বিশ্বের বৃহত্তম উদ্ভিদের সন্ধান

অস্ট্রেলিয়া উপকূলে প্রাচীন ও বৃহত্তম উদ্ভিদ সি–গ্রাস পাওয়া গেছে।
ছবি : ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌজন্যে

একটি উদ্ভিদ কত বড় হতে পারে? গবেষকেরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানহাটন শহরের চেয়ে তিন গুণ বড় একটি উদ্ভিদের সন্ধান পেয়েছেন তাঁরা। এটি মূলত সি-গ্রাস বা সাগরের ঘাস। এটি রিবন উইড বা ফিতা ঘাস নামেও পরিচিত। অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিম উপকূলে বিশাল এই সি–গ্রাস রয়েছে।

গবেষকেরা বৃহত্তম উদ্ভিদের বিষয়টি নিশ্চিত হতে সি–গ্রাসটির জিনগত পরীক্ষা করেছেন। তাঁদের দাবি, অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিম উপকূলে পানির নিচে যে বিশাল তৃণভূমি রয়েছে, তা আদতে একটি উদ্ভিদ। একটি একক বীজ থেকে সাড়ে চার হাজার বছর ধরে এই বিশাল তৃণভূমি তৈরি হয়েছে। খবর বিবিসির

ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা বলছেন, বিশাল এই সি–গ্রাস ২০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। তাঁরা অস্ট্রেলিয়ার পার্থ শহর থেকে ৮০০ কিলোমিটার দূরের শার্ক বে এলাকায় আকস্মিকভাবে এই সি–গ্রাসের সন্ধান পান।

এরপর তাঁরা এর জিনগত বৈশিষ্ট্য জানার চেষ্টা করেন। এ জন্য উপসাগরের বিভিন্ন স্থান থেকে অঙ্কুর সংগ্রহ করেন এবং প্রতিটি নমুনা থেকে একটি করে ‘ফিঙ্গার প্রিন্ট’ তৈরি করতে ১৮ হাজার জেনেটিক মার্কার পরীক্ষা করেন। এর মাধ্যমে এই তৃণভূমিতে কতগুলো উদ্ভিদ আছে তা বের করার চেষ্টা করছিলেন তাঁরা।

গবেষণা–সংক্রান্ত নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে প্রসিডিংস অব দ্য রয়্যাল সোসাইটি বি সাময়িকীতে। গবেষণা নিবন্ধের প্রধান লেখক জেন এজলো বলেন, তৃণভূমির সি–গ্রাসের সংখ্যা জানতে গবেষণা চালাতে গিয়ে তাঁরা চমকে গেছেন। কারণ, পুরোটাই মাত্র একটি উদ্ভিদ। শার্ক বে’র ১৮০ কিলোমিটারজুড়ে বিস্তৃত একটি উদ্ভিদ! এটাই পৃথিবীর সবচেয়ে বৃহত্তম উদ্ভিদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। উদ্ভিদটি এর দৃঢ়তার জন্যও পরিচিত। উপসাগরের বিভিন্ন স্থানে পরিবর্তনশীল অবস্থার সঙ্গে এটি বেড়ে ওঠে।

গবেষক এলিজাবেথ সিনক্লেয়ার বলেন, ‘এটি সত্যিই টেকসই বলে মনে হচ্ছে। উচ্চ তাপমাত্রা এবং লবণাক্ততার পাশাপাশি তীব্র আলোর সম্মুখীন হয়েও এটি টিকে আছে। অধিকাংশ উদ্ভিদের জন্য এই পরিবেশে টিকে থাকা কঠিন।’

সি–গ্রাসের এই প্রজাতি লন ঘাসের মতো বছরে ৩৫ সেন্টিমিটার বাড়ে। এ হিসাব ধরলে বর্তমান অবস্থায় পৌঁছাতে এ ঘাসটির সাড়ে চার হাজার বছর লেগেছে।