প্রথম আলোর সব সামাজিক কর্মকাণ্ডের সম্মিলিত রূপ প্রথম আলো ট্রাস্ট। ট্রাস্টের মূল উদ্যোক্তা প্রথম আলো। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ট্রাস্ট অ্যাক্ট অনুযায়ী ২০০৯ সালের মে মাসে প্রথম আলো ট্রাস্ট গঠিত হয়। এটি একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। ট্রাস্টিরা এ প্রতিষ্ঠান থেকে কোনো সুবিধা নেন না। জনসাধারণ এবং বিভিন্ন কল্যাণকামী প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সহযোগিতায় পরিচালিত হয় প্রথম আলো ট্রাস্ট। প্রথম আলোর দেশব্যাপী সকল প্রতিনিধি এবং বন্ধুসভার সদস্যরা এর সব কর্মকাণ্ডে সরাসরি সহযোগিতা করে থাকেন।
সম্পূর্ণ অলাভজনক এই ট্রাস্ট কাজ করতে চায় এমন সব মানুষের মধ্যে, অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্যোগ বা দুরবস্থা যাদের আশা ও স্বপ্ন মুছে দেয়। এই ট্রাস্ট কাজ করতে চায় অ্যাসিড-সন্ত্রাসে বিপর্যস্ত নারী, মাদকাসক্ত যুবসমাজ, অর্থকষ্টে জর্জরিত অদম্য মেধাবী ছাত্রছাত্রী এবং সত্য উদ্ঘাটনে ব্রতী নির্যাতিত সাংবাদিকদের মধ্যে। এই ট্রাস্ট চায়, তাদের উদ্যোগ ও সহযোগিতায় দেশ থেকে এসিড-সন্ত্রাস মুছে যাক, মাদক ছেড়ে উদ্দীপিত আশাবাদে এগিয়ে যাক তরুণ-তরুণীরা, দারিদ্র্যপীড়িত অদম্য মেধাবী তার অপরাজেয় স্বপ্নে জয় করুক পৃথিবী, প্রাকৃতিক দুর্যোগ পেছনে ফেলে জীবন বয়ে চলুক তার অদম্য ছন্দে। এই ট্রাস্ট চায় দেশের মানুষের মুখের অমলিন হাসিটা ধরে রাখতে।
'প্রথম আলো ট্রাস্ট' পীড়িত, হতাশ ও দুর্দশাগ্রস্ত মানুষকে ফিরিয়ে দিতে চায় সেই স্বপ্ন, সাহস ও আত্মবিশ্বাস; যাতে তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে।
এসবের বাইরেও দেশের মানুষের জরুরি যেকোনো প্রয়োজনে সাড়া দিতে প্রথম আলো ট্রাস্ট উন্মুখ।
'প্রথম আলো ট্রাস্ট'-এর তহবিল গড়ে উঠেছে দেশের বিভিন্ন স্তরের ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের স্বতঃস্ফূর্ত অনুদানের মাধ্যমে। কেবল আর্থিক অনুদানই নয়, তাঁদের নৈতিক অনুপ্রেরণা ও কল্যাণী উত্সাহ এ ট্রাস্টের সব কাজের মূল ভিত্তি। 'প্রথম আলো ট্রাস্ট' তাঁদের কাছে গভীরভাবে কৃতজ্ঞ।
এ ট্রাস্টের কার্যক্রম ছড়িয়ে আছে বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি জেলায়। প্রথম আলোর প্রধান কার্যালয়ের কর্মী, জেলা ও থানা প্রতিনিধি এবং 'বন্ধুসভা'র সদস্যরা ট্রাস্টের কর্মকাণ্ড পরিচালনায় সহযোগিতা করেন।
'প্রথম আলো ট্রাস্ট' গড়ে উঠেছে এগারোজন ট্রাস্টির সমন্বয়ে।
তাঁরা
হলেন:
ট্রাস্টিদের সভায় আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ট্রাস্টের আওতাধীন বিষয়ে সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে থাকে। পদাধিকারবলে প্রথম আলোর সম্পাদক ম্যানেজিং ট্রাস্টি, তিনি একজন সমন্বয়কারীসহ ট্রাস্ট পরিচালনা করে থাকেন। সভাপতি, সহসভাপতি ও কোষাধ্যক্ষ কমিটির এই তিনটি পদের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা তিন বছরের জন্য নির্বাচিত হন। ট্রাস্টের বিভিন্ন বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টাগণ পরামর্শ দিতে পারেন।
বর্তমানে এ ট্রাস্টির কমিটির সভাপতি কুতুবউদ্দিন আহমেদ, সহসভাপতি রূপালী চৌধুরী ও কোষাধ্যক্ষ তানজিব-উল-আলম। ম্যানেজিং ট্রাস্টি হিসেবে বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন মতিউর রহমান।
কার্যক্রমের নাম | বিবরণ |
---|---|
প্রথম আলো ট্রাস্ট/অ্যাসিডদগ্ধ নারীদের জন্য 'প্রথম আলো সহায়ক তহবিল' | ২০০০ সাল থেকে 'অ্যাসিডদগ্ধ নারীদের জন্য প্রথম আলো সহায়ক তহবিল' বদলে দেওয়ার নিরন্তর উৎসাহে পুনর্বাসন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে দেশব্যাপী। বস্তুনিষ্ঠ ও নির্ভরশীল প্রয়াসে অকান্ত পরিশ্রম করে প্রথম আলো সহায়ক তহবিল গড়ে তোলা হয়েছে। দেশজুড়ে অ্যাসিডদগ্ধ নারীদের পাশে প্রথম আলো দাঁড়িয়ে আছে পরিবর্তনের অঙ্গীকারে। |
প্রথম আলো ট্রাস্ট/মাদকবিরোধী আন্দোলন | মাদকবিরোধী আন্দোলনপ্রথম আলোর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম। এর আওতায় দেশজুড়ে বিভিন্নমুখী কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। |
প্রথম আলো ট্রাস্ট/ত্রাণ তহবিল | বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, সাইক্লোন, মঙ্গাসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে এই তহবিলের সহায়তায় প্রথম আলো সব সময় দাঁড়িয়েছে দেশের মানুষের পাশে।দেশের যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলা করার জন্য গঠিত হয়েছে ত্রাণ তহবিল। সাতক্ষীরা শ্যামনগরে দুর্যোগ আশ্রয়কেন্দ্র ত্রাণ তহবিলের উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমের একটি। এ ছাড়া নিয়মিতভাবে প্রতি বছর শীতার্ত মানুষের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। |
প্রথম আলো ট্রাস্ট/অদম্য মেধাবী | অদম্য মেধাবী কার্যক্রমটি শুরু হয়েছিল পত্রিকা প্রকাশের পর থেকেই। প্রথম আলোর সাংবাদিকেরা বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের পর্যালোচনা করে প্রতি বছর ৫০ জন ছাত্রছাত্রীকে প্রথম আলো উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে এ সাহায্য দিচ্ছে। এ ছাড়া তাদের মধ্যে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষায় সহযোগিতা করা হচ্ছে। |
প্রথম আলো ট্রাস্ট/আলোর পাঠশালা | দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে স্কুল প্রতিষ্ঠা করা। কুড়িগ্রামের প্রথম আলো চরে বিদ্যালয় ও রাজশাহী গোদাগাড়ীতে বাবুডাইং আদিবাসী বিদ্যালয়সহ ভোলার মাঝের চরে, রাজশাহীর পদ্মারচরে মোট ৬ টি স্কুল পরিচালনা করছে। |
প্রথম আলো ট্রাস্ট/সাদত স্মৃতি পল্লী | প্রথম আলো ট্রাস্ট-সাদত স্মৃতি পল্লী প্রকল্পে বিনা মূল্যে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান, ওষুধ বিতরণ করা হয়। দড়ি হাইরমারা গ্রাম ছাড়াও খোদাদিলা, বীরকান্দি, নীলক্ষা, বাহেরচর, আব্দুল্লাহপুরসহ বিভিন্ন গ্রাম থেকে মানুষ এখানে স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসেন। নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার দড়ি হাইরমারা গ্রামে এই প্রকল্পের অবস্থান। এনভয় গ্রুপের সহায়তায় প্রথম আলো ট্রাস্ট প্রকল্পটি পরিচালনা করছে । নিয়মিতভাবে যে সেবাসমূহ দেওয়া হচ্ছে তা হলো। ক) বিনা মূল্যে স্বাস্থ্যসেবা খ) বয়স্ক ভাতা গ) জ্ঞান চর্চার জন্য লাইব্রেরি ঘ) শিশু-কিশোরদের জন্য 'আরজান –আরিশ' শিশুপার্ক ঙ) বই পড়া, ছবি আঁকা ও নৈতিক শিক্ষা বিষয়ক ক্লাস চ) কম্পিউটার প্রশিক্ষণ। |
মেরিল-প্রথম আলো/সাভার সহায়তা তহবিল | ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিলে ঘটে যাওয়া শতাব্দীর ভয়াবহতম ভবন বিপর্যয় সাভারের রানা প্লাজা ধসে এক হাজার ১৩৪ পোশাককর্মী নিহত হন। ঘটনার প্রথম দিন থেকেই প্রথম আলো ট্রাস্টের পক্ষ থেকে বন্ধুসভা ওষুধ ও সরঞ্জাম নিয়ে ঘটনাস্থল ও হাসপাতালগুলোতে কাজ শুরু করেন। এই তহবিলের মাধ্যমে তাত্ক্ষণিকভাবে দুর্ঘটনায় পতিত এবং আহত ব্যক্তিদের জন্য খাবার, স্প্রে, অক্সিজেন ও পানি সরবরাহ করা হয়। আহত ব্যক্তিদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিত্সার ব্যবস্থা করা হয়। পরবর্তীতে, গুরুতর আহত ব্যক্তিদের মধ্য থেকে পুনর্বাসনের জন্য ১০১ জনের প্রত্যেককে দেওয়া হয় ১ লাখ টাকা। এ ছাড়া রানা প্লাজায় নিহত ব্যক্তিদের ২০ জনের সন্তানদের শিক্ষা বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। |
প্রথম আলো ট্রাস্ট/নির্যাতিত সাংবাদিক সহায়তা তহবিল | এই তহবিল গঠিত হয়েছে সত্যসন্ধানী নির্যাতিত সাংবাদিকদের সহায়তা করার উদ্দেশ্যে। |
প্রথম আলো ট্রাস্টের যে কোনো কার্যক্রমে আপনিও অংশগ্রহন করতে পারেন।
ব্যাংক হিসাবের নাম: প্রথম আলো ট্রাস্ট
হিসাব নম্বর: ২০৭-১০০-৭১১৫
ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, কারওয়ান বাজার শাখা
প্রথম আলো ট্রাস্ট শুধু বাংলাদেশি মুদ্রায় অনুদান গ্রহণ করে (শুধু সরকারের
বিশেষ অনুমোদন সাপেক্ষে বিদেশি মুদ্রা গ্রহণ করা হয়)।
ঠিকানা: প্রগতি ইনস্যুরেন্স ভবন, ২০-২১ কারওয়ান বাজার , ঢাকা-১২১৫
প্রয়োজনে: ফোন – ৮১৮০০৮১,৮১১৫৩০৭-১০
ই-মেইল:
trust@prothomalo.com