আরও নারী বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া উচিত

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নারী বিচারকের সংখ্যা বাড়ছে। ৪৫ বছর আগে নারী বিচারক ছিলেন মাত্র একজন। বর্তমানে নারী বিচারকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৩০–এ। এর মধ্যে অধস্তন আদালতে আছেন ৫২২ জন বিচারক। আর সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি হিসেবে কর্মরত রয়েছেন আটজন নারী।

সুপ্রিম কোর্ট ও আইন মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, দেশের অধস্তন এবং সুপ্রিম কোর্টে (আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগ) মোট বিচারকের সংখ্যা এখন ২ হাজার ২৪। অর্থাৎ শতকরা হিসাবে বিচারকের ২৬ শতাংশ হলেন নারী।

বাংলাদেশের প্রথম নারী বিচারক ও বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা বললেন, নারী বিচারকের সংখ্যা বেড়েছে। দক্ষতার সঙ্গে তাঁরা দায়িত্ব পালন করছেন। তবে হাইকোর্টে আরও বেশি নারী বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া উচিত। বিচারপতি হওয়ার যোগ্যতা রাখেন, এমন অনেক নারী বিচারক অধস্তন আদালতে কর্মরত আছেন। আছেন যোগ্য নারী আইনজীবীও।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বললেন, ‘নারী বিচারকের সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি বিচারকাজেও নারীরা ভালো করছেন। তিনিও হাইকোর্টে আরও বেশি নারী বিচারপতি নিয়োগ দেওয়ার কথা বললেন। বর্তমানে হাইকোর্টে বিচারপতির সংখ্যা ১০০। আপিল বিভাগে আছেন সাতজন বিচারপতি।

বাংলাদেশের প্রথম নারী বিচারক নাজমুন আরা সুলতানা। ১৯৭৫ সালে নারী বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। আর ২০০০ সালে নাজমুন আরা সুলতানা হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। আর ২০১১ সালে আপিল বিভাগে নিযুক্ত হন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা। ২০১৭ সালে তিনি অবসরে যান।

বর্তমানে আপিল বিভাগে কর্মরত রয়েছেন বিচারপতি জিনাত আরা। হাইকোর্ট বিভাগে কর্মরত সাত নারী বিচারপতি হলেন সালমা মাসুদ চৌধুরী, ফারাহ মাহবুব, নাইমা হায়দার, কৃষ্ণা দেবনাথ, কাশেফা হোসেন, ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি কাজী জিনাত হক।

আইন মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, বর্তমানে নিম্ন আদালতে বিচারকের সংখ্যা ১ হাজার ৯১৭। এর মধ্যে পুরুষ বিচারকের সংখ্যা ১ হাজার ৩৯৫, আর নারী বিচারকের সংখ্যা ৫২২। জেলা জজ পদমর্যাদায় বর্তমানে ৪০ জন নারী কর্মরত রয়েছেন। অতিরিক্ত জেলা জজ পদে ৫৫ জন, যুগ্ম জেলা জজ পদে ৭০ জন, জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ পদে ১৭৩ জন এবং সহকারী জজ হিসেবে দেশে ১৮৪ জন নারী কর্মরত রয়েছেন।

বাংলাদেশ মহিলা জজ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি জ্যেষ্ঠ জেলা জজ তানজীনা ইসমাইল বলেন, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ দিয়ে নারীরা বিচারক হিসেবে নিয়োগ পাচ্ছেন। নিয়োগ পেয়ে বিচারক হিসেবে দক্ষতার পরিচয় দিয়ে নারীরা পদোন্নতি পাচ্ছেন। তবে মামলার তুলনায় বিচারকের সংখ্যা অনেক কম। আরও বেশি বিচারক নিয়োগ দেওয়া উচিত।

বাংলাদেশের বিচার বিভাগে কর্মরত নারী বিচারকদের মানোন্নয়ন, বৈষম্য দূরীকরণ, অধিকার রক্ষা ও কল্যাণের জন্য কাজ করছে বাংলাদেশ মহিলা জজ অ্যাসোসিয়েশন। এটি অরাজনৈতিক, অলাভজনক ও কল্যাণমূলক সংগঠন।

সাবেক আইনমন্ত্রী আইনজীবী শফিক আহমেদ বলেন, নারী বিচারকের সংখ্যা বাড়লেও উচ্চ আদালতে নারী বিচারপতির সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। উচ্চ আদালতে নারী বিচারপতির সংখ্যা বাড়ানো উচিত।