শীতে শিশু সুস্থ থাকুক

শীতের সময় শিশুরা বাইরে খেলতে যাওয়া আগে সুতির ফুলহাতা পোশাক পরাতে হবে। ছবি: অধুনা
শীতের সময় শিশুরা বাইরে খেলতে যাওয়া আগে সুতির ফুলহাতা পোশাক পরাতে হবে। ছবি: অধুনা

বছর শেষ হয়ে আসছে। শীতও পড়ছে। স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষাগুলোও শেষ প্রায়। লম্বা একটা ছুটি সামনে। স্কুলের তাড়া নেই, পড়াশোনার কড়াকড়িও কমছে কিছুটা। এ সময় দিনদুপুরে খেলতে নেমে যাবে শিশু। বিকেলটাও তাদের। এটাই তো স্বাভাবিক। শীতের এই দিনগুলোতে শিশুকে খেলতে বাধা না দিয়ে, উদ্বুদ্ধ করাই উচিত। তবে শিশুর প্রতি এ সময় খানিকটা যত্নআত্তি বাড়াতে হবে। এতে শিশুর মনটাও ভালো থাকবে, শারীরিক গঠনেও শক্তপোক্ত হবে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের শিশুস্বাস্থ্য বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী বলেন, ‘এক ঋতু থেকে অন্য ঋতুতে খাপ খাওয়াতে শিশুর কিছুটা সময় লাগে। শীতের শুরুতে তাই শিশু কিছু রোগ-ব্যাধিতে ভুগতে পারে। তবে একটু সচেতন হলে এগুলো সহজেই এড়ানো যায়।’
শিশু যখন বাইরে খেলতে যায় তখন খুব বেশি গরম ও ভারী কাপড় পরানোর প্রয়োজন নেই। এ সময় আপনার বাচ্চার জন্য বেছে নিন সুতির নরম ও মসৃণ কাপড়। বিকেলে বের হলে সুতির ফুলহাতা পোশাক পরাতে পারেন। তবে তা যেন ঢিলেঢালা হয়। আঁটসাঁট কাপড়ে শরীরের ঘাম আটকে থেকে শিশুর ঠান্ডা লেগে যেতে পারে।
খেলাধুলার সময় সর্দি-কাশির মতো কিছু ছোঁয়াচে রোগ ছড়ানোর শঙ্কা থাকে। ময়লা হাতে মুখ কিংবা মুখমণ্ডল স্পর্শ না করতে স্মরণ করিয়ে দিন। শিশুর হাতের নখ সব সময় কেটে ছোট রাখতে সাহায্য করুন। যাতে হাত মুখে দিলেও নখে আটকে থাকা জীবাণু শরীরে প্রবেশ করতে না করে।
শিশুর ত্বক খুব সংবেদনশীল, যা খুব সহজেই অ্যালার্জি বা অন্যান্য চর্মরোগে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা থাকে। কালের পরিবর্তনে এর প্রবণতা বেড়ে যায় দ্বিগুণের বেশি। তাই তার ত্বকের যত্নে শীতের শুরুর সময়টা বেশি যত্নশীল হতে হবে। বাচ্চাকে পরিষ্কার ও কুসুম গরম পানিতে গোসল করানো ভালো। শিশু একান্তই গোসল করতে না চাইলে ভেজা কাপড় দিয়ে ভালো করে শরীর মুছে দিন। এতে শিশুর শরীরে ছত্রাক আক্রমণের শঙ্কা কমে যাবে। গোসল শেষে ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে শিশুদের উপযোগী ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। চাইলে নারকেলের তেলও ব্যবহার করতে পারেন।
এ সময়টায় মাঠঘাট শুকিয়ে প্রচুর ধুলাবালু থাকে বাইরে। শিশুর বাইরে কিংবা খেলতে গিয়ে চুলে আটকে প্রচুর ধুলা নিয়ে ফেরে ঘরে। তাই নিয়মিত চুল পরিচ্ছন্ন রাখতে শিশুকে উৎসাহিত করতে হবে। দিনের বেলায় জানালা খুলে রোদ ও বাতাস ঘরে ঢুকতে দিতে হবে। শিশুর ঘরে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস ঢোকার ব্যবস্থা করে দিন। স্যাঁতসেঁতে ঘর রোগ-জীবাণু ডেকে আনে। যত্নআত্তি তো হলো, শিশুর খাবারের দিকেও নজর দিন। শীতকালীন সবজিগুলো খাওয়াতে হবে শিশুকে। এগুলো শিশুর পুষ্টি পূরণের সঙ্গে সঙ্গে রোগ প্রতিরোধব্যবস্থাও গড়বে।