বিশ্বসেরা আইবিএ

পুরস্কারের স্মারক হাতে অতিথিদের সঙ্গে লামিয়া, তাসফিয়া, শাফিনাজ ও সামিহা
পুরস্কারের স্মারক হাতে অতিথিদের সঙ্গে লামিয়া, তাসফিয়া, শাফিনাজ ও সামিহা

বাংলাদেশের তরুণেরাও সুযোগ পেলে বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে পারেন নিজেদের মেধার ঝান্ডা, ওড়াতে পারেন লাল-সবুজের পতাকা। পর্তুগালে আয়োজিত ‘থট ফর ফুড’ বা টিএফএফ প্রতিযোগিতায় ইউরোপ, আফ্রিকা ও এশিয়ার ৫১টি দেশের তিন শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয়কে পেছনে ফেলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএর ‘ইনোভিশন’ দল। এর সদস্যরা হলেন লামিয়া আনোয়ার, রুবাইয়াত তাসফিয়া রহমান, শাফিনাজ হোসেন ও সামিহা জাকের। চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ‘ইনোভিশন’ পেয়েছে ১০ হাজার মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় আট লাখ টাকা)। 
১৩ ও ১৪ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত এই বিশ্ব প্রতিযোগিতায় প্রথম রানারআপ হয়েছে সুইডেনের দল ‘ফুপু ফুড পাউডার’ এবং দ্বিতীয় রানারআপ ভারতের আইআইটি মুম্বাইয়ের দল ‘আহার’।
দেশে ফেরার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কথা হয় বিজয়ীদের সঙ্গে। লামিয়ার কাছে এ প্রতিযোগিতার অভিজ্ঞতার কথা শুনতে চাইলে তিনি চোখ বন্ধ করে ফেলেন। তারপর বলেন, ‘চোখ বন্ধ করলেই আমি প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বের দিনটি স্পষ্ট দেখতে পাই। হলভর্তি সহস্রাধিক তরুণ করতালি দিয়ে আমাদের অভিনন্দন জানাচ্ছে আর মুখে বলছে, বাংলাদেশ…বাংলাদেশ। দৃশ্যটা চোখে ভাসে আর গর্বে বুকটা ভরে যায়।’
শাফিনাজ শোনালেন তাঁদের প্রকল্পের মূল বিষয় সম্পর্কে। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রকল্পের নাম ছিল “ফুডফ্রেশ”। আমরা দেখিয়েছি কীভাবে ফরমালিন ছাড়াই পানির বাষ্পায়নকে কাজে লাগিয়ে ফলমূল ও শাকসবজি বেশি সময় তাজা রাখা যায় এবং পরিবহনের সময় পচন রোধ করা যায়।’
সামিহা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল ইউনিভার্সিটি যুক্তরাজ্যের ব্রিস্টন ইউনিভার্সিটি, অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব মেলবোর্ন, সুইডেনের লুন্ড ইউনিভার্সিটি—এ রকম অনেক প্রখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসা তেরো শ শিক্ষার্থীর মিলনমেলা বসেছিল পর্তুগালে। এত এত মেধাবী শিক্ষার্থীর মাঝে বাংলাদেশের পরিচয় তুলে ধরতে পেরেছি, এর চেয়ে সুখকর অভিজ্ঞতা আর কী হতে পারে!’
আবার ফিরে আসি লামিয়ার কাছে। শুনতে চাই তাঁদের স্বপ্নের কথা। লামিয়া বলেন, ‘আমরা যেতে চাই আরও অনেক দূর। প্রতিযোগিতায় পাওয়া অর্থ আমাদের প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে চাই। আমরা এমন একটি খাদ্যব্যবস্থা তৈরি করতে চাই, যেখানে থাকবে না ফরমালিন নামক কোনো বিষের অস্তিত্ব।’