'মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি'

চলে এলো ১৪২৫ সাল। ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’ প্রতিপাদ্যে বাংলার নতুন বছরকে সাদরে বরণ করা হলো মঙ্গল শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে।

পয়লা বৈশাখের আজকের দিনে হাজারো মানুষের ঢলে মঙ্গলের এই যাত্রায় ছিল কেবল আনন্দ আর আনন্দ, উল্লাস আর উচ্ছ্বাস। রৌদ্রোজ্জ্বল সকালবেলায় বর্ণিল যাত্রায় ছিল না  বেদনার কোনো কালো ছায়া। নেচে–গেয়ে, ডাক-ঢোলের বাদ্য বাজিয়ে বাংলার চিরায়ত সাজে নববর্ষকে বরণ করছে সবাই। সবার প্রত্যাশা, নতুন বছরটি হবে—ভালো, আরও ভালো।

নানা প্রতিকৃতি নিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রায় হাজারো মানুষ অংশ নেয়। ছবি: সুমন ইউসুফ
নানা প্রতিকৃতি নিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রায় হাজারো মানুষ অংশ নেয়। ছবি: সুমন ইউসুফ

আজ শনিবার সকাল নয়টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে চারুকলা অনুষদ থেকে বের হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। এ ছাড়া শোভাযাত্রায় অংশ নিয়েছেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সদস্যরা। শাহবাগ, রূপসী বাংলা হয়ে আবারও শাহবাগ, টিএসসি হয়ে চারুকলায় গিয়ে সকাল সোয়া ১০টার দিকে শেষ হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা।

মঙ্গল শোভাযাত্রায় মানুষের অংশগ্রহণ প্রমাণ করে এ দেশের মানুষ অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী। মঙ্গল শোভাযাত্রায় এবার আটটি প্রতীক—সূর্য, বক-মাছ, হাতি, পাখি, সাইকেলে মা-শিশু, টেপা পুতুল, মহিষসহ চারটি পাখি ও জেলে। এগুলো বাঁশ, কাঠ ও বিভিন্ন রঙের কাগজ দিয়ে তৈরি।

তিন দশক ধরে বর্ষবরণের অন্যতম আকর্ষণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের মঙ্গল শোভাযাত্রা। ইউনেসকোর বিশ্ব–ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে এ শোভাযাত্রা।

শোভাযাত্রায় বক, মাছ ও অন্যান্য প্রতীক। শাহবাগ, ঢাকা, ১৪ এপ্রিল। ছবি: সুমন ইউসুফ
শোভাযাত্রায় বক, মাছ ও অন্যান্য প্রতীক। শাহবাগ, ঢাকা, ১৪ এপ্রিল। ছবি: সুমন ইউসুফ

শোভাযাত্রার শুরুতে ছিল একটি বড় উজ্জ্বল সূর্য। তারপর একে একে এগিয়ে চলে সাইকেলে মা-শিশু, টেপা পুতুল, মহিষসহ চারটি পাখি ও জেলে। ছিল রাজা, রানিসহ নানা আকৃতির রং ও মুখোশ।

শোভাযাত্রাটি ছিল নিরাপত্তার চাদরে ঘেরা। সামনে, পেছনে, ডানে, বামে ছিলেন পুলিশ, সোয়াট, ডিবি ও র‍্যাবের অসংখ্য সদস্য। কেবল শোভাযাত্রার চারপাশে নয়, আকাশেও ছিল র‍্যাবের হেলিকপ্টারের টহল।