শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল জাপান
শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে জাপান। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৩। জাপানের পূর্বাঞ্চলীয় উপকূলে শনিবার স্থানীয় সময় রাত ১১টা ৮ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় রাত ১০টা ৮ মিনিট) ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। এতে ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে তাৎক্ষণিকভাবে জানা গেছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানায়, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল উপকূলীয় শহর নামি থেকে ৭৩ দশমিক ৯ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৫৭ কিলোমিটার গভীরে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস)। শহরটি জাপানের ফুকুশিমা অঞ্চল থেকে প্রায় ৯৬ কিলোমিটার দূরে।
ইউএসজিএস বলেছে, রিখটার স্কেলে এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ১। তবে জাপানের আবহাওয়া সংস্থাও প্রথমে বলেছিল, ভূমিকম্পের মাত্রা ৭ দশমিক ১। তবে পরে তারা জানায়, ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৩।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, রাজধানী টোকিওতেও ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে। কিয়োডো সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, তাৎক্ষণিকভাবে কমপক্ষে ৩০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয় একটি সম্প্রচারমাধ্যম জানিয়েছে, একটি মহাসড়কে ভূমিকম্পের কারণে ভূমিধস হয়েছে।
এএফপি জানায়, ভূমিকম্পের পর বেশ কয়েক দফায় পরাঘাত অনুভূত হয়েছে। ফুকুশিমার স্থানীয় সরকারের এক কর্মকর্তা মিকিহিরো মেগুরো এএফপিকে বলেন, ‘আমরা তথ্য সংগ্রহে দ্রুত কাজ করছি। তারপরও বিস্তারিত জানানোর মতো তথ্য এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে নেই।’
ফুকুশিমার মিনামিসোমা শহরের বাসিন্দা সুপরিচিত লেখক ইউ মিরি এক টুইটে তাঁর বাড়িতে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে থাকা বইসহ অন্যান্য জিনিসপত্রের ছবি দিয়েছেন। সঙ্গে লিখেছেন, ‘আমার বাড়ি মিনামিসোমার ওদাকা এলাকায়। বাড়ির সব এলোমেলো হয়ে গেছে।’
জাপানের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম এনএইচকে জানিয়েছে, ভূমিকম্পটি শক্তিশালী হলেও এতে কোনো সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়নি। ফুকুশিমা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রেও কোনো সমস্যা দেখা যায়নি। জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
এর আগে ২০১১ সালের ১১ মার্চ জাপানে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। এই ভূমিকম্পের আঘাতে এবং এর কারণে সৃষ্টি সুনামিতে ২০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত অথবা নিখোঁজ হন। এ ছাড়া ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় লাখো মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েন। ওই ভূমিকম্পের কারণে জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় পারমাণবিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়। ফুকুশিমা দাইচি পারমাণবিক কেন্দ্রের তিনটি চুল্লি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ে। এ কারণে ওই এলাকা থেকে এক লাখের বেশি মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়।