হাসপাতালটা আরও বড় করতে চাই

সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার দুর্গম চর নাটুয়ারপাড়ায় একটি হাসপাতাল গড়েছিলেন ফুলেআরা ইমাম। তাঁর এই অসামান্য উদ্যোগের গল্প প্রকাশিত হয় ২০১২ সালের ২ জুন ছুটির দিনের পাতায়। পরের বছর ফুলেআরা পান ‘সিঙ্গার-চ্যানেল আই কিংবদন্তি’ পুরস্কার। এবার ৮ মার্চ নারী দিবসে ফুলেআরা পেয়েছেন ‘রাঁধুনী কীর্তিমতী সম্মাননা ২০১৪’।

ফুলেআরা ইমাম
ফুলেআরা ইমাম

এখন আপনার হাসপাতালের কার্যক্রম আরও বড় হয়েছে...
হ্যাঁ, প্রথম আলোয় আমার হাসপাতালের কথা ছাপা হওয়ার পর দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষজন খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেন। অনেকেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। এটা আমার জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি।
আপনি কী ধরনের সম্মাননা ও সহযোগিতা পেয়েছেন?
হাসপাতালের উন্নয়নের জন্য কিছু অর্থ সহযোগিতা পেয়েছি। জরুরিভাবে রোগী আনা-নেওয়ার জন্য আমরা একটা স্পিডবোট কিনতে পেরেছি। হাসপাতালের উন্নয়ন ও রোগীদের সেবার সরঞ্জাম কিনেছি বেশ কিছু। দেশের নামকরা একটি পোশাক নির্মাতাপ্রতিষ্ঠানের মালিক বেশ কিছু বিছানা ও যন্ত্রপাতি কিনে দিয়েছেন হাসপাতালের জন্য। এ ছাড়া তাঁরা চিকিৎসক খরচ ও ওষুধ কেনা বাবদ মাসে ৫০ হাজার টাকা দেন।
আমি পেয়েছিলাম ‘সিঙ্গার-চ্যানেল আই কিংবদন্তি’ পুরস্কার। এ বছর পেয়েছি রাঁধুনী কীর্তিমতী পুরস্কার।
হাসপাতাল গড়ার ভাবনা কীভাবে মাথায় এল?
আমাদের চরে বড় ধরনের কোনো হাসপাতাল নেই। কিন্তু অসুখ-বিসুখ তো আছে। বিশেষ করে শিশুদের নিয়ে বড় সমস্যায় পড়েন বাবা-মা। আর রাতে কেউ অসুস্থ হলে যমুনা নদী পার হয়ে থানা সদরের হাসপাতালে যাওয়ার মতো ব্যবস্থা নেই। কারণ, রাতে নৌকা চলে না। আমার ছোট ভাই নিউমোনিয়ায় ভুগে মারা গেছে। তাই বিয়ের পর থেকেই আমার চিন্তা ছিল চরবাসীর জন্য কিছু করার।
শুরুতে এত কিছু মাথায় ছিল না। বিয়ের পর সংসারের কাজের জন্য স্বামী কাজের লোক রাখতে বলেন। আমি কাজের লোক না নিয়ে সেই টাকা জমিয়ে রাখি। তারপর একসময় স্বামীর হাতে তুলে দিই। উনি হাসপাতাল গড়ে তোলার উদ্যোগ নেন।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
হাসপাতালটা আরও বড় করতে চাই। সরকারি অনুমোদন পেলে এটি একটি ট্রাস্টি প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে মানুষের সেবা করতে চাই।