ভিডিওতে সবাই চমক দিতে চায়: বন্যা

রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা
>

দুই বাংলার জনপ্রিয় রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী এবং সংগীতশিক্ষার প্রতিষ্ঠান সুরের ধারার চেয়ারম্যান রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। ১৫৮ তম রবীন্দ্রজয়ন্তীতে ইমপ্রেস অডিও ভিশন থেকে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর নতুন অ্যালবাম গানের ঝর্ণাতলায়। নতুন অ্যালবাম, বাংলাদেশে রবীন্দ্রচর্চাসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।

দুদিন আগেই প্রকাশিত হলো তিন কবির গান নিয়ে আপনার অ্যালবাম। তারপর কেবল রবীন্দ্রনাথের গান নিয়ে আরও একটি। কবিগুরুর জন্মদিন সামনে রেখেই কি এটা করা?
দশ বছর ধরে ইমপ্রেস অডিও ভিশন থেকে রবীন্দ্রজয়ন্তীতে আমার গানের অ্যালবাম প্রকাশিত হচ্ছে। এটি তারই ধারাবাহিকতা। রবীন্দ্রসংগীতের প্রচার ও প্রসারে সারা বছরই টেলিভিশন ও মঞ্চে গান করছি। সিডি আকারে গান প্রকাশের একটা ব্যতিক্রম আবেদন আছে।

এখন সিডিতে অ্যালবাম করার কারণ কী? এটা তো প্রায় উঠেই গেছে।
এটা ঠিক, সবাই এখন একটি করে গান প্রকাশ করে। সেটিও ইউটিউবনির্ভর। ভিডিওতে দৃশ্যশিল্প থাকে বেশি। গানের মধ্যে কত রকমের গল্প, কত–কী নাটক যে জুড়ে দেওয়া হয়। এতে গানের আবেদন হারিয়ে যায়। আমার এই গানগুলোই ইউটিউবে উঠবে, সেটার একটা আর্কাইভাল ভ্যালু আছে। আগে ছাত্রছাত্রীরা গুরুর কাছে যেত। এখন তারা ‘ইউটিউবগুরুর’ কাছে যায়। গানে কোনো সমস্যা হলেই, ইউটিউবে ঢুঁ মারে। এই গানগুলো ইউটিউবে থাকলে পরের প্রজন্মের কাজে লাগতে পারে।

এখনকার ভিডিওতে গানের আবেদন হারিয়ে যাওয়ার কারণ কী?
কোনো কাজ করতে হলে, সে বিষয়ে সম্যক ধারণা থাকা দরকার। এই তো সেদিন একটি লোকগানের ভিডিও দেখছিলাম। হঠাৎ করে গানের ভেতর ক্ল্যাসিক্যাল আলাপ জুড়ে দেওয়া হলো, যা মোটেও প্রাসঙ্গিক না। সেখানে বাঁশির কাজ থাকলে হয়তো ভালো লাগত। ভিডিওতে আসলে সবাই চমক দিতে চায়।

সম্মানসূচক ডি–লিট পেতে যাচ্ছেন। কেমন লাগছে?
সংগীত, শিশুদের নিয়ে কাজ, সমাজ উন্নয়নে অবদান রাখার জন্য আমাকে সম্মানসূচক ডি–লিট দিচ্ছে চট্টগ্রামের এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন। ১১ মে বিশ্ববিদ্যালয়টির সমাবর্তন। আমার সঙ্গে আরও সম্মাননা পাচ্ছেন আফগানিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সম্মাননা পেলে একজন সচেতন মানুষ আরও দায়বদ্ধ হয়। আরও বেশি যোগ্য হয়ে ওঠার চেষ্টা করে। আন্তর্জাতিক একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমন সম্মান নিঃসন্দেহে আনন্দের।

বাংলাদেশে রবীন্দ্রচর্চা কেমন চলছে বলে মনে করেন?
অন্যান্য গানের তুলনায় ভালোই হচ্ছে। সামগ্রিকভাবে সংগীতের অবস্থা সংকটজনক। আমাদের দেশের সংগীতও কোথায় যাচ্ছে কিছুই বোঝা যাচ্ছে না।
যদিও তরুণেরা শেখার জন্য আসছে, কিন্তু প্ল্যাটফর্ম পাচ্ছে না।

আপনার গানের স্কুল সুরের ধারার অবস্থা কেমন?
খুব ভালো। এ বছরই আমরা চালু করতে যাচ্ছি সুরের ধারা কলেজ অব মিউজিক। জুন-জুলাই সেশনে আই-মিউজিকে ভর্তি শুরু হবে। যারা আই-মিউজিক পাস করে, তারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পায় না। কারণ তারা সাধারণ বিষয়গুলোতে দুর্বল থাকে। আমাদের উদ্দেশ্য হবে সাধারণ বিষয়ের ওপর সমানভাবে গুরুত্ব দেওয়া। যাতে এখানকার শিক্ষার্থীরা যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করে। রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ও এ বছরই চালু করব। সেখানে থাকবে সংগীত, নাট্যকলা ও ব্যবসা অনুষদ বিভাগ।