সাকিব বললেন, পছন্দের উইকেট পায়নি বাংলাদেশ

পছন্দের উইকেট পাননি বলে ক্ষুব্ধ সাকিব। ছবি: শামসুল হক
পছন্দের উইকেট পাননি বলে ক্ষুব্ধ সাকিব। ছবি: শামসুল হক
>সবাইকে অবাক করে দিয়ে আজ সাকিব চলে এলেন সংবাদ সম্মেলনে। ক্ষুব্ধ কণ্ঠে জানিয়ে গেলেন, তাঁরা চেয়েছিলেন যে ধরনের উইকেট, পেয়েছেন ঠিক উল্টো

বাংলাদেশ দল আজ সবচেয়ে বড় চমকটা উপহার দিয়েছে বোধ হয় সংবাদ সম্মেলনে। রীতি মেনে দলের প্রতিনিধি হয়ে আজ আসার কথা দিনের সেরা পারফরমারের। অবাক করে সংবাদ সম্মেলনে এলেন সাকিব আল হাসান, যিনি এই টেস্টে এখন পর্যন্ত ব্যাটিং-বোলিংয়ে খুব একটা ভালো করতে পারেননি। হঠাৎ সাকিব কেন সংবাদ সম্মেলনে এসেছেন, কারণটা বুঝতে বেশি দেরি হলো না।

সপ্তাহ দুই আগে বিসিবি ক্রিকেট পরিচালনাপ্রধান আকরাম খানের সঙ্গে একটি বৈঠকে বসেছিলেন অধিনায়ক সাকিব, প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো, দুই নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন ও হাবিবুল বাশার। বিসিবি সূত্রে জানা যায়, ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, আফগানদের বিপক্ষে টেস্টে এমন উইকেট দরকার, যেখানে প্রথম সেশন থেকেই বল বড় বড় বাঁক নিতে থাকবে। ভীষণ স্পিন-সহায়ক হবে সেই উইকেট। কিন্তু চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দুদিনে দেখা গেল উল্টোটা।

সাকিব কিছুতেই ‘ন্যাড়া’ উইকেটে খেলতে চাননি। তিনি ভালো করেই জানেন, ন্যাড়া উইকেটে আফগান স্পিনাররা যতটা বল ঘোরাতে পারবেন, বাংলাদেশের স্পিনাররা সেটি পারবেন না। আর টস হেরে গেলে দ্বিতীয় কিংবা চতুর্থ ইনিংসে ব্যাটিং করা হবে আরও বিপদের। ঠিক সেটিই দেখা গেছে। কাল প্রথম দিনে বাংলাদেশের স্পিনাররা খুব বেশি চ্যালেঞ্জ জানাতে পারেনি আফগান ব্যাটসম্যানদের, আজ আফগান স্পিনাররা নিজেদের স্কিল অনুযায়ী ইচ্ছেমতো বাঁক পেয়েছেন উইকেট থেকে। স্বাগতিক হয়ে যদি ঘরের মাঠে সুবিধা না পান, স্বাভাবিকভাবেই অসন্তুষ্ট হওয়ার কথা বাংলাদেশ অধিনায়কের। তা তিনি হয়েছেনও। সংবাদ সম্মেলনে ক্ষুব্ধ কণ্ঠে তাই সাকিব বললেন, ‘এমন ফ্ল্যাট (ন্যাড়া) উইকেটে অনেক দিন পর খেললাম।…এ ধরনের উইকেট আমরা প্রত্যাশা করিনি। আমাদের জন্য (পরিস্থিতি) কঠিন।’

প্রস্তুতি নিয়েছেন যে পাঠ্যসূচি দেখে, পরীক্ষার হলে গিয়ে যদি দেখেন প্রশ্ন এসেছেন অন্য পাঠ্যসূচি থেকে, তাহলে পরীক্ষাটা কঠিন হওয়ারই কথা। প্রশ্ন কমন না পড়ার ক্ষোভে কোনো ছাত্র নিশ্চয়ই পরীক্ষার হল ছেড়ে বেরিয়ে আসে না। তবে সবকিছু হয়ে যায় কঠিন। তবে বিরুদ্ধ স্রোতে সাঁতরে তীরে পৌঁছানোই হচ্ছে সত্যিকারের চ্যাম্পিয়নের কাজ। সাকিবও চাইছেন পরিস্থিতি যত কঠিনই হোক, এই লড়াইয়ে জিততে, ‘সত্যি, আমরা অনেক অবাক হয়েছি। এটা আমরা আশা করিনি। যেটা আশা করেছি তার উল্টোটা পেয়েছি। তার মানে এই নয় যে আমরা ভালো করতে পারব না। অনেক সময় প্রত্যাশামতো না–ও হতে পারে। তবে ভালো দল এখান থেকেই প্রমাণ করে। ভাবনার বাইরের প্রশ্ন এলে তারা সেটির উত্তর দিতে পারে। আমাদের চেষ্টা থাকবে ওই উত্তর যেন দিতে পারি। তবে হ্যাঁ, এই পিচ প্রত্যাশার বাইরে ছিল।’

যেহেতু লড়াইটা শেষ হয়নি, সাকিব এটি নিয়ে খুব বেশি ভাবতে চান না, ‘বিষয়টা হতাশার হলেও এটা নিয়ে এখন আলোচনা করে লাভ হবে না। এ পরিস্থিতি থেকে কীভাবে উতরে যেতে পারি, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা কীভাবে দল সাজিয়েছি, হয়তো বুঝতে পারছেন যে কী ধরনের পিচ আশা করছিলাম। এটা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। সব সময়ই চাইলেই যে সেটা পাবেন, এটা আশা করা ভুল।’