মহানায়িকা সুচিত্রার জন্মদিনে পাবনায় নানা আয়োজন

জন্মবার্ষিকীতে সুচিত্রা সেনের ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ। গতকাল সকালে পাবনা শহরের হেমসাগর লেন সুচিত্রার পৈতৃক বাড়িতে।  ছবি: প্রথম আলো
জন্মবার্ষিকীতে সুচিত্রা সেনের ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ। গতকাল সকালে পাবনা শহরের হেমসাগর লেন সুচিত্রার পৈতৃক বাড়িতে। ছবি: প্রথম আলো

বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি নায়িকা সুচিত্রা সেনের পাবনার পৈতৃক বাড়িটি নিয়ে সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা রয়েছে। বাড়িটি সংস্কার, সেখানে বড় পরিসরে স্মৃতি সংগ্রহশালা ও একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র তৈরির কথা আছে। কিন্তু দীর্ঘদিনেও এসব পরিকল্পনার বাস্তবায়ন হয়নি।

প্রয়াত সুচিত্রা সেনের ৮৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল শনিবার আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়নের দাবি করেছেন। সুচিত্রা সেনের কৈশোরের বিদ্যালয় পাবনা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে জেলা প্রশাসন ও সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদ গতকাল বিকেলে এ আলোচনার সভার আয়োজন করে।

জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন পাবনা-৫ আসনের সাংসদ গোলাম ফারুক। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন পাবনা প্রেসক্লাবের সভাপতি শিবজিত নাগ, ইউনিভার্সাল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কবি সোহানী হোসেন, সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদ পশ্চিমবঙ্গ শাখার আহ্বায়ক কবি দেবারতী ভট্টাচার্য, পাবনা শাখার সহসভাপতি রাম দুলাল ভৌমিক, সাধারণ সম্পাদক নরেশ মধু ও সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল জব্বার প্রমুখ।

রাম দুলাল ভৌমিক বলেন, ‘সুচিত্রা সেনের পৈতৃক বাড়িটি জামায়াতের দখলে ছিল। বহু আন্দোলন-সংগ্রাম ও আইনি জটিলতা শেষে বাড়িটি দখলমুক্ত হয়। সে সময় সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় বাড়িটি নিয়ে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা জানায়। সেখানে একটি আধুনিক সাংস্কৃতিক চর্চা কেন্দ্র করার কথা বলে। কিন্তু এখনো সে পরিকল্পনার বাস্তবায়ন হয়নি। আমরা অবিলম্বে এর বাস্তবায়ন চাই।’

দেবারতী ভট্টাচার্য বলেন, ‘সুচিত্রা সেন আমাদের বাংলার সম্পদ। তিনি চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বাংলা ভাষাকে বিশ্বদরবারে তুলে ধরেছেন। দুই বাংলার মানুষের মধ্যে আত্মিক বন্ধন তৈরি করেছেন। তাই আমরা সুচিত্রা সেনের বন্ধনে দুই বাংলার সাংস্কৃতিক বন্ধন আরও দৃঢ় করতে চাই।’

সাংসদ গোলাম ফারুক বলেন, ‘পাবনার মানুষের ভালোবাসায় জামায়াতের কবল থেকে সুচিত্রা সেনের পৈতৃক বাড়িটি দখলমুক্ত হয়েছে। তাঁর স্মৃতি ধরে রাখতে আমরাও সচেষ্ট আছি। আশা করছি শিগগির পৈতৃক বাড়িতে বড় পরিসরে কিছু হবে।’ জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আমরা তাঁর বাড়িটি সংরক্ষণের জন্য সব রকম চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছি। সেখানে স্বল্প পরিসরে একটি স্মৃতি সংগ্রহশালা হয়েছে। সেটিকে সমৃদ্ধ করার চেষ্টা চলছে।’
পরে স্কুলের শিক্ষার্থীরা সুচিত্রা সেন অভিনীত চলচ্চিত্রের গান পরিবেশন করে। এর আগে সকালে সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংগ্রহশালায় তাঁর ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর কেক কেটে জন্মদিন উৎসব উদ্‌যাপন, শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে চিত্রাঙ্কন, কুইজ, সুচিত্রা সেনের জীবনী নিয়ে রচনা প্রতিযোগিতা ও চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়।