ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবি: উদ্ধার ৩৩ জনই বাংলাদেশি বলে ধারণা
ভূমধ্যসাগরে একটি নৌকাডুবির ঘটনায় ৩৩ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তাঁরা সবাই বাংলাদেশি। মঙ্গলবার ওই নৌকাডুবিতে ৫০ জনের বেশি মানুষ এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। লিবিয়া থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপের উদ্দেশে যাত্রা করেছিল নৌযানটি। তিউনিসিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাতে এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
তিউনিসিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ জিকরি বলেন, দেশটির দক্ষিণ উপকূলে একটি তেল স্থাপনা আঁকড়ে ধরেছিলেন জীবিতরা। সেখান থেকে তাঁদের উদ্ধার করা হয়।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) মুখপাত্র ফ্লাভিও ডি জিয়াকোমো বলেন, ‘উদ্ধার হওয়া সবাই বাংলাদেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে। এখনো ৫০ জনের মতো নিখোঁজ রয়েছেন।’
গত রোববার লিবিয়ার জুয়ারা বন্দর থেকে ৯০ জনের বেশি মানুষ নিয়ে যাত্রা করে নৌযানটি। সেটি ডুবে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানা যায়নি। তবে অতিরিক্ত মানুষ নিয়ে প্রায়ই এমন নৌযান উত্তর আফ্রিকার উপকূল থেকে ইউরোপের উদ্দেশে যাত্রা করে। কোস্টগার্ডকে ফাঁকি দিতে রাতের বেলায় এমনকি খারাপ আবহাওয়ার মধ্যে সেগুলো ছাড়া হয়।
উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের জুয়ারার ১০০ কিলোমিটার উত্তর–পশ্চিমে জারজিস বন্দরে নিয়ে আসেন তিউনিসিয়ার উদ্ধারকারীরা। ফ্লাভিও ডি জিয়াকোমো বলেন, ‘নিখোঁজ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি কোন দেশের নাগরিক, সেটি এখনো জানা যায়নি।’
জাতিসংঘ সূত্রে জানা যায়, গত বছর ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে অন্তত ১ হাজার ২০০ অভিবাসনপ্রত্যাশী মারা যান। লিবিয়া থেকে সাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে গিয়ে থাকেন অভিবাসনপ্রত্যাশীরা। এটাই এখন হয়ে উঠেছে অবৈধভাবে ইউরোপে প্রবেশের প্রধান রুট। আইওএম জানায়, চলতি বছরে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে এখন পর্যন্ত পাঁচ শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। তাঁদের সবাই উত্তর আফ্রিকার উপকূল থেকে ইতালি ও মাল্টার উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন।
গত সোমবার তিউনিসিয়ার নৌবাহিনী জানায়, ডুবে যেতে থাকা একটি নৌযান থেকে শতাধিক অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করে তারা। উদ্ধার ব্যক্তিদের অধিকাংশই বাংলাদেশ ও সুদানের নাগরিক। এর আগে গত রোববার রাতে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের অনেক নৌকা থামিয়ে তীরে ফিরিয়ে আনে তিউনিসিয়ার উপকূলরক্ষা বাহিনী।
ফ্লাভিও ডি জিয়াকোমো বলেন, ‘দুই দিন আগেও সাগরে ৬৮০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে থামিয়ে দেওয়া হয়। লিবিয়ার কোস্টগার্ড তাঁদের লিবিয়ায় ফিরিয়ে নিয়ে আসে। ২০২১ সালে এখন পর্যন্ত ৯ হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশীকে সাগরে আটকে দেওয়া হয় এবং তাঁদের লিবিয়ায় ফিরিয়ে আনা হয়।’
আইওএমের আরেক মুখপাত্র সাফা মেসলি বলেন, কোনো ব্যক্তি যাতে নির্বিচারে আটক না হয় এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার না হয়, সে বিষয়ে উদ্ধারকারী দলগুলোকে সতর্ক থাকতে হবে।