ধর্ষণের পর সায়মাকে হত্যার কথা স্বীকার হারুনের

সাত বছরের শিশু সামিয়া আক্তার সায়মাকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন আসামি হারুন অর রশীদ। আজ সোমবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত জবানবন্দি রেকর্ড শেষে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে হারুনকে আদালতে হাজির করে তাঁর জবানবন্দি রেকর্ড করার জন্য আবেদন করে পুলিশ।

আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, জবানবন্দিতে আসামি হারুন বলেছেন—ওয়ারীতে খালাতো ভাই পারভেজের বাসায় থাকতেন তিনি। পারভেজের রঙের দোকানে চাকরি করতেন। ঘটনার দিন (৫ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় পারভেজের এক বছর বয়সী ছেলের ওষুধ নিয়ে আসেন তিনি। এরপর বাসা থেকে বের হওয়ার পর পারভেজের অষ্টম তলা ফ্ল্যাটের বাসার সামনে সামিয়াকে দেখতে পান। সামিয়া পারভেজের বাসায় আগেও এসেছে। পারভেজের ছেলের সঙ্গে সামিয়া খেলাধুলা করত।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক মো. আরজুন আদালতকে এক প্রতিবেদন দিয়ে জানিয়েছেন, সামিয়া হারুনকে বলেন, “চাচ্চু আমাকে ছাদটা দেখাইয়া নিয়ে আসেন। ” তখন হারুন সামিয়াকে নিয়ে ছাদে ওঠেন। একপর্যায়ে সামিয়াকে নয় তলার ফাঁকা কক্ষে নিয়ে যান হারুন। সেখানে হারুন ধর্ষণের চেষ্টা করলে সামিয়া চিৎকার করেন। তখন তার গলাটিপে ধরে অচেতন করে ফেলেন। সেখান থেকে সামিয়াকে নিজের কক্ষে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন হারুন। পরে গলাটিপে হত্যার চেষ্টা করেন। এতে সামিয়া নিশ্চুপ হয়ে গেলে ওই কক্ষে থাকা রশি দিয়ে সামিয়াকে শ্বাসরোধ করে তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন।

আদালতে স্বীকারোক্তি দেওয়ার পর হারুনকে হাজতখানায় নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। ঢাকা, ৮ জুলাই। ছবি: আসাদুজ্জামান
আদালতে স্বীকারোক্তি দেওয়ার পর হারুনকে হাজতখানায় নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। ঢাকা, ৮ জুলাই। ছবি: আসাদুজ্জামান

জবানবন্দিতে হারুন আরও বলেছেন, সামিয়াকে হত্যা করার পর লাশ রেখে খালাতো ভাই পারভেজের বাসায় যান। তখন মাগরিবের আজান দেয়। তিনি গোসল সারেন। পরে বাসার নিচে এসে এলাকায় ঘোরাঘুরি করেন। রাত ১১টা দিকে নিজের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায় চলে যান। বাড়ি যাওয়ার পর মোবাইলের সিম ফেলে দেন। সামিয়াকে ধর্ষণ করে হত্যা করার কথা সেই রাতে তার বাবা-মাকে বলেন। পরে তিনি তাঁর ফুপুর বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন। এর আগে হারুনকে পুলিশ কুমিল্লার ডাবরডাঙা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।

শুক্রবার রাত পৌনে আটটার দিকে ওয়ারীর বনগ্রাম মসজিদের সামনের ভবনের নির্মাণাধীন একটি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয় সায়মার লাশ। সে সিলভারডেল স্কুলের ছাত্রী ছিল। শনিবার বেলা দেড়টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে সায়মার মরদেহের ময়নাতদন্ত করেন সোহেল মাহমুদ। পরে সোহেল মাহমুদ বলেন, ‘শিশুটিকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে এবং হত্যার আগে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে, এ আলামত আমরা পেয়েছি।’