কোরবানির ছুরি-চাকুতে শাণ

ছুরি, চাপাতি, দা–বঁটিতে শাণ দেওয়ায় ব্যস্ত পুরান ঢাকার সূত্রাপুরের ডালপট্টির এই কামার l প্রথম আলো
ছুরি, চাপাতি, দা–বঁটিতে শাণ দেওয়ায় ব্যস্ত পুরান ঢাকার সূত্রাপুরের ডালপট্টির এই কামার l প্রথম আলো

ঈদুল আজহার মাঝে আর এক দিন বাকি। কারওয়ান বাজারের কামারপট্টিতে ছুরি, চাপাতি, দা-বঁটির দোকানগুলোর কাছে যাওয়ার আগে দূর থেকেই শোনা যাচ্ছে হাতুড়ি দিয়ে লোহা পেটানোর নানান টুংটাং শব্দ। কিছু কিছু দোকানে শাণ দেওয়ার তীক্ষ্ণ আওয়াজও ভেসে আসছে। কোরবানির পশু কেনার পাশাপাশি জবাই ও মাংস কাটার ছুরি, চাপাতি, কুড়াল কিনতে কামারপট্টিতে ঢুঁ দিচ্ছেন ক্রেতারা।
গতকাল শনিবার কারওয়ান বাজারের কামারপট্টিতে গিয়ে দেখা গেছে, কর্মকারেরা কোরবানির পশু জবাই ও মাংস কাটার সরঞ্জাম তৈরিতে ব্যতিব্যস্ত। এবার এসবের দাম ও বিক্রি দুটোই বেড়েছে বলে জানালেন কামারপট্টির প্রবীণ বিক্রেতা দেলোয়ার ব্যাপারী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘শেষ দুই দিনই বিক্রি হয় সবচেয়ে ভালো। গরু কিনে তারপর লোকজন ছুরি-চাপাতি কিনতে আসে।’  
কামারপট্টিতে গিয়ে দেখা গেছে, মান ও আকারভেদে মাংস কাটার ছুরি ৪০০-৬০০ টাকা, চামড়া ছাড়ানোর ছুরি ৫০-১০০ টাকা, চাপাতি কেজিপ্রতি ৫০০-৮০০ টাকা, দা-বঁটি কেজিপ্রতি ৪০০-১০০০ টাকা, মাংসের হাড় কাটার ছোট দেশি কুড়াল ৬০০ টাকা, চীনা কুড়াল ৪০০ টাকা, মাংস কাটার খাইট্টা (তেঁতুলগাছের গুঁড়ি) আকারভেদে ১৫০-৫০০ টাকা, পাটি ছোটগুলো (তিন-চার হাতের) ৮০-১০০ টাকা, বড়গুলো (চার-পাঁচ হাতের) ১২০-১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ান বাজারের রফিক এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী এবং কামারপট্টির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন, ক্রেতারা সাধারণত কোরবানির গরু কেনার পর ছুরি, চাপাতি, দা, বঁটি কিনতে আসেন। এবারের ঈদে গতবারের তুলনায় বিক্রি বেশি হচ্ছে। দামও বেড়ে গেছে।
কর্মকার শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘অনেকে নতুন ছুরি, চাপাতি ও বঁটি কিনছেন। এখনো অনেকে আছেন, যাঁরা কোরবানির পশু কেনেন নাই। আর এক দিন পরে ছুরি, চাপাতির বিক্রি আরও বাড়বে।’
কামারপট্টিতে পুরোনো বঁটি, ছুরি ও কুড়াল মেরামত করতে এসেছেন ওয়াসায় কর্মরত সৈয়দা নাসিমা আক্তার। তিনি বলেন, মাংস কাটার পুরোনো সরঞ্জামগুলো মেরামত করাবেন এবং নতুন ছুরি কিনবেন।

কারওয়ান বাজারে ছুরি-চাপাতির পাশাপাশি কাঠের দোকানে পাওয়া যাচ্ছে পাটি ও খাইট্টা। কোরবানির সময়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে পশুর মাংস বানিয়ে (কেটে তৈরি করে) দেন মো. খাইরুল। তিনি পাঁচটি খাইট্টা কিনতে এসেছেন। এক দোকানে দামে না হওয়ায় ঘুরে আরেকটি দোকান থেকে ৪০০ টাকা দিয়ে কিনে নেন তাঁর প্রয়োজনীয় পাঁচটি খাইট্টা।