আমার আমিকে বাংলায় খুঁজে পাই

এখনকার তরুণেরা অনলাইনেও প্রকাশ করেন দেশের প্রতি তাঁদের ভালোবাসা৷ মডেল: তুষার৷
এখনকার তরুণেরা অনলাইনেও প্রকাশ করেন দেশের প্রতি তাঁদের ভালোবাসা৷ মডেল: তুষার৷

প্রজন্মের নতুনেরা দেশকে ভালোবাসবে, এগিয়ে নেবে—এমন প্রত্যাশা করেন সবাই৷ নানা কারণে যখন তরুণেরা আশাহত করেন, তখন অনেকেই ভাবেন, এই তরুণদের দিয়ে কিছু হবে? তবে তরুণেরাই কিন্তু আবার বদলে দেন সবকিছু৷ হাতে থাকা মুঠোফোনটি দিয়ে দারুণ সব ছবি তোলেন আর শেয়ার করে দেন ফেসবুক কিংবা টুইটারে৷ হয়তো গিয়েছেন বন্ধুরাসহ ঘুরতে দূর পাহাড়ে, যেখানে দেখা যায় বাংলাদেশের নৈসর্গিক দৃশ্য৷ দেরি না করেই মুঠোফোন কিংবা ক্যামেরা খুলে ক্লিক...ক্লিক...ক্লিক৷ আর ইন্টারনেটের সুবিধা ব্যবহার করে সঙ্গে সঙ্গেই শেয়ার করেন সবার সঙ্গে৷ এমনই তরুণদের একদল গড়ে তুলেছে বাংলাদেশ ৩৬০ নামের একটি ওয়েবসাইট (www.bangladesh360.net)৷ দারুণ সুন্দর আমাদের এ দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ৩৬০ ডিগ্রিতে ঘরে বসেই দেখতে এমন উদ্যোগ৷ এ উদ্যোগের অন্যতম উদ্যোক্তা ফারসিদ রায়হান বলেন, ‘দেশকে ভালোবাসি, তাই দেশের সৌন্দর্য সবার মাঝে তুলে ধরতেই এমন উদ্যোগ৷’ তরুণ ফারসিদই নন, ক্রিকেটে যখন আমরা হুংকার দিয়ে জয় ছিনিয়ে িনই, স্টেডিয়ামজুড়ে তখন বাংলাদেশের জয়গান৷ লাল-সবুজের পতাকা গায়ে জড়িয়ে ছবি তুলেই শেয়ার হতে থাকে ইন্টারনেট-দুনিয়ায়৷
বিশেষ বিশেষ দিবসগুলোয়ও কিন্তু তরুণদের এমন কার্যক্রম দেখা যায়৷ একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, ২৫ মার্চ কিংবা ষোলোই ডিসেম্বরেও একই কাজ করে তরুণের দল৷ ফেব্রুয়ারি এলেই সবাই নানা অক্ষরে সাজিয়ে নেন নিজের প্রোফাইল৷ গুগল ডুডলে দেশকে তুলে ধরতে তরুণদের কত চেষ্টা৷ আবার, যখন দেশের মেধাবী সন্তানেরা দূর আকাশে চলে যান কিংবা দেশ হারায় সেরা ব্যক্তিদের, তখন শোকে মুহ্যমান তরুণেরা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম, ব্লগে নিজেদের প্রোফাইলে ছবি, কাভার কালো করে রাখেন৷ বর্তমানে সারা বিশ্বে বাংলা ভাষাভাষীদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে আছে বাংলা ব্লগগুলো৷ বাংলা ব্লগের ব্লগারদের মধ্যেও রয়েছে ছবি তোলার বিশেষ দল৷ এ দলের সদস্যরা শুধু লেখাই নয়, লেখার পাশাপাশি ছবি তুলে সেসব ছবি পোস্ট করেন৷ দারুণ ভালো লাগা থেকেই এ কাজটি করে যান তাঁরা৷ যখন প্রয়োজন হয়, প্রতিবাদের তখনো আমাদের প্রিয় জাতীয় পতাকাকে শক্ত মুঠিতে ধরে দেশের জন্য এক পায়ে দৃঢ়প্রত্যয়ে দাঁড়িয়ে থাকার কথা জানান দেয় তরুণ প্রজন্ম৷ বলে দেয়, িভত নন এ তরুণেরা৷ আবার যখন উচ্ছ্বাস প্রকাশের সুযোগ হয়, সেটিও জানান দেয় সারা দেশ মিলে একসঙ্গে৷ ‘এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি, সকল দেশের রানী সে যে আমার জন্মভূমি’ গানের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে চলতে থাকে প্রচারণা৷
শুধু যে ছবি তুলে সেটি সামাজিক যোগাযোগ আর ব্লগে শেয়ার, তা কিন্তু নয়; দেশের কথা, দেশের ছবি তুলে ইন্টারনেট সবচেয়ে বড় বিশ্বকোষ উইকিপিডিয়ায়ও দিয়ে দেন অনেকেই৷ নিজের ছবি নিজের নামেই থাকে এ বিশ্বকোষে৷ তবে সেটি ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বে৷ যত বেশি এসব কাজ হবে, দেশের দারুণ ছবি ইন্টারনেটে ছড়াব, ততই জানবে দেশের কথা সারা বিশ্ব৷ প্রতিদিন যখন কিছু দরকার হলেই ঢুঁ মারতে হয় গুগলে, তেমনি বাংলাদেশ নিয়ে কিছু জানতে চাইলে সবাই কিন্তু গুগলেরই সাহায্য নিয়ে থাকেন৷ দেশের দারুণ সব সৌন্দর্য তুলে ধরতে সবার আগে দেশকে সবার মাঝে তুলে ধরা৷ সেটির জন্য ছবি, নিজের ভালো লাগা আর দেশের ভালো সব খবর ছড়িয়ে দিতে হবে সবখানে৷ দামাল তারুণ্য কিন্তু সেটি করেই যাচ্ছে, রুখবে তাদের কে?