যদি এমন হয়

সব শিশু সুস্থ থাকুক। এমন আনন্দে থাকুক। এমনটাই চাই। মডেল: টিয়ারা ও রাজেশ্বরী
সব শিশু সুস্থ থাকুক। এমন আনন্দে থাকুক। এমনটাই চাই। মডেল: টিয়ারা ও রাজেশ্বরী

শিশুর স্বাস্থ্য নিয়ে মা-বাবার চিন্তার শেষ নেই। শিশুর ভালোমন্দের ওপরই যেন নির্ভর করে তাঁদের পৃথিবী। শিশুর একটু অসুখ করলেই ভয় পেয়ে যান তাঁরা। এর মধ্যে কোনো কারণে শিশুর যদি হঠাৎ খিঁচুনি হয়, তাহলে তাঁরা পড়ে যান মারাত্মক দুশ্চিন্তায়। শিশুর শরীরে কাঁপুনি হলেই কি তা খিঁচুনি? নাকি অন্য কিছু?
এ প্রসঙ্গে কথা বলেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু স্নায়ুরোগ বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে শিশুর খিঁচুনি হতে পারে, তবে শরীরে কাঁপুনি উঠলেই তা খিঁচুনি নাও হতে পারে।’
কেন হয় শিশুর খিঁচুনি?
জন্মের সময় বা জন্মের আগে মস্তিষ্কে অক্সিজেনের অভাব, মস্তিষ্কে আঘাত, মস্তিষ্কে জন্মগত কোনো ত্রুটি, মৃগীরোগ, মস্তিষ্কের টিউমার অথবা মস্তিষ্ক বা এর আবরণীতে কোনো জীবাণুর সংক্রমণের কারণে শিশুর খিঁচুনি হতে পারে। জ্বর হলেও অনেক সময় শিশুর খিঁচুনি হতে পারে। তবে জ্বরের কারণে শিশুর শরীরে কাঁপুনিও হতে পারে, আবার হঠাৎ কোনো কারণে ভয় পেলেও শিশুর শরীরে কাঁপুনি হতে পারে; কিন্তু কাঁপুনি হলেই সব সময় তা খিঁচুনি নয়।
কী করে বুঝবেন শিশুর খিঁচুনি হচ্ছে?
অস্বাভাবিক কাঁপুনির পাশাপাশি শিশুর হাত-পা শক্ত হয়ে যায়, চোখ উল্টে যায়, শরীরে প্রচণ্ড ঝাঁকুনি হয়। অজ্ঞান হয়েও যেতে পারে। অনেক সময় শিশুর মুখ দিয়ে ফেনার মতো কিছু বের হতে পারে। শিশুর জিহ্বায় কামড় লেগেও যেতে পারে। আবার অনেক সময় এ অবস্থায় শিশুর প্রস্রাব বা পায়খানা হয়ে যেতে পারে।
হঠাৎ শিশুর খিঁচুনি হলে কী করবেন?
শিশুকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিন। ধারালো কোনো জিনিস বা গরম পানি আশপাশে থাকলে সরিয়ে নিন। তাকে মাথা একদিকে কাত করে শুইয়ে দিন। পাঁচ মিনিট সময় ধরে খিঁচুনি হলে তাকে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে খিঁচুনি যত সময় ধরেই হোক না কেন, খিঁচুনি থেমে গেলে অবশ্যই তাকে নিয়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।
খিঁচুনি হচ্ছে এ অবস্থায় যা করা যাবে না
যখন শিশুর খিঁচুনি হচ্ছে, তখন শিশুর মাথায় পানি দেওয়া, তার হাত-পা টানা, তার মুখে কিছু ঢোকাতে চেষ্টা করা বা তার আশপাশে হইচই করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
হতে পারে জটিলতা
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়কাল পর্যন্ত ওষুধ খাওয়াতে হবে শিশুকে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে খিঁচুনি ভালো হয়ে যাওয়ার পরও চিকিৎসক ওষুধ সেবন করতে বলতে পারেন। তাই মানতে হবে। কারণ চিকিৎসা সঠিকভাবে না হলে খিঁচুনির কারণে অনেক সময় শিশুর মানসিক বিকাশ বাধাপ্রাপ্ত হতে পারে।
গ্রন্থনা: রাফিয়া আলম