রেস্তোরাঁ ব্যবসায় এগিয়ে চলছেন দুই নারী

এডিলন কুহু হোর ও মারেফা আক্তার।  ছবি: প্রথম আলো
এডিলন কুহু হোর ও মারেফা আক্তার। ছবি: প্রথম আলো

রাজধানীর দক্ষিণ বনশ্রীর প্রধান সড়কে রেস্তোরাঁ ‘অফ বিট’ এ কাঠের চেয়ার–টেবিলের পাশাপাশি রয়েছে দোলনা এবং তিনটি রিকশা। রিকশার আদলে তৈরি বসার জায়গা, যেগুলো উজ্জ্বল রঙের রিকশার হুড দিয়ে বানানো। অনেকটা রিকশাতেই বসে থাকার মতো। একটি দেয়ালে বিশাল আকৃতির চার্লি চ্যাপলিন এবং আরেকটি দেয়ালে মেরিলিন মনরোর দেয়ালচিত্র। 

১ হাজার ২০০ বর্গফুট আয়তনের এই রেস্তোরাঁর মালিক মোট চারজন। দুজন নারী—এডিলন কুহু হোর ও মারেফা আক্তার। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে যাত্রা শুরু করে অফ বিট। এডলিন আগে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ডেপুটি ব্র্যান্ড ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। নিজেই কিছু করার সিদ্ধান্ত নিয়ে চাকরিটা ছেড়ে দেন। এক বছরের মাথায় চারজন মিলে রেস্তোরাঁটি প্রতিষ্ঠা করেন। এডলিন জানালেন, ৪০ লাখ টাকা পুঁজি নিয়ে তাঁরা শুরু করেছিলেন। 

এডলিন বললেন, ‘প্রথাগত রেস্তোরাঁ আমরা করতে চাইনি। আবার গুলশান-বনানী-ধানমন্ডি এলাকায় রেস্তোরাঁ করার মতো পুঁজিও আমাদের ছিল না। তাই দক্ষিণ বনশ্রীতেই শুরু করলাম। আর আমার ছাড়া বাকি অংশীদারদের বাসা দক্ষিণ বনশ্রীর কাছেই।’ এডলিনের বাড়ি রাজাবাজারে। সেখান থেকে প্রতিদিন তিনি রেস্তোরাঁয় যান। 

 মারেফা আক্তার একই সঙ্গে গৃহিণী ও উদ্যোক্তা। ছোট দুই সন্তান ও সংসার সামলান, আবার ব্যবসাও দেখেন। বললেন, ‘শুরু করেছিলাম ৫০০ বর্গফুটের রেস্তোরাঁ দিয়ে। ব্যবসা ভালো হওয়ায় এক বছরের মধ্যে রেস্তোরাঁ সম্প্রসারণ করতে হয়। ব্যবসা শুরুর এক বছরের মাথায় আমাদের পুঁজি উঠে আসে।’ এখন এই রেস্তোরাঁয় প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২০০ গ্রাহক আসেন। বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার গ্রাহকের সংখ্যা বেশি থাকে। আর বিভিন্ন উৎসবের দিনে গ্রাহকের সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়ে যায় বলে তাঁরা জানালেন।

রেস্তোরাঁয় ৪৫ ধরনের চায়নিজ, ইতালীয় ও থাই খাবার পাওয়া যায়। খাবারের মান এবং অন্দরসজ্জা গ্রাহকদের টানছে। আকর্ষণীয় অন্দরসজ্জা রেস্তোরাঁর উদ্যোক্তারাই করেছেন। এখানে একসঙ্গে ৫০ থেকে ৫৫ জন ভোজন রসিক বসতে পারেন। প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত খোলা থাকে অফ বিট।

 এডলিন বললেন, ‘উদ্যোক্তা হওয়ার পর নিজেকে স্বাধীন মনে হয়। আগের জীবনটা ছিল ধরাবাঁধা নিয়মের মধ্যে। ভেবে ভালো লাগে, আমাদের কারণে আরও কিছু মানুষ নিজের পায়ে দাঁড়ানোর সুযোগ পাচ্ছেন।’