আমেরিকার চেয়ে ৫৫০টি বেশি পারমাণবিক অস্ত্র রাশিয়ার

প্রতীকী ছবি
ছবি: রয়টার্স

আগামী কয়েক বছরে বিশ্বে পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা কয়েক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ পরিমাণে বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্নায়ুযুদ্ধের পর প্রথমবারের মতো সবচেয়ে বেশিসংখ্যক পারমাণবিক অস্ত্রের মজুত হতে পারে। এ ধরনের অস্ত্র ব্যবহারের ঝুঁকিও কয়েক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। আজ সোমবার সুইডেনভিত্তিক সংস্থা স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (সিপ্রি) নতুন এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন আভাস দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পারমাণবিক অস্ত্র রাশিয়ার হাতে বেশি আছে।

সিপ্রির প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১ সালের জানুয়ারি ও ২০২২ সালের জানুয়ারির মধ্যবর্তী সময়ে বিশ্বে পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা কিছুটা কমেছিল। কিন্তু ইউক্রেনে রুশ অভিযান আর কিয়েভের প্রতি পশ্চিমা বিশ্বের সমর্থনকে কেন্দ্র করে বিশ্বের ৯ পারমাণবিক অস্ত্রধর দেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে। অবিলম্বে পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলো ব্যবস্থা না নিলে বিশ্বে পরমাণু অস্ত্র উদ্ভাবনের সংখ্যা দ্রুত বাড়বে।

সিপ্রির ২০২২ সালের বার্ষিক পর্যালোচনা-সংক্রান্ত প্রতিবেদনে প্রতিষ্ঠানটির গণবিধ্বংসী অস্ত্র কর্মসূচি-সংক্রান্ত পরিচালক উইলফ্রেড ওয়ান বলেন, ‘পারমাণবিক অস্ত্রধর দেশের সব কটি তাদের অস্ত্রের মজুত বাড়াচ্ছে কিংবা উন্নত করছে। বেশির ভাগই পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে বাগাড়ম্বর করছে, পারমাণবিক অস্ত্র তাদের সামরিক কৌশলে কী ভূমিকা রাখছে, তা নিয়ে কথা বলছে। এটি খুব উদ্বেগজনক প্রবণতা।’

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান শুরুর তিন দিন পর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পারমাণবিক অস্ত্রের দায়িত্বে থাকা বাহিনীকে উচ্চ সতর্কতায় রেখেছিলেন। যারা রাশিয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে, সেসব দেশকে নজিরবিহীন পরিণতি ভোগ করার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

রাশিয়ার কাছে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক পারমাণবিক অস্ত্রের মজুত আছে। দেশটির পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা ৫ হাজার ৯৭৭, যা যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় ৫৫০টি বেশি। এই দুই দেশের কাছে যে পরিমাণ অস্ত্রের মজুত আছে, তা বিশ্বের মোট পারমাণবিক অস্ত্রের ৯০ শতাংশের বেশি। তবে আরেক শক্তিধর দেশ চীন অস্ত্রের সংখ্যা বাড়াচ্ছে। তিন শতাধিক নতুন ক্ষেপণাস্ত্র মজুত করেছে তারা।

সিপ্রির প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১ সালের জানুয়ারিতে বিশ্বে পারমাণবিক অস্ত্র মজুতের সংখ্যা ১৩ হাজার ৮০ ছিল। ২০২২ সালের জানুয়ারিতে সে সংখ্যা কমে ১২ হাজার ৭০৫-এ দাঁড়িয়েছে।

ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমানের সঙ্গে ৩ হাজার ৭৩২টি ওয়ারহেড মোতায়েন রাখা হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ২ হাজার অস্ত্রকে উচ্চ সতর্ক অবস্থানে রাখা হয়েছে। এগুলোর প্রায় সবই যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার।