পাথর সংগ্রহ করে মৃত্যুদণ্ডের মুখে

জিম ফিটন
ছবি: বিবিসির সৌজন্যে

অবসরপ্রাপ্ত ব্রিটিশ ভূতত্ত্ববিদ জিম ফিটনসহ (৬৬) দুজন ইরাকে মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি হয়েছেন। অপরাধ, তাঁরা ইরাকের প্রত্নতাত্ত্বিক এলাকা ইরিদু থেকে ১২টি পাথর ও মৃৎপাত্রের কিছু টুকরা তুলে সঙ্গে নিয়েছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে প্রত্নবস্তু পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।

অভিযুক্ত অপর ব্যক্তি হলেন ফিটনের ফেলো জার্মানির নাগরিক ফলকার ভালডমান। গত রোববার প্রথমবারের মতো তাঁদের আদালতে হাজির করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইনডিপেনডেন্ট। এ সময় তাঁদের গায়ে বন্দীদের জন্য বরাদ্দ হলুদ রঙের পোশাক ছিল। গত ২০ মার্চ বাগদাদ ছেড়ে যাওয়ার সময় বিমানবন্দর থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

ফিটন ও ফলকার তিন সদস্যবিশিষ্ট বিচারক বেঞ্চকে বলেছেন, তাঁরা কোনো অপরাধের মনোবৃত্তিতে এসব পাথর ও মৃৎপাত্রের টুকরা সংগ্রহ করেননি। একটি ভূতাত্ত্বিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক ভ্রমণের অংশ হিসেবে তাঁরা ইরাকের দক্ষিণাঞ্চলীয় এলাকা ইরিদুতে যান।

ফিটন আদালতকে বলেন, তিনি ধারণা করেছিলেন, তাঁর সংগ্রহ করা বস্তুগুলো প্রাচীন নিদর্শন হবে। কিন্তু এসব সংগ্রহ যে ইরাকি আইনে অপরাধ, তা তিনি জানতেন না।

ফিটন আদালতকে বলেন, তাঁরা যেখান থেকে ওই পাথরগুলো সংগ্রহ করেছেন, সেখানে শুধু বেড়া দেওয়া ছিল। কিন্তু সেখানে প্রহরী বা কোনো ধরনের ফলক ছিল না, যা দেখে বোঝা যায় যে এগুলো নেওয়া অপরাধ কিংবা সংরক্ষিত।

ফিটন বলেন, তিনি যখন ভূতত্ত্ববিদ হিসেবে কর্মরত ছিলেন, তখন থেকেই এ ধরনের টুকরা জিনিস সংগ্রহ করা তাঁর শখে পরিণত হয়। কিন্তু কখনোই এসব বিক্রি করার মতো মানসিকতা তাঁর হয়নি।

যুক্তরাজ্যের বাথ শহরে চলতি মাসের শুরুর দিকে ফিটনের পরিবার বিবিসিকে জানায়, আটক থাকার কারণে ফিটন তাঁর মেয়ের বিয়েতে উপস্থিত হতে পারেননি। এ জন্য তিনি অত্যন্ত মনঃকষ্ট পেয়েছেন।

ফিটনের জামাতা স্যাম তাসকের বিবিসিকে বলেন, ফিটনের মুক্তির দাবিতে তাঁরা অনলাইনে একটি আবেদন করেছেন, যাতে ১ লাখ ২৪ হাজার মানুষের সই রয়েছে। ফিটনের মুক্তিতে সাহায্য করতে এ আবেদনের মাধ্যমে তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রের ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

বাথ এলাকার আইনপ্রণেতা ভেরা হবহাউসের অভিযোগ, তাঁদের পররাষ্ট্র দপ্তর ফিটনের বিষয়ে খোঁজখবর রাখছেন না। তবে একজন মন্ত্রী বলেছেন, ফিটনের মৃত্যুদণ্ডের বিষয়ে ব্রিটিশ সরকার নিজেদের উদ্বেগের বিষয় ইরাক সরকারকে জানিয়েছে।