিকাটি কীভাবে মূল্যায়ন করা হবে, তা নিয়ে কথা বলেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইউরোপ অফিস।
কোপেনহেগেন থেকে এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইউরোপ অফিসের জরুরি বিভাগের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ক্যাথরিন স্মলউড বলেন, রাশিয়ার টিমের সঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তারা সরাসরি আলোচনা করেছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা রাশিয়ার সম্ভাব্য টিকা কীভাবে মূল্যায়ন করবে, তা নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে।
সংস্থার ইউরোপের আঞ্চলিক পরিচালক হ্যানস ক্লুগ বলেন, ‘যেকোনো সম্ভাব্য টিকাই ভালো খবর। তবে আমাদের একই রকম কঠোর মূল্যায়ন পদ্ধতির মধ্যে দিয়েই যেতে হবে।’

স্মলউড বলেন, ‘আমরা টিকা নিয়ে যে নিরাপত্তা ও কার্যকারিতার কথা বলছি, তা কেবল রাশিয়ার টিকা নিয়েই নয়, বর্তমানে উন্নয়ন পর্যায়ে থাকা সব টিকার জন্য তা প্রযোজ্য। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে দ্রুত টিকা আনার জন্য কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে। তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে নিরাপত্তা বা কার্যকারিতায় ছাড় দেওয়া হবে না।’
হ্যানস সতর্ক করেছেন, ‘একবার টিকা অনুমোদন পাওয়া মানেই মহামারির সমাপ্তি নয়। মহামারি সেদিনই শেষ হবে, যখন সবাই দায়িত্বপূর্ণ আচরণ করতে শিখবে এবং ভাইরাসের বিরুদ্ধে কীভাবে চলতে হবে, তা শিখে যাবে। এটি পুরোপুরি আমাদের ওপর নির্ভর করছে। সেই দিনটি আগামীকালও হতে পারে।’
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে জানানো হয়, স্পুটনিক-৫ নামের রাশিয়ার টিকাটির বিস্তারিত তথ্য জানতে আলোচনা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। রাশিয়ার পক্ষ থেকে টিকাটির আরও পরীক্ষা করতে আগামী সপ্তাহে ৪০ হাজার মানুষের ওপর প্রয়োগের পরিকল্পনার কথা বলা হয়েছে।

জুলাই মাসেই টিকার প্রথম ধাপের পরীক্ষার কথা বলেছিল রাশিয়া। আগস্ট মাসে এসে টিকার তৃতীয় ধাপের সফলতার কথা ঘোষণা করে মস্কো। এটিই বিশ্বের প্রথম নিবন্ধিত কোভিড-১৯ টিকা। ক্লিনিক্যাল পরীক্ষায় এটি নিরাপদ প্রমাণিত হওয়ার পর নিবন্ধন দিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

১১ আগস্ট রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানান, করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯–এর টিকা নিবন্ধন করেছে সে দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এর মধ্য দিয়ে টিকা তৈরির সব ধাপ সম্পন্ন হয়েছে।
জুলাই মাসেই টিকার প্রথম ধাপের পরীক্ষার কথা বলেছিল রাশিয়া। আগস্ট মাসে এসে টিকার তৃতীয় ধাপের সফলতার কথা ঘোষণা করে মস্কো। এটিই বিশ্বের প্রথম নিবন্ধিত কোভিড-১৯ টিকা। ক্লিনিক্যাল পরীক্ষায় এটি নিরাপদ প্রমাণিত হওয়ার পর নিবন্ধন দিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
মস্কোভিত্তিক গামেলিয়া ইনস্টিটিউটের তৈরি টিকাটি গ্রহণে হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে জানা গেছে। সূত্র বলছে, স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে সরকারি কর্মকর্তারাও টিকা নিতে পারবেন। ভ্লাদিমির পুতিনের এক মেয়ে

করোনার টিকা নিয়েছেন এবং তিনি সুস্থ আছেন। টিকা নিয়ে সফলতার দাবি করলেও কোনো প্রমাণ দেয়নি দেশটি। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার টিকাটি গণহারে দেওয়ার পাশাপাশি ৪০ হাজার মানুষের ওপর পরীক্ষার কথাও জানানো হয়েছে।
স্মলউড বলেছেন, টিকার মূল্যায়ন করতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিভিন্ন ধাপের তথ্য রাশিয়ার কাছে চেয়েছে। তাঁরা দ্রুত উপসংহারে যেতে চাইছেন না। রাশিয়ার টিকাটি কোন অবস্থায় আছে, তাঁরা জানার চেষ্টা করছেন।
হ্যানস ক্লুগ বলেন, পূর্ণ লকডাউন ছাড়াই ইউরোপ এখন কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াই চালাতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ এখন আরও বেশি প্রস্তুতি নিচ্ছে। কীভাবে লড়তে হবে, সে জ্ঞান অর্জন করেছে।