গিনেসে ইমরানের রেকর্ড

গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের সনদ হাতে ইমরান শরীফ। ছবি: খালেদ সরকার
গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের সনদ হাতে ইমরান শরীফ। ছবি: খালেদ সরকার
ঢাকার তরুণ ইমরান শরীফ। একক চেষ্টায় বিশ্বের দীর্ঘতম পেপার ক্লিপ চেইন বা শিকল বানিয়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে স্থান পেয়েছেন তিনি। গত ২৯ জুলাই হাতে পেয়েছেন বিশ্ব রেকর্ড গড়ার স্বীকৃতিপত্র। ইমরানের ২.৫২৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সেই শিকল তৈরির কথাই থাকছে এখানে।

হাস্যোজ্জ্বল তরুণের হাতে গিনেস রেকর্ডসের ফ্রেমে বাঁধা স্বীকৃতি সনদ। ছবিটা চট করে নজরে পড়েছিল মেসেঞ্জারের ‘মাই ডে’ ঘাঁটতে গিয়ে। সেই ছবির মানুষ ইমরান শরীফ। ছবির সূত্র ধরেই তাঁর সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয়, মেসেঞ্জারে আলাপ।

আলাপের শুরুতেই ছবির ব্যাপারটা খোলাসা করলেন তিনি। ধাতব পেপার ক্লিপ একটার সঙ্গে আরেকটা জোড়া দিয়ে দীর্ঘ একটি শিকল বানিয়েছেন তিনি। সেই শিকলেই গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের স্বীকৃতি মিলেছে। তিনি এখন এককভাবে সবচেয়ে দীর্ঘ পেপার ক্লিপ শিকল বানানোর রেকর্ডধারী। রেকর্ডের সনদ পেয়েই ছবিটি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন।

কে না জানে, আলগা একতাড়া কাগজকে শাসনবদ্ধ করে রাখতে পেপার ক্লিপের জুড়ি মেলা ভার। রাস্তার মোড়ের দোকান থেকে শুরু করে রাষ্ট্রপ্রধানদের কার্যালয়—পেপার ক্লিপ খুঁজে পাওয়া যাবে না, এমন জায়গা বোধ হয় নেই। ছোট সেই পেপার ক্লিপ ব্যবহার করেই কিনা বিশ্ব রেকর্ড! ইমরান শরীফ শিকল তৈরির মতো অদ্ভুত কাজটি করার উৎসাহ পেলেন কী করে?

একটার সঙ্গে আরেকটি পেপার ক্লিপ জোড়া লাগিয়েই বিশ্বের সর্বোচ্চ দৈর্ঘ্যের শিকলটি বানিয়েছেন ইমরান শরীফ। ছবি: সংগৃহীত
একটার সঙ্গে আরেকটি পেপার ক্লিপ জোড়া লাগিয়েই বিশ্বের সর্বোচ্চ দৈর্ঘ্যের শিকলটি বানিয়েছেন ইমরান শরীফ। ছবি: সংগৃহীত

প্রশ্ন শুনে ইমরানের ঝটপট উত্তর, ‘আসলে বিশ্ব রেকর্ড গড়ার স্বপ্ন থেকেই এটা করা। আমি এর আগে উদ্যোগ নিয়েছিলাম স্ট্যাপলারের পিন দিয়ে চেইন বা শিকল বানানোর। সেই কাজ যথাযথভাবে করা সম্ভব হলো না, তখন শুরু করলাম পেপার ক্লিপ দিয়ে চেইন বানানো।’

৩০ বছর বয়সী ইমরান শরীফ ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের আন্তর্জাতিক প্রোগ্রামে আইন বিষয়ে পড়ছেন। পাশাপাশি ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আইন পেশায় কাজ করেন। কাজের ফাঁকে প্রায় এক বছর ধরে শিকল তৈরির কাজ চালিয়ে যান। প্রতিদিন আধঘণ্টা-এক ঘণ্টা সময় বের করে বসে যেতেন পেপার ক্লিপ হাতে নিয়ে। তবে ছুটির দিনগুলোতে আরও বেশি সময় নিয়ে কাজ করতেন।

ইমরানের এ কাজ অল্পদিনের মধ্যে অযথা কাজ বলে পরিচিতি পেল নিকটজনদের কাছে। তিনি যেমনটি বলছিলেন, ‘আমার মা-বাবা বেঁচে নেই, অবিবাহিত বলে সাংসারিক ঝামেলাতেও পড়তে হয়নি। তবে পরিচিতরা হাসত আর পাগলামি বলে ভেবে নিত। আড়ালে অনেকে কটু কথাও বলত।’

তবে মানুষের কথায় দমে যাননি ইমরান। প্রতিদিন একটু একটু করে গড়ে চলেন শিকল। বিন্দু বিন্দু জলে যেমন মহাসাগর, তেমনি যেন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পেপার ক্লিপে ইমরানের শিকলের দৈর্ঘ্য দাঁড়ায় ২.৫২৭ কিলোমিটার। তাতেই যুক্তরাজ্যের আয়ারল্যান্ডের বেন মুনের ১.৯৯৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পুরোনো রেকর্ডকে টেক্কা দিয়ে বিশ্ব রেকর্ড নিজের করে নেন ইমরান।

একটার সঙ্গে আরেকটা পেপার ক্লিপ জোড়া দিয়ে শিকল বানানো—এ আর কঠিন কী কাজ! ইমরান শরীফ বলেন, ‘কঠিন নয়, ধৈর্যের কাজ।’ কারণ, পেপার ক্লিপগুলো খালি হাতেই জোড়া দিতে হয়েছে। কোনো যন্ত্রের সুবিধা নেওয়া যায়নি। আবার কতটুকু চেইন বানানো হলো, তার ভিডিও প্রতিদিন পাঠাতে হতো গিনেস কর্তৃপক্ষকে।

কথায় কথায় রেকর্ড গড়ার প্রক্রিয়া জানান ইমরান, ‘আমি রেকর্ডটি গড়ার জন্য ২০১৮ সালের জুন মাসে গিনেস কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করি। আবেদন করার তিন মাস পর অনুমোদন মেলে।’ তবে আনুষ্ঠানিক অনুমোদনের অপেক্ষায় বসে থাকেননি শরীফ, জুন মাস থেকেই শিকল বানানোর কাজটি শুরু করেন তিনি।

ইমরানের বানানো পেপার ক্লিপ শিকল
ইমরানের বানানো পেপার ক্লিপ শিকল

শিকল বানানো শেষ হলে এ বছর ১৫ ফেব্রুয়ারি মাপা হয়। ইমরান জানান, ‘এটি মাপা হয়েছিল ঢাকার উত্তরার ৪ নম্বর সেক্টরের ৯ নম্বর সড়কে। ভোর ৬টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত লেগেছিল পরিমাপ করতে, প্রমাণ হিসাব করতে হয়েছে ভিডিও, তুলতে হয়েছে ছবি।’ গিনেস কর্তৃপক্ষ সেসব যাচাই-বাছাই করে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করে ১১ জুলাই। গিনেস রেকর্ডসের স্বীকৃতির সনদ তাঁর ঠিকানায় এসে পৌঁছায় ২৯ জুলাই।

আড়াই কিলোমিটারের দৈর্ঘ্যের শিকলটি বানাতে না–জানি কত পেপার ক্লিপ লেগেছে! আগ্রহমিশ্রিত জিজ্ঞাসা শুনে ইমরান হাসলেন, তারপর বললেন, ‘পেপার ক্লিপ চেইনটি বানাতে ১ লাখ ১৩ হাজার ৭১৫টি পেপার ক্লিপ লেগেছে।’ এসব পেপার ক্লিপ তিনি সংগ্রহ করেছেন স্থানীয় স্টেশনারি দোকান থেকেই। পুরো কাজটি সম্পন্ন করতে খরচ করেছেন লাখখানেক টাকা।

বিশ্ব রেকর্ডের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা পাওয়ার পরই শিকলটি বিক্রি করে দেন ইমরান শরীফ। কারণটাও তিনি বলছিলেন, ‘চেইনটি এক জায়গায় করার পর এটি আর খোলা সম্ভব
নয়। তা ছাড়া ৩৮ কেজি ওজনের জিনিসটি বাসায় সংরক্ষণ করাও কঠিন। তাই রেকর্ড করার পর বিক্রি করে দিয়েছি।’

একটি রেকর্ড গড়েই থামতে চান না ইমরান শরীফ। তিনি পরিকল্পনা করছেন নতুন আর অভিনব কোনো বিষয়ে রেকর্ড গড়ার, যা হবে বাংলাদেশের সংস্কৃতি–সম্পর্কিত।

গিনেস ওয়ার্ল্ড
গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস
গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস
রেকর্ডস বিচিত্র বিষয়ে রেকর্ড সংরক্ষণ করার আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বব্যাপী পরিচিত তাদের গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস নামে রেকর্ড নথিবদ্ধ করার বার্ষিক প্রকাশনার জন্য। ১৯৫১ সালে প্রথম প্রকাশিত হয় এই রেকর্ড সংরক্ষণের বইটি। ২০০০ সালে পর্যন্ত প্রকাশনাটি বের হতো দ্য গিনেস বুক অব রেকর্ডস নামে। বিশ্বের ২৩টি ভাষায় প্রকাশিত বই ছাড়াও প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে প্রতিনিয়ত রেকর্ড হালনাগাদ করা হয়। এ পর্যন্ত প্রায় ৪৭ হাজার বিষয়ের ওপর রেকর্ড সংরক্ষণ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। কোনো রেকর্ড নতুন করে গড়ার ক্ষেত্রে প্রথমে প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আবেদন করতে হয়। এরপর আবেদন গৃহীত হলে রেকর্ডটি গড়ার নিয়মনীতি পাঠানো হয়। এসব নিয়মনীতি মেনে রেকর্ড গড়ার পদক্ষেপ নিতে হয়। পদে পদে গিনেস রেকর্ড কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হয়। এরপর যথাযথ তথ্য-উপাত্ত প্রমাণ হিসেবে গিনেস রেকর্ড কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাতে হয়। গৃহীত হলে তবেই মেলে স্বীকৃতি, সনদ। স্বীকৃতি মেলে দুটি উপায়ে—সাধারণ প্রক্রিয়ায় স্বীকৃতি এবং অগ্রাধিকারভিত্তিক স্বীকৃতি। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে স্বীকৃতি বলতে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই (স্বাভাবিক নিয়মে তিন মাস প্রয়োজন হয়) স্বীকৃতি পাওয়া। এ জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হয়। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস ওয়েবসাইটে লগইন করে ‘বাংলাদেশ’ নামে বিভিন্ন বিভাগে ৮৯টি রেকর্ডের খোঁজ মেলে। তবে এর মধ্যে ব্যক্তিগত ও দলগত রে্কর্ড রয়েছে মাত্র ১৭টি। অন্য রেকর্ডগুলো গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষ প্রাতিষ্ঠানিকভাবে যোগ করেছে। এই রেকর্ডগুলোর মধ্যে রয়েছে সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশ, জাতিসংঘে সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী বাহিনী প্রেরণকারী দেশের মতো স্বীকৃতিগুলো।

যুগে যুগে পেপার ক্লিপ
এক সময় ফিতা দিয়ে বাঁধা হতো কাগজের ওপরের বাঁ অংশ। সহজে খোলা ও বাঁধার জন্য প্রক্রিয়াটি কঠিন ছিল। সেই কাজটি সহজ করতে মানুষ নানা চেষ্টা করে। সেই ধারাবাহিকতায় জন আয়ারল্যান্ড হাউ (১৭৯৩-১৮৭৬) নামের যুক্তরাষ্ট্রের এক চিকিৎসক সুচালো পিন উৎপাদনের যন্ত্র উদ্ভাবন করেন। সেলাইয়ের কাজে এসব পিন ব্যবহারের উদ্দেশ্য থাকলেও অনেকে এলোমেলো কাগজের তাড়া শৃঙ্খলাবদ্ধ করতে ব্যবহার করতেন।

১৮৬৭ সালে স্যামুয়েল ফে নামের (১৮৫৬-১৯৫৩) যুক্তরাজ্যের এক রেলওয়ে কর্মী একধরনের পেপার ক্লিপ উদ্ভাবন করেন। স্যামুয়েল ফের আবিষ্কৃত ক্লিপ ছিল বর্তমান ব্যবহৃত পেপার ক্লিপ থেকে অনেকটাই আলাদা। কোনো রকম পেটেন্ট ছাড়াই ১৮৭০ সালের দিকে ‘দ্য জেম প্রোডাকশন কোম্পানি’ এই পেপার ক্লিপটির উৎপাদন শুরু করলে এর বাণিজ্যিক নাম দাঁড়ায় জেমস ক্লিপ। ১৮৮৯ সালে উইলিয়াম ডি মিডলব্রুক নামের আরেক ব্যক্তি জেমস ক্লিপকে আধুনিক রূপ দেন। মিডলব্রুকের নকশাটি ছিল এখনকার পেপার ক্লিপের মতোই।

১৮৮৯ সালেই মিডলব্রুকের ক্লিপের পেটেন্ট কিনে নেয় ‘কাশম্যান অ্যান্ড ডেনিসন’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। তাদের বিপণন সফলতায় বিপুল জনপ্রিয়তা পায় ক্লিপটি। ১৮৯৯ সালে আরও একধরনের পেপার ক্লিপ উদ্ভাবন করেন নরওয়েজিয়ান উদ্ভাবক ইয়োহান ভেইলার। নরওয়েতে সে সময় পেটেন্ট আইন না থাকায় তিনি তাঁর উদ্ভাবনের নকশার পেটেন্ট পান জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে। এভাবে যুগে যুগে অনেক মেধাবী উদ্ভাবকের হাতেই পেপার ক্লিপ আধুনিক রূপ পেয়েছে।

সূত্র: হিস্ট্রি ও থটকো ডটকম

পেপার ক্লিপে আরও কিছু গিনেস রেকর্ড

১. বিশ্বের অতিকায় পেপার ক্লিপ

শুরুতেই বলে নিই, রাশিয়ার স্টেপোভিক এভেনি যে পেপার ক্লিপ বানিয়েছেন, আদতে তা এখন একটি ভাস্কর্য। স্টেইনলেস স্টিল দিয়ে তৈরি মস্ত এই পেপার ক্লিপের ওজন ৫৩০ কেজি। ৩০ ফুট ৫ ইঞ্চি উচ্চতা আর ৮ ফুট ১১ ইঞ্চি প্রশস্তের পেপার ক্লিপটি দিয়ে আর যা-ই হোক, কাগজ একত্র করে বেঁধে রাখার কাজ সম্ভব নয়। স্টেপোভিকের বানানো এই পেপার ক্লিপই ২০১০ সালের ২৯ মে থেকে বিশ্বের অতিকায় পেপার ক্লিপের গিনেস রেকর্ড দখলে রেখেছে।

২. এককভাবে ২৪ ঘণ্টায় বানানো দীর্ঘতম পেপার ক্লিপ শিকল

এককভাবে ২৪ ঘণ্টায় দীর্ঘতম পেপার ক্লিপ দিয়ে শিকল বানানোর বিশ্ব রেকর্ডটি যুক্তরাষ্ট্রের ড্যান মেয়ারের। তিনি গিনেস রেকর্ডটি গড়েন ২০০৪ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি, যা আজ পর্যন্ত কেউ ভাঙতে পারেননি। পেপার ক্লিপ দিয়ে মাত্র ২৪ ঘণ্টায় তিনি ৫ হাজার ৩৪০ ফুট দীর্ঘ শিকলটি বানিয়েছিলেন। যে শিকল তৈরিতে প্রয়োজন হয়েছিল ৫৪ হাজার ৩০টি পেপার ক্লিপ।

৪. বিশ্বের দীর্ঘকায় পেপার ক্লিপনির্মিত ভাস্কর্য

ইতালিয়ান শিল্পী পিয়েত্রো ডি’অ্যাঞ্জেলো সিরিজ ভাস্কর্যের কাজ করেছিলেন ২০০৮ সালে। এ শিল্পকর্মের কাজে তিনি ব্যবহার করেন পেপার ক্লিপ। সেই সিরিজের সবচেয়ে দীর্ঘকায় ভাস্কর্যের নাম পোল ড্যান্স। বিশেষ এই নাচের ভঙ্গিতে এক নারীর অবয়ব ফুটিয়ে তুলেছেন শিল্পী। সিরিজের ভাস্কর্যগুলোর একটির সর্বোচ্চ উচ্চতা ছিল ৭ ফুট ৫ ইঞ্চি। প্রায় তিন মাসের চেষ্টায় এটি বানিয়েছিলেন পিয়েত্রো। এই ভাস্কর্যের মাধ্যমেই গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে বিশ্বের দীর্ঘকায় পেপার ক্লিপনির্মিত ভাস্কর্যের স্বীকৃতি পান পিয়েত্রো।